শব্দ গঠন বলতে কী বোঝায় ? বাংলা ভাষায় নতুন শব্দ গঠনের উপায় বর্ণনা করো।
শব্দ গঠন বলতে কী বোঝায় ? বাংলা ভাষায় নতুন শব্দ গঠনের উপায় বর্ণনা করো।
যেকোনো ভাষার মূল উপাদান হল শব্দ । তাই ভাষাকে সমৃদ্ধ করতে হলে তার শব্দসম্পদও বাড়াতে হবে । নতুন নতুন শব্দ গঠন করে ভাষাতে যোগান দিতে হবে । শব্দভাণ্ডার যত সমৃদ্ধ হয় ভাষাও তত সমৃদ্ধ হয় । সেইজন্য নিত্য নতুন শব্দ গঠন করা প্রয়োজন । আমাদের বাংলা ভাষাতেও নতুন শব্দ গঠনের বিভিন্ন পদ্ধতি আছে । বিভিন্ন বিদেশি ভাষা থেকে শব্দ গ্রহণ করে তাকে বাংলা ভাষায় আপন করে নেওয়া হয়েছে । এছাড়া দেশি ও বিদেশি ভাষার সংমিশ্রণে নতুন নতুন শব্দ গঠন করে বাংলা ভাষাকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করা হয়েছে । সন্ধি, সমাস নতুন শব্দ গঠনে যেমন সাহায্য করে তেমনই উপসর্গ ও প্রত্যয় নতুন শব্দ গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাংলা শব্দগঠনের উপায় বর্ণনা:
শব্দ গঠন : পৃথিবীর অন্যান্য ভাষার মতো বাংলা ভাষায়ও কতকগুলো সুনির্দিষ্ট নিয়মের মাধ্যমে নতুন নতুন শব্দ তৈরি হয়। এই শব্দ তৈরির প্রক্রিয়াও যথেষ্ট বৈচিত্র্যময়। বৈচিত্র্যময় শব্দ তৈরির এই প্রক্রিয়াসমূকেই সাধারণভাবে শব্দ গঠন বলা যেতে পারে। নিচে শব্দ গঠনের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উপায় আলোচনা করা হলো_
১. সমাসের সাহায্যে শব্দ গঠন :
এই প্রক্রিয়ায় দুই বা ততোধিক পদ একপদে পরিণত হয়ে নতুন নতুন শব্দ তৈরি করে। যেমন : মহৎ যে জন = মহাজন, জায়া ও পতি = দম্পতি ইত্যাদি।
২. উপসর্গযোগে শব্দ গঠন :
এ ক্ষেত্রে ধাতু বা শব্দের পূর্বে উপসর্গ যুক্ত হয়ে নতুন নতুন শব্দ তৈরি করে। যেমন : প্র+হার=প্রহার, পরা+জয়=পরাজয় ইত্যাদি।
৩. সন্ধির সাহায্যে শব্দ গঠন :
পাশাপাশি দুটি বর্ণের একত্রীকরণের ফলে এই প্রক্রিয়ায় নতুন নতুন শব্দ তৈরি হয়। যেমন :বিদ্যা+আলয়= বিদ্যালয়, পর+উপকার= পরোপকার ইত্যাদি।
৪. প্রত্যয় যোগে শব্দ গঠন :
ধাতু বা শব্দের শেষে প্রত্যয় যুক্ত করেও নতুন নতুন শব্দ গঠন করা যায়। যেমন :
ক. কৃৎ প্রত্যয় যোগে : পড়+আ=পড়া, পিঠ+অক=পাঠক ইত্যাদি।
খ. তদ্ধিত প্রত্যয়যোগে :কলম+দানি=কলমদানি, নাম+তা=নামতা ইত্যাদি।
৫. বিভক্তির সাহায্যে শব্দ গঠন :
শব্দের শেষে বিভক্তি যোগ করেও নতুন শব্দ গঠন করা যায়।
যেমন:কর+এ=করে, রহিম+ এর= রহিমের ইত্যাদি।
৬. দ্বিরুক্ত শব্দের সাহায্যে শব্দ গঠন :
দ্বিরুক্ত শব্দের মাধ্যমে বাংলা ভাষায় প্রচুর শব্দ তৈরি হয়। যেমন :শনশন, মোটামুটি, রাজায় রাজায় ইত্যাদি।
৭. পদ পরিবর্তনের সাহায্যে শব্দ গঠন :
পদ পরিবর্তনের মাধ্যমেও নতুন শব্দ গঠিত হতে পারে। যেমন :মানব (বিশেষ্য) > মানবিক (বিশেষণ), পৃথিবী (বিশেষ্য) > পার্থিব (বিশেষণ) ইত্যাদি।
উপর্যুক্ত প্রক্রিয়াগুলোর মাধ্যমে শব্দ গঠিত হলেও মূলত সমাস, প্রত্যয় এবং উপসর্গের মাধ্যমে প্রধানরূপে শব্দ গঠিত হয়ে থাকে।
you tf hepled meee...f u
ReplyDelete