ads

জমির খতিয়ান কী? জরিপ খতিয়ান কত প্রকার ও কী কী?


খতিয়ান কী?
ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে খতিয়ান মানে জাবেদা থেকে হিসাব সমূহকে শ্রেণিবিন্যাসকরণ। তবে জায়গা জমির ক্ষেত্রে খতিয়ান অর্থ হলো ‘হিসাব। মূলত জমির মালিকানা স্বত্ব রক্ষা ও রাজস্ব আদায়ের জন্য জরিপ বিভাগ কর্তৃক প্রতিটি মৌজার জমির এক বা একাধিক মালিকের নাম, পিতা বা স্বামীর নাম, ঠিকানা, দাগ নম্বর, ভূমির পরিমাণ, হিস্যা (অংশ) ইত্যাদি বিবরণসহ যে ভূমিস্বত্ব প্রস্তুত করা হয় তাকে খতিয়ান বলে।

সিএস খতিয়ান:
সিএস খতিয়ানটি বেঙ্গল টেন্যান্সি অ্যাক্ট 1885 এর অধীনে তৈরি করা হয়েছিল। এটি ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে (সিএস) নামে পরিচিত। এই জরিপটি 1888 সালে কক্সবাজার উপজেলার রামু থেকে শুরু হয় এবং 1940 সালে শেষ হয়। সরকারি আমিনগণ প্রতিটি ভূমিখণ্ড পরিমাপ করে এর আয়তন, অবস্থান ও ব্যবহারের প্রকৃতি নির্দেশক মৌজা নকশা এবং প্রতিটি ভূমিখন্ডের মালিক দখলকারের বিররণ সংবলিত যে খতিয়ান তৈরি করেন তা সিএস খতিয়ান নামে পরিচিত।


এসএ খতিয়ান: এই খতিয়ানটি রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন 1950-এর অধীনে প্রস্তুত করা হয়েছিল। আসলে এটি ব্যাবহারিক জরিপ নয় বা এটি মাঠ জরিপের উপর ভিত্তি করে নয়। জমিদার বা জমিদারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই খতিয়ান করা হতো। এসএ খতিয়ান মানে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ খতিয়ান বা সেটেলমেন্ট অ্যাটেস্টেশন। এটি পিএস খতিয়ান বা পাকিস্তান সার্ভে খতিয়ান নামেও পরিচিত। এটি কোনো প্রামাণিক খতিয়ান নয়।
১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাসের পর সরকার জমিদারি অধিগ্রহণ করেন। তৎপর সরকারি জরিপ কর্মচারীরা সরেজমিনে মাঠে না গিয়ে সিএস খতিয়ান সংশোধন করে যে খতিয়ান প্রস্তুত করেন তা এসএ খতিয়ান নামে পরিচিত। কোনো অঞ্চলে এ খতিয়ান আর এস খতিয়ান নামেও পরিচিত। বাংলা ১৩৬২ সালে এই খতিয়ান প্রস্তুত হয় বলে বেশির ভাগ মানুষের কাছে এসএ খতিয়ান ৬২র খতিয়ান নামেও পরিচিত।

আরএস খতিয়ান:
সিএস জরিপের 50 বছর পর আরেকটি জরিপ অনুষ্ঠিত হয়। এই জরিপটি রিভিশনাল সার্ভে নামে পরিচিত ছিল এবং এই জরিপ থেকে তৈরি খতিয়ান আরএস খতিয়ান নামে পরিচিত। এই জরিপের উদ্দেশ্য হল জমির পরিমাণ, মালিকের নাম এবং মালিকের নাম আপডেট করা। এটি সিএস খতিয়ানের চেয়ে বেশি প্রামাণিক।
একবার জরিপ হওয়ার পর তাতে উল্লেখিত ভুলত্রুটি সংশোধনের জন্য পরবর্তীতে যে জরিপ করা হয় তা আরএস খতিয়ান নামে পরিচিত। দেখা যায় যে, এসএ জরিপের আলোকে প্রস্তুতকৃত খতিয়ান প্রস্তুতের সময় জরিপ কর্মচারীরা সরেজমিনে তদন্ত করেনি। তাতে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়ে গেছে। ওই ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার জন্য সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরেজমিনে ভূমি মাপ-ঝোঁক করে পুনরায় খতিয়ান প্রস্তুত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এই খতিয়ান আরএস খতিয়ান নামে পরিচিত। সারাদেশে এখন পর্যন্ত তা সমাপ্ত না হলেও অনেক জেলাতেই আরএস খতিয়ান চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
সরকারি আমিনরা মাঠে গিয়ে সরেজমিনে জমি মাপামাপি করে এই খতিয়ান প্রস্তুত করেন বলে তাতে ভুলত্রুটি কম লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশের অনেক এলাকায় এই খতিয়ান বিএস খতিয়ান নামেও পরিচিত।

বিএস খতিয়ান: এটি অন্য সব খতিয়ানের চেয়ে বেশি খাঁটি খতিয়ান। 1970 সালে একটি জরিপ শুরু হয়েছিল যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। এই জরিপটি বাংলাদেশ জরিপ নামে পরিচিত এবং বিএস জরিপ থেকে তৈরি খতিয়ান বিএস খতিয়ান বা বাংলাদেশ জরিপ খতিয়ান নামে পরিচিত।



সূত্র: ওয়েবসাইট: ভূমি মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।





No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.