ads

শ্রেণিকাজে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন বাস্তবায়নে শিক্ষকের ভূমিকা:



• অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনের মূল বৈশিষ্ট্য হলো শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতার সাথে শিখনকে সম্পর্কিত করে তাদের ক্ষমতায়ন করা।
• শিখন কার্যক্রম এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা উপকরণগুলো ব্যবহারের পরিকল্পনা এমনভাবে করতে হবে যেন বাস্তব অভিজ্ঞতা, প্রতিফলনমূলক পর্যবেক্ষণ, বিমূর্ত ধারণায়ন, সক্রিয় পরীক্ষণ এ ৪টি ধাপ সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
• শিখন-অভিজ্ঞতা অনুযায়ী এমনভাবে পাঠ পরিকল্পনা করতে হবে যেন শিক্ষার্থীরা দেখে, শুনে, পড়ে, লিখে এবং স্পর্শ করার মাধ্যমে শ্রেণিকাজে অংশগ্রহণ করতে পারে।
• একক, জোড়ায় বা দলীয় যেকোনো কাজে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে এমন নির্দেশনা দেওয়া।
• শিখন-অভিজ্ঞতা অনুযায়ী এমনভাবে পাঠ পরিকল্পনা করতে হবে যেন নির্ধারিত শিখন যোগ্যতা অর্জন নিশ্চিত হয়।
• শ্রেণিকাজ পরিচালনার সময় শিক্ষার্থীদের রিসোর্স হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ, তাদের ধারণা ও অভিজ্ঞতাকে শ্রেণিকাজ পরিচালনার সময় অধিক পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে।
• একে অপরের সাথে নিজেদের বৈচিত্র্যময় জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মতামত বিনিময়ের মাধ্যমে সবার শিখন উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করতে হবে।
• শিখন-শেখানো কার্যক্রম শুধুমাত্র শ্রেণিকাজ বা পাঠ্যবই নির্ভর নয়, শ্রেণিকক্ষের বাইরেও কাজ করার সুযোগ রাখতে হবে। পাঠের ধরন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট অংশীজন, পরিবেশ ও পরিস্থিতির সাথে শিক্ষার্থীদের সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করতে হবে।
• যে কোনো শিখন-অভিজ্ঞতা বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ভিন্ন ধরনের নির্দেশনা প্রদানের চেষ্টা করতে হবে। অর্থাৎ, শুধুমাত্র লিখতে, পড়তে, বলতে বলা নয় বরং ভূমিকাভিনয়, উপস্থাপনা, প্রদর্শন, তথ্য সংগ্রহ, আলোচনা, বিতর্ক, প্রশ্নোত্তর ইত্যাদি কৌশল ব্যবহার করতে হবে।
অর্জন উপযোগী যোগ্যতার সাথে সমন্বয় রেখে ভিন্ন ভিন্ন শিখন পদ্ধতি ব্যবহার করে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে। কয়েকটি পদ্ধতি নিচে উল্লেখ করা হলো:
প্রকল্পভিত্তিক শিখন; বিশ্লেষণমূলক শিখন; কেইস-স্টাডি; জরিপ; বিতর্ক; সমস্যাভিত্তিক শিখন; তথ্য-প্রমাণভিত্তিক শিখন; ভূমিকাভিনয়; সৃজনশীল লিখন; দলগত আলোচনা; সহযোগিতামূলক শিখন; খেলাভিত্তিক শিখন; কুইজ; প্রদর্শন; দেওয়াল পত্রিকা; তথ্য যাচাই; অভিজ্ঞতা বিনিময়; প্রশ্ন-উত্তর; অনুসন্ধানমূলক শিখন; অভিনয়/নাটক
এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে প্রতিটি শিখন-অভিজ্ঞতার জন্য বাস্তব অভিজ্ঞতা, প্রতিফলনমূলক পর্যবেক্ষণ, বিমূর্ত ধারণায়ন, সক্রিয় পরীক্ষণ এ ৪টি ধাপের একাধিক পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। অর্থাৎ একটি শিখন-অভিজ্ঞতার নির্ধারিত কার্যক্রমে দলগত আলোচনা, প্রকল্পভিত্তিক কাজ, ভূমিকাভিনয় এই ৩টি কৌশল একইসাথে কাজে লাগানো যেতে পারে। এভাবে পাঠ সপাপ্ত করতে পরিকল্পনা করতে হবে। পরিশ্রম করতে হবে। কষ্ট হলেও অসম্ভব নয়। তবেই আমাদের সন্তানেরা জ্ঞান-দক্ষতার সম্বয় ঘটিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের মাধ্যমে মানবিক যোগ্য মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে।

No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.