সংবাদ প্রতিবেদন ও সংবাদপত্রে প্রকাশিতব্য পত্রের পার্থক্য
প্রিয় শিক্ষার্থী,
একটি সংবাদ প্রতিবেদন ও একটি সংবাদ পত্রে প্রকাশিতব্য পত্রের সঠিক উত্তর দেখে নিজেই বুঝে নাও এদের পার্থক্য। সেজন্য কোনো তাত্ত্বিক আলোচনা না করে তোমাদের সহজে বোঝাার সুবিধার্থে এখানে একটি সংবাদ প্রতিদন যা একজন গণমাধ্যমকর্মী লিখে থাকেন তার নির্ধারিত কাজ হিসাবে। তাই এ ধরনের একটি সংবাদ প্রতিবেদন ছাপানোর জন্য কোনো আবেদন পত্র লিখতে হয় না। নিচের উদাহরণ দ্রষ্টব্য। অন্যদিকে সংবাদপত্রে প্রকাশিতব্য পত্র যে-কোনো মানুষ যে-কোনো বিষয়ে তার ব্যক্তিগত অভিমত জানিয়ে পত্রিকায় লিখতে পারেন। এ ক্ষেত্রে লেখককে পত্রিকায় প্রকাশের জন্য একটি আবেদন পত্র লিখতে হয়।
আরো পড়তে ক্লিক করো: এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের বর্ণনা দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করো।
১. মনে করো তোমার নাম হাসান মাহমুদ শান্ত। তুমি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার একজন প্রতিনিধি। তোমার এলাকার সড়কের দুরবস্থা বিষয়ে একটি সংবাদ প্রতিবেদন প্রস্তুত করো। (সংবাদ প্রতিবেদ)
হাসান মাহমুদ শান্ত, চাটখিল (নোয়াখালী), ২৪ জুলাই ২০২৪ ॥
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার জয়াগ বাজার থেকে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ পর্যন্ত শহিদ মুক্তিযোদ্ধা একরামুল হক সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রায় এক যুগ ধরে সড়কটির কোনো সংস্কার কাজ হয়নি। সড়কের এ বেহাল দশায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝরো কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির পুরোটাই বড়ো বড়ো গর্ত ও খানাখন্দে ভরা। জয়াগ বাজার থেকে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের নগরপাড়া সেতু পর্যন্ত দুই কিলোমিটার অংশে দুই পাশের মাটি সরে গেছে। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে নোয়াখালীর চাটখিল ও সোনাইমুড়ি, কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ ও লাকসাম এবং চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার হাজার হাজার বাসিন্দা চলাচল করে। এছাড়া কমপক্ষে ত্রিশটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ পথে যাতায়াত করে থাকে।
এলাকাবাসী জানান, সড়কটির তিন কিলোমিটার সোনাইমুড়ি এবং বাকি নয় কিলোমিটার চাটখিল উপজেলায় পড়েছে। বিগত ২০১৯ সালের বন্যায় সড়কটির সুরকির স্তর দেবে গিয়ে বালু বের হয়ে আসে এবং সৃষ্টি হয় খানাখন্দের। এরপর প্রতি বর্ষায় বৃষ্টিপাতে পানি ও কাদায় সড়কটি একাকার হয়ে যায়, যা এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গত বুধবার একটি পিকআপ ভ্যান ভাওরকোট গ্রামের কাছে রাস্তার গর্তে পড়ে যায়, এতে চালকসহ তিন জন যাত্রী আহত হন।
চাটখিল ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ মানুষ মনে করে, সড়কটি নিয়ে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দীর্ঘদিনের। অথচ এর সমাধানে কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই। এটি মেরামতের জন্য স্থানীয় লোকজন সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে একাধিকবার আবেদন করলেও কোঝে প্রতিকার পায়নি। এলাকাবাসীর দাবি, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে জনদুর্ভোগ কমাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
২, মশার উপদ্রব নিবারনের জন্য কর্তৃপক্ষের সহায়তা কামনা করে সংবাদপত্রে প্রকাশযোগ্য একটি পত্র রচনা করো।
তারিখ: ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ।
সম্পাদক
দৈনিক প্রথম আলো
সিএ ভবন
১০০ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ
কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
বিষয়: সংযুক্ত পত্রটি প্রকাশের জন্য আবেদন।
মহোদয়,
বিনীত নিবেদন এই যে, আমাদের এলাকায় মশার উপদ্রবের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত। অনেকেই মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। এর থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে মশার উপদ্রব নিবারনের জন্য কর্তৃপক্ষের সহায়তা কামনা করে একটি পত্র আপনার পত্রিকায় প্রকাশের জন্য প্রেরণ করলাম।
অতএব, মহোদয়ের নিকট আমার আকুল আবেদন, আমার এ জনকল্যাণমূলক পত্রটি আপনার জননন্দিত পত্রিকার নিয়মানুযায়ী যথাযথ পরিমার্জন সাপেক্ষে প্রকাশ করে বাধিত করবেন।
বিনীত নিবেদক
আজিমপুর এলাকাবাসীর পক্ষে
প্রদীপ্ত রায় চৌধুরী
রায় চৌধুরী ভিলা
১৩৪ আজিমপুর, ঢাকা-১২০৫
মশার উপদ্রব থেকে বাঁচানোর আবেদন।
আজিমপুর ঢাকা শহরের একটি জনবহুল এলাকা। অথচ এখানকার রাস্তাঘাট, নালা-নর্দমা, বাড়িঘরের আশপাশ সর্বদা অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন থাকায় এখান থেকে প্রতিনিয়ত অসংখ্য মশা জন্ম নিচ্ছে। ফলে এ এলাকায় মশার উপদ্রব দিন দিন বেড়েই চলছে। মশার উপদ্রব মানবজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। দিন-রাত সবসময় মশার উপদ্রব লেগেই রয়েছে, একটু শান্তিতে কাজ করা যায় না। মশার উপদ্রবের ফলে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মশার কামড়ের ফলে ম্যালেরিয়া ও ভয়াবহ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে শত শত লোক। অনেক লোক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
এখন দেখা যাচ্ছে যে, আশপাশের বহু পরিবারের কেউ না কেউ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত। এতে এলাকায় বসবাস করা অসহনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে এলাকাকে রক্ষা করার জন্যে দ্রুতই মশক নিধন অভিযান শুরু করা প্রয়োজন। যদিও রাজধানীর অনেক জায়গায় এ অভিযান চলছে, কিন্তু এ এলাকায় এখনও পর্যন্ত শুরু হয়নি। মশার বংশ যতক্ষণ পর্যন্ত না ধ্বংস হচ্ছে ততক্ষণ এলাকার মানুষ ডেঙ্গুজ্বরের হাত থেকে রক্ষা পাবে না। তাই শীঘ্রই ডেঙ্গু প্রতিকারের লক্ষ্যে কার্যকরী অভিযান চালাতে হবে, না হলে গোটা এলাকার মানুষ ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হবে। যদিও রাজধানী ঢাকার অনেক জায়গায় এ অভিযান চলছে, কিন্তু এ এলাকায় এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে নগর প্রধানের কাছে আবেদন করা হলেও তারা এ ব্যাপারে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেননি।
তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মশার উপদ্রব থেকে আমাদের বাঁচানোর জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
আজিমপুর এলাকাবাসীর পক্ষে
প্রদীপ্ত রায় চৌধুরী
রায় চৌধুরী ভিলা
১৩৪ আজিমপুর, ঢাকা-১২০৫
No comments
Thank you, best of luck