ads

বাংলাদেশের ভূমিরূপ - ৭ম শ্রেণি ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুসন্ধানী কাজ ৭ সমাধান

বাংলাদেশের ভূমিরূপ - ৭ম শ্রেণি ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুসন্ধানী কাজ ৭ সমাধান


বিষয়বস্তু: বাংলাদেশের ভূমিরূপ

অনুসন্ধানের প্রশ্ন: বাংলাদেশের মানচিত্র অঙ্কন এবং বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত করে ভূমিরূপের বর্ণনা দাও।

প্রশ্নে যে মূল বিষয়বস্তুগুলো রয়েছে:-

তথ্য উৎস:
ইন্টারনেট, ভূগোল বিষয়ক বই এবং শ্রেণিশিক্ষক।

তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি:
ইন্টারনেটে www.eedubd.com ওয়েবসাইট ও ভূগোল বিষয়ক বই থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছি এবং শ্রেণিশিক্ষকের সহয়তা নিয়েছি। 

তথ্য সংগ্রহ:

ভূমিকা: বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ ব-দ্বীপগুলোর একটি। এটি পলি মাটি গঠিত পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ ব-দ্বীপ। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বেও সামান্য পাহাড়ি অঞ্চল এবং উত্তর-পশ্চিমাংশের সীমিত উঁচুভূমি ব্যতীত সমগ্র বাংলাদেশ নদী বিধৌত এক বিস্তীর্ণ সমভূমি। এদেশের ভূ-প্রকৃতি মূলত নিচু ও সমতল বিশিষ্ট। বাংলাদেশের ভূখণ্ড উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে ক্রমশ ঢালু। ফলে নদ-নদী, উপনদী এবং বিভিন্ন শাখা নদীগুলো উত্তর দিক হতে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর অভিমুখে প্রবাহিত হয়।
চিত্র: বাংলাদেশের ভুমিরূপ


বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকার ভূমিরূপ:

ভূপ্রকৃতির ভিত্তিতে বাংলাদেশের ভূমিকে প্রধানত ৩টি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা-
১. টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ (মোট ভূমির প্রায় ১২%)
২. প্লাইস্টোসিন কালের সোপানসমূহ (মোট ভূমির ৮%)
৩. সাম্প্রতিক কালের প্লাবন সমভূমি (মোট ভূমির প্রায় ৮০%)

নিচে বাংলাদেশের এই প্রধান ৩ ধরনের ভূমিরূপ উপস্থাপন করা হলো।

১. টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ:
ভূতাত্ত্বিকভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন ভূমিরূপ টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ। আজ থেকে প্রায় ২ মিলিয়ন বছরেরও পূর্বে টারশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত উত্থিত হওয়ার সময় এ সকল পাহাড় সৃষ্টি হয়েছে। টারশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত উত্থিত হওয়ার সময় এ সকল পাহাড় সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়গুলো আসামের লুসাই এবং মিয়ানমারের আরাকান পাহাড়ের সমগাত্রেীয়। বাংলাদেশের মোট ভূমির প্রায় ১২% এলাকা জুড়ে রয়েছে এই টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ ।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব, উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ এ অঞ্চলের আওতাভুক্ত। এ-অঞ্চলের পাহাড়গুলোকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-
ক. দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ: রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলার পূর্বাংশ এ-অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। দক্ষিণ- পূর্বাঞ্চলের এ পাহাড়গুলোর গড় উচ্চতা ৬১০ মিটার । বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গের নাম তাজিংডং (বিজয়) যার উচ্চতা ১,২৩১ মিটার বা ৪,০৩৯ ফুট। এটি বান্দরবান জেলায় অবস্থিত।
খ. উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ: ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার উত্তরাংশ, সিলেট জেলার উত্তর ও উত্তর- পূর্বাংশে এবং মৌলভীবাজারের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাংশ, হবিগঞ্জ জেলার দক্ষিণের পাহাড়গুলো এ-অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। এ পাহাড়গুলোর গড় উচ্চতা ২৪৪ মিটারের বেশি নয়।

২. প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ:
উত্তর-পশ্চিমাংশের বরেন্দ্রভূমি, মধ্যভাগের মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় এবং কুমিল্লা জেলার লালমাই পাহাড় এ অঞ্চলের আওতাভুক্ত। বাংলাদেশের মাটে ভূমির প্রায় ৮% এলাকা নিয়ে এ অঞ্চল গঠিত। আনুমানিক ২৫,০০০ বছর পূর্বের সময়কে প্লাইস্টোসিন কাল বলা হয়। এ অঞ্চলের উচ্চভূমিকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-

বরেন্দ্রভূমি: নওগাঁ, রাজশাহী, বগুড়া, জয়পুরহাট, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার অংশবিশেষ নিয়ে বরেন্দ্রভূমি গঠিত । বরেন্দ্রভূমির আয়তন ৯,৩২০ বর্গকিলোমিটার। প্লাবন সমভূমি থেকে এর উচ্চতা ৬ থেকে ১২ মিটার। এ স্থানের মাটি ধূসর ও লাল বর্ণের হয়ে থাকে ।

মধুপুর ও ভাওয়ালের গড়: টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলায় মধুপুর এবং গাজীপুর জেলায় ভাওয়ালের গড় অবস্থিত। এর আয়তন প্রায় ভাওয়ালের গড় ৪,১০৩ বর্গ কিলোমিটার। সমভূমি থেকে এর উচ্চতা প্রায় ৩০ মিটার। এ অঞ্চলের মাটি ধূসর ও লাল বর্ণের।

লালমাই পাহাড়: কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে লালমাই থেকে ময়নামতি পর্যন্ত এ পাহাড়টি বিস্তৃত । পাহাড়টির আয়তন প্রায় ৩৪ বর্গ কিলোমিটার। এই পাহাড়ের গড় উচ্চতা ২১ মিটার। এ অঞ্চলের মাটির রং লালচে এবং মাটি নুড়ি, বালি ও কংকর মিশ্রিত।

৩. সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি:
টারশিয়ারি এবং প্লাইস্টোসিনকালের ভূপ্রকৃতি ছাড়াও সমগ্র বাংলাদেশের প্রায় ৮০% ভূমি নদীবিধৌত এবং বিস্তীর্ণ সমভূমি নিয়ে গঠিত। বছরের পর বছর বন্যার সঙ্গে পরিবাহিত মাটি সঞ্চিত হয়ে এ প্লাবন সমভূমি গঠিত হয়েছে। এর আয়তন প্রায় ১,২৪,২৬৬ বর্গকিলোমিটার। সমগ্র সমভূমির মাটির স্তর খুবই গভীর এবং খুবই উর্বর। সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-

পাদদেশীয় অঞ্চল: রংপুর ও দিনাজপুর পাদদেশীয় সমভূমি এলাকার অন্তর্ভুক্ত।
বন্যা প্লাবন সমভূমি: ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, পাবনা, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও সিলেটের অন্তর্গত বন্যা প্লাবন সমভূমি।
ব-দ্বীপ সমভূমি: ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা ও ঢাকা অঞ্চলের অংশবিশেষ নিয়ে ব-দ্বীপ সমভূমি গঠিত।

উপকূলীয় সমভূমি: নোয়াখালী ও ফেনী নদীর নিম্নভাগ থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল হলো উপকূলীয় সমভূমি।

শ্রোতজ সমভূমি: খুলনা ও পটুয়াখালী অঞ্চল এবং বরগুনা জেলার কিয়দাংশ নিয়ে শ্রোতজ সমভূমি গঠিত।

তথ্য বিশ্লেষণ: 
বাংলাদেশের ভূমিরূপ সংক্রান্ত তথ্যগুলো আমি ইন্টারনেটে বিভিন্ন আর্টিকেল থেকে জেনেছি। পাশাপাশি ভূগোল বিষয়ক বই এবং শ্রেণিশিক্ষকের সহায়তায় আমি এ তথ্যগুলোকে সন্নিবেশিত করেছি। সকল তথ্যগুলো একত্রিত করে আমি বিভিন্ন প্রকার ভূমিরূপে একটি মানচিত্র এঁকে প্রদর্শন করেছি। আলোচ্য তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে জানতে পেরেছি যে, বাংলাদেশের সব অঞ্চলের ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য একরকম নয়। বিভিন্ন অঞ্চলের পৃথক ভূমিরূপের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সামগ্রিক ভূপ্রকৃতি গড়ে উঠেছে।



ফলাফল বা সিদ্ধান্ত: 
উক্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে আমি বেশ কিছু সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। তা হলো—
১. বাংলাদেশ পলি মাটি গঠিত বৃহৎ একটি ব-দ্বীপ।
২. সীমিত কিছু অঞ্চল উঁচুভূমি ব্যতীত সমগ্র বাংলাদেশ নদী বিধৌত এক বিস্তীর্ণ সমভূমি।
৩. এদেশের ভূ-প্রকৃতি মূলত নিচু ও সমতল বিশিষ্ট।
৪. বাংলাদেশের ভূখণ্ড উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে ক্রমশ ঢালু।


উপস্থাপন: সম্পূর্ণ অনুসন্ধানী কাজটি বাংলাদেশের মানচিত্র চিহ্নিত করে উপস্থাপন করা হয়েছে।



No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.