ads

যোগাযোগে দক্ষতা অর্জন করার উপায়:




ক্যারিয়ারে সফলতা লাভের জন্য পেশাগত দক্ষতাই এখন যথেষ্ট নয়। নিয়োগদাতারা পদোন্নতির জন্য সফট স্কিলের দক্ষতাকেও বিবেচনা করছেন আগের চেয়ে বেশি। তাই ক্যারিয়ারে সফলতা অর্জনের জন্য ছাত্রজীবনেই বিভিন্ন সফট স্কিলে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে।

মনোযোগী শ্রোতা হন:
কথার মাধ্যমে একজন মানুষ অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সবচেয়ে বেশি। তাই কেউ যখন কথা বলবে তার কথাটি মনোযোগ দিয়ে শুনুন। অনেকেই প্রতিউত্তর দেওয়ার জন্য কথা শোনেন। এতে বাদানুবাদ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বক্তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন তার বক্তব্যকে বোঝার জন্য, প্রতিউত্তর দেওয়ার জন্য নয়।

চোখের দিকে তাকিয়ে বাক্যালাপ করুন:
কথা বলার সময় চোখের দিকে তাকিয়ে বলুন। তার মানে এই নয় যে, স্থির দৃষ্টিতে চোখের দিকে তাকিয়ে থাকবেন। এটা অসভ্যতা। সাধারণভাবে চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বললে একদিকে যেমন শ্রোতার প্রতি শ্রদ্ধা ও মনোযোগের প্রকাশ ঘটে, তেমনি ফুটে ওঠে বক্তার আত্মবিশ্বাস।


শরীরী ভাষার ব্যবহার:
যোগাযোগ দক্ষতা অর্জন করতে চাইলে শুধু মুখে বক্তব্যটি বলাই যথেষ্ট নয়। বরং, শরীর, মন ও স্বরযন্ত্র দিয়ে বক্তব্য প্রকাশে অভ্যস্ত হতে হবে। যথাযথ মুখভঙ্গি, চোখের অভিব্যক্তি ও হাতের অঙ্গভঙ্গি আপনার বক্তব্যকে দর্শক-শ্রোতার কাছে সহজবোধ্য করে তুলবে।

প্রশ্ন করুন, প্রশ্ন করতে উৎসাহিত করুন:
কোনো কথা বুঝতে না পারলে অনুমতি নিয়ে বক্তার কাছে না বোঝা অংশটির ব্যাপারে প্রশ্ন করুন। আর যদি নিজেই বক্তা হন তাহলে, বক্তব্যের একটি অংশ শেষ হলে দর্শক-শ্রোতা বিষয়টি বুকেছে কি না তা জানতে তাদের প্রশ্ন করতে উৎসাহিত করুন।

বক্তব্যের মাঝে বাধা দেবেন না:
কেউ যখন কথা বালে তখন তার মাঝে কথা বলা ভদ্রতা বিরুদ্ধ আচরণ। এমনটি করবেন না। তা ছাড়া কথার মাঝখানে কথা বললে বক্তা যেমন বিরক্ত হন তেমনি বক্তব্যও থেকে যায় অসম্পূর্ণ। কোনো বিষয়ে প্রশ্ন থাকলে বক্তব্য শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। হতে পারে বক্তব্যের শেষে আপনার প্রশ্নের উত্তরটি রয়েছে। যদি উত্তর না পান, তাহলে বক্তার অনুমতি নিয়ে প্রশ্ন করুন।

বক্তব্য প্রকাশ করুন সচেতন ও পরিষ্কারভাবে:
এলোমেলোভাবে কথা না বলে আপনার বক্তব্যকে উপস্থাপন করন সুস্পষ্ট ও সচেতনভাবে। এ জন্য সবচেয়ে ভালো হয় বক্তব্য উপস্থাপনের আগে কয়েকবার নিজে নিজে অনুশীলন করে নিলে। বক্তব্য উপস্থাপনের আগে একটি কাগজে লিখে ফেললে নিজের কাছেই বক্তব্যটি স্পষ্ট হয়ে যাবে। উপস্থাপন সহজ হবে।


বক্তব্যের অন্তর্নিহিত বিষয় বোঝার চেষ্টা করুন: 
অনেক সময় বক্তা নানা কারণে সুস্পষ্টভাবে তার কথা না বললেও নানা ইঙ্গিত দেন। এ জন্য বক্তব্যের অন্তর্নিহিত বিষয় বা ভাব বোঝার চেষ্ট করুন। এটা বোঝার জন্য কী বলছেন তা মনোযোগ দিয়ে বলা বা রোকার পাশাপাশি কী বলেননি তা চিহ্নিত করা ও বোঝাও জরুরি।


সহমর্মী হন:
আপনি বত্তাই হন বা শ্রোতা, অপরপক্ষের প্রতি সহমর্মী হন। তিনি কোন প্রেক্ষাপটে কথা বলছেন সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। এই সহমর্মী মনোভাব শ্রোতা হিসেবে যেমন বক্তার বক্তব্যকে বুঝতে সাহায্য করবে, তেমনি বক্তা হিসেবে শ্রোতার মনে কাছাকাছি আনবে।


ইতিবাচক শব্দ ব্যবহার করুন:
কথা বলার সময় ইতিবাচক শব্দ ব্যবহার করুন। ইতিবাচক শব্দ শ্রোতার মনে সম্ভাবনার আশা জাগায়, উদ্যম সৃষ্টি করে, বক্তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশে উৎসাহিত করে।

গঠনমূলক সমালোচনার চর্চা করুন:
বক্তার বক্তব্য শোনার পরে অহেতুক সমালোচনা না করে, যদি বক্তা তার বক্তব্যের মূল্যায়ন শুনতে চান তাহলে গঠনমূলক সমালোচনা করুন। অহেতুক সমালোচনা বক্তার মনে বিরক্তি উৎপাদন করে, বিরোধ সৃষ্টি করে। বক্তা হিসেবে শ্রোতার গঠনমূলক সমালোচনা গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি করুন।


সত্য তুলে ধরন:
যেকোনো বক্তব্য তুলে ধরার সময় সত্য তুলে ধরুন। আপনার মনোভাব স্বচ্ছভাবে তুলে ধরুন। এর ফলে আপনার বক্তব্যের পরস্পরা রক্ষা যেমন সহজ হবে তেমনি বক্তব্য প্রকাশও করতে পারবেন সহজে। সত্যের এমন একটি ক্ষমতা আছে, যা সহজেই মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করে।


ধৈর্য ধারণ শিখুন:
অনেক সময় বত্তার অগোছালো বক্তব্য শুনে শ্রোতা হিসেবে বা শ্রোতার অঙ্গভঙ্গিতে বক্তা হিসেবে আমরা ধৈর্য হারিয়ে ফেলি, যা পরিস্থিতিকে আরও শোচনীয় করে তোলে। এ সময় ধৈর্য ধারণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

কঠিন শব্দ ব্যবহারের লোভ সংবরণ করুন: 
কোনো কথা বলার সময় শ্রোতার বুঝতে সহজ হয় এবং বক্তব্যকে সঠিকভাবে প্রকাশ করে, এমন শব্দই ব্যবহার করা উচিত। পাণ্ডিত্য বা ভাষার ওপর দখল প্রদর্শনের জন্য অহেতুক কঠিন শব্দের ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।


No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.