ads

নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই: শিক্ষামন্ত্রী


শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে বলছেন শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, নতুন শিক্ষা কারিকুলামের সমালোচনা হলেও এর বাস্তবায়ন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কিছু সমালোচনা হবে। সমালোচনার পরও আমাদেরকে যে সিদ্ধান্তগুলো শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসে নেওয়া হয়েছে সেসব সমালোচনা নেওয়ার সক্ষমতা রাজনীতিবিদদের থাকতে হবে।’

‘সক্ষমতা আশা করি আমাদের আছে। সমালোচিত হব এই ভয়ে যে সিদ্ধান্ত যথার্থ এবং সঠিক সেটা নেব না; তা হতে দেওয়া যায় না। দৃঢ়ভাবে কিছু সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন আমাদের অবশ্যই করতে হবে। এটার কোনো বিকল্প নেই।’

তিনি বলেন, ‘এখানে আমি রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আছি। আমাদের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা তারা তাদের জায়গা থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষা পরিবারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

নতুন কারিকুলাম নিয়ে সমালোচনা ও গুজব সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হলেও পজিটিভ কিছু প্রচার হচ্ছে না সাংবাদিকের এমন কথার জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘নেগেটিভ জিনিস ভাইরাল হয় বেশি। নিবন্ধিত, আইনত ও স্বীকৃত গণমাধ্যম সেটা আপনারা যেভাবে অনুসন্ধান করে একটি তথ্য দেন সেভাবে কিন্তু সাধারণ মানুষ বা যারা অপপ্রচার করে বা আমরা যারা ব্যবহার করি তারা দেই না। নেগেটিভ প্রচারনার প্রতি আমাদের দৃষ্টি বেশি থাকে। অজান্তে আমরা এসব প্রচারণায় জড়িয়ে পড়ি। সেটা মোকাবিলা করা সারা বিশ্বব্যাপী একটি চ্যালেঞ্জ।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে এটা যখন মোকাবিলা করতে যাওয়া হয় তখন অন্যন্য দেশের ষড়যন্ত্র ও কুচক্রীকারীরা আছে তারা সেখানে বাকস্বাধীনতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বলে। প্রতিক্রিয়াশীল এবং সাম্প্রদায়িক, নারীবিদ্বেষী গোষ্ঠীকে শিক্ষার কারিকুলাম নিয়ে কথা বললেই বা কোনো বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ নিতে গেলেই আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে তারা অপপ্রচার করে। বাকস্বাধীনতা রোধ করা হচ্ছে বলে সেটা নিয়ে অপপ্রচার করে।’
‘ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে কীভাবে অপপ্রচার হয়েছে সেটা আপনারা দেখেছেন। সেখানে প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা ছিল। সমস্যা ছিল না তা কিন্তু নয়। সমস্যাগুলো নিরসন করার চেষ্টা করছি। আমাদের চ্যালেঞ্জটা একটু কমপ্লেক্স।’

চট্টগ্রামে নানা ধরণের অবকাঠামো হয়েছে উল্লেখ করে নওফেল বলেন, ‘বৃহত্তর চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষের প্রতি কমিন্টমেন্ট আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের বলেছেন অনেক অবকাঠামো চট্টগ্রামকে ঘিরে তিনি করে দিয়েছেন। অনেক উন্নত ও আন্তর্জাতিক মানের অবকাঠামো তিনি করে দিয়েছেন। সূদুর টেকনাফ থেকে ফেনী পর্যন্ত।’

তিনি বলেন, ‘নানা ধরণের অবকাঠামো চট্টগ্রামে হয়েছে। কীভাবে আমাদের তরুণ প্রজম্মের কর্মসংস্থান হবে সেটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আমাদের ভাবতে বলেছেন। নারী-পুরুষ, শ্রেণি-পেশা ও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কীভাবে এ অঞ্চলকে ঘিরে তরুণরা অবদান রাখতে পারে, তাদের কীভাবে কর্মসংস্থান হতে পারে এ বিষয়ে তিনি আমাদের বিশেষভাবে কাজ করতে বলেছেন।’

ভবিষ্যৎ প্রজম্মের জীবন নিশ্চিত করতে চট্টগ্রামে ইকোনোমিক ইকো সিস্টেম গড়ে তোলা হবে জানিয়ে নওফেল বলেন, ‘আমাদের যারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি আছেন ও আওয়ামী লীগ এবং অন্যন্য প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল আছে তাদের সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটি ইকোনোমিক ইকো সিস্টেম আমরা তৈরি করতে পারি। ইকোনোমিকের সঙ্গে এডুকেশনের একটি সম্পর্ক যাতে আমরা সৃষ্টি করতে পারি।’

‘এর মাধ্যমে আমরা সন্তানদের ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে চাই। আমাদের সন্তানেরা শুধু ভবিষ্যত নিশ্চিত করার আশায় বিদেশে পাড়ি দেবেন এবং বিদেশে যাওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো গতি না থাকে তাহলে এটা বুঝে নিতে হবে আমরা যারা চট্টগ্রামে আছি এটা আমাদের ব্যর্থতা।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের যে সমস্ত কাজ এখানে চলমান আছে সেগুলো যথাসময়ে শেষ করা আমাদের লক্ষ্য। জলাবদ্ধতার প্রকল্প নিয়ে বার বার আলোচনা আসে। চট্টগ্রামের মেয়রসহ উন্নয়ন কতৃপক্ষের যারা আছে তাদের সঙ্গে আমরা সবাই সমন্বয় করে করলে দ্রুত কাজগুলো করে নিয়ে যেতে পারব।’

‘সে বিষয়টি আমি আমার পক্ষ থেকে দেখব। আমি এখানে কোনো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দিতা, ক্ষমতার দম্ভ, অহংকার এ ধরণের কাজে বিশ্বাস করি না। রাজনৈতিক ক্ষমতা যেহেতু আমি শৈশব থেকে দেখে এসেছি আমার এগুলোর প্রতি কোনো লোভ লালসা নেই।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘জনসেবার মাধ্যমে কীভাবে আমরা এ সরকারকে কাজে লাগাতে পারি আরও বেশি করে, বিশেষ করে তরুণ সমাজকে কীভাবে কর্মমূখী করতে পারি এবং শিক্ষা পদ্ধতিকে শিল্প, অর্থনীতির সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারি সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাব।’

‘গণমাধ্যমকে সঙ্গে নিয়ে আমরা যে সমস্ত কনভেনশাল চিন্তার জায়গা আছে, যে সমস্ত জায়গা থেকে আমাদের আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হচ্ছে, সেটা হতে পারে কারিকুলাম ও শিক্ষা পরিবারের নানা রকম কাজ নিয়ে। হতে পারে আমাদের সংগঠনের নানা চ্যালেঞ্জ আছে সেগুলো নিয়ে। এসব নিয়ে আপনাদের যে অভিমত সেগুলো আমরা জানতে চাই।’


No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.