ads

নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন পদ্ধতি, দেশের বাস্তবতা বিবেচনায় নিতে হবে

বিদ্যালয় ও শিক্ষকদের সক্ষমতা যাচাই করা প্রয়োজন 



শিক্ষাবর্ষের ছয় মাস পূর্ণ হলেও এখনো নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত না হওয়ায় শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

নতুন শিক্ষাক্রমে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির অর্ধবার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ৩ জুলাই। এ বিষয়ে গত দুবছর ধরে চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। নম্বর ও গ্রেডিং পদ্ধতি বাতিল করে ‘ত্রিভুজ’, ‘বৃত্ত’ ও ‘চতুর্ভুজ’ ইনডিকেটর ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা মূল্যায়ন শুরু হলে এ নিয়ে অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টরা প্রতিক্রিয়া জানান। সমালোচনার প্রেক্ষাপটে কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে পিছু হটে। এরপর মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে গঠন করা হয় উচ্চপর্যায়ের কমিটি। সে কমিটির মতামতের ভিত্তিতে বিভিন্ন পর্যায়ে মূল্যায়নের খসড়া তৈরি করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। এরপর তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু সেটি এখনো চূড়ান্ত না হওয়ায় অর্ধবার্ষিক মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, চলতি শিক্ষাবর্ষে মূল্যায়ন কাঠামো বাস্তবায়নে কয়েকটি ধাপ ঠিক করা হয়েছে। প্রথম ধাপে রয়েছে পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়নের আদলে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত অর্ধবার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন পরিচালনা করার পরিকল্পনা। অর্ধবার্ষিক মূল্যায়নে যুক্ত হবে শিক্ষার্থীর শিখনকালীন পারদর্শিতা। বছর শেষে অনুষ্ঠিত হবে বার্ষিক মূল্যায়ন। নতুন মূল্যায়নের খসড়ায় বলা হয়েছে, এসএসসিতে কোনো শিক্ষার্থী দুই বিষয়ে ফেল করলেও এইচএসসিতে ভর্তি হতে পারবে; কিন্তু তারা পূর্ণ সনদ পাবে না। পূর্ণ সনদ পেতে হলে শিক্ষার্থীকে ফেল করা বিষয়গুলোতে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করতে হবে। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিভাবকরা। কোনো শিক্ষার্থী যদি ফেল করে উপরের শ্রেণিতে ওঠার সুযোগ পায়, সে পড়াশোনায় কতটা মনোযোগী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

নানা পদক্ষেপ নেওয়ার পরও শ্রেণিকক্ষের বাইরে শিক্ষকের ওপর শিক্ষার্থীদের নির্ভরতা কেন কমছে না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। পাবলিক পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণে হাজারো শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়। দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বিদ্যমান এমন আরও নানা সমস্যা বহুল আলোচিত। শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে করণীয় নিয়ে নানা মত রয়েছে। অনেক অভিভাবক মনে করেন, মুখস্থ করার প্রবণতা কমাতে প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন আনা হলে উচ্চতর শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরীক্ষাভীতি তৈরি হবে। শিক্ষা নিয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের দেশের বাস্তবতা বিবেচনায় নিতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে প্রকৃত অর্থেই আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সক্ষমতা অর্জন করতে পারে, তাও বিবেচনায় নিতে হবে।


No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.