রাতে কোনদিকে ঘুমানো নিরাপদ?
ঘুমানোর সময় রাতে অনেকে ডানদিকে মুখ করে আবার অনেকে বামদিকে মুখ করে ঘুমান। অনেকে আবার কোনোদিকে মুখ না করে সোজা চিৎ হয়ে ঘুমান। কিন্তু আপনি কি জানেন, কোনদিকে মুখে করে ঘুমাচ্ছেন তার ওপরও নির্ভর করে আপনার সুস্বাস্থ্য?
আয়ুর্বেদ অনুসারে, আপনার শরীরের বাম এবং ডান দিক আলাদা এবং আচরণও আলাদা। তবে এ আলাদা ধরনের মধ্যে বামদিকে মুখ করে ঘুমালে মিলবে দারুণ উপকার।
কারণ, আয়ুর্বেদের প্রাচীন এবং সামগ্রিক বিজ্ঞান বলছে, সুস্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই বাম দিকে মুখ করে ঘুমানো উচিত।
দারুণ কিছু সুবিধার জন্য বর্তমান স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই পরামর্শ দেন বাম দিকে মুখ করে ঘুমানোর। আসুন জেনে নেই সেই সুবিধাগুলো-
বিশেষজ্ঞরা বাম দিকে ঘুমানো সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপকারী বলে মনে করেন। কারণ এই অবস্থানে ঘুমানোর সময় শরীরের সব অঙ্গগুলো টক্সিন পরিত্রাণ পেতে মুক্ত থাকে। এই অভ্যাস আপনাকে স্লিপ অ্যাপনিয়া এবং দীর্ঘস্থায়ী পিঠের ব্যথা উপশমের ক্ষেত্রে সুবিধা দিতে পারে।
তাছাড়া আপনি জানলে অবাক হবেন, আপনি যখন আপনার পিঠের ওপর ভর করে ঘুমান তখন আপনার জিহ্বা, মুখ এবং চোয়াল সম্পূর্ণ শিথিল থাকে। এ অবস্থায় আপনি ঘুমালে আপনার নাক ডাকার বদ-অভ্যাস চালু হয়ে যাবে। তাই পিঠের ওপর ভর দিয়ে ঘুমানোর অভ্যাসটা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, বাম দিকে ঘুমানোর অভ্যাস আপনাকে মেরুদণ্ডের চাপ থেকে মুক্তি দেয়। এভাবে ঘুমালে আপনি রাতে আরাম বোধ করবেন এবং আপনার ভালো ঘুমও হবে।
তাছাড়া এটি শিশুকে সুস্থ রাখতে প্লাসেন্টায় পুষ্টির মসৃণ প্রবাহেও সাহায্য করে। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের যতটা সম্ভব বাম দিকে ঘুমানো উচিত; কারণ এটি তাদের পিঠ থেকে চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং জরায়ু ও ভ্রূণে রক্তপ্রবাহ বাড়ায়।
আপনার হৃৎপিণ্ড কিন্তু আপনার বাম দিকেই; তাই বাম দিকে ঘুমানো বিশেষ অর্থপূর্ণ। চিকিৎসকরা বলছেন, বাম দিকে মুখ করে ঘুমানোর অভ্যাস মাধ্যাকর্ষণ শক্তির মাধ্যমে হৃদয়ের দিকে রক্তের প্রবাহকে সহজতর করে। এতে শরীরের ভার কিছুটা কম মনে হয় এবং শরীরকে দ্রুত বিশ্রাম দেয়।
চিকিৎসা শাস্ত্র বলছে, আমাদের পাকস্থলী এবং অগ্ন্যাশয় বাম পাশে অবস্থিত, একই পাশে ঘুমালে তাদের স্বাভাবিকভাবে ঝুলতে এবং আরও ভালোভাবে কাজ করতে সক্ষম করে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে খাদ্য সহজেই পাকস্থলীর মধ্য দিয়ে যায় এবং অগ্ন্যাশয় এনজাইম যখন প্রয়োজন হয় তখন নির্গত হয়। তাছাড়া খাবারের বর্জ্য দূর করাও সহজ হয়ে যায়।
পরিপাকতন্ত্রের কথা বলতে গেলে বলতে হয়, আমাদের হজম না হওয়া খাবার এবং টক্সিন স্বাভাবিকভাবেই ছোট অন্ত্র থেকে বড় অন্ত্রে এবং অবশেষে কোলনে চলে যায় যেখান থেকে সকালে নির্গত হয়। এ কারণে সারারাত বাম দিকে ঘুমালে পরিপাক ক্রিয়া আরও সহজে সম্পন্ন হওয়ার সুযোগ পায়।
তাই দৈনন্দিন জীবনে ব্যস্ততার পর যখন আপনি ঘুমাবেন একটু শান্তির আশায় তখন নিজের ইচ্ছামতো নয়, সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে বামদিকে মুখ করেই ঘুমান।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
No comments
Thank you, best of luck