ads

ভাব ও কাজ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর



সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : 
তুমি স্বপ্নে রাজা হতে পার, কোটি কোটি টাকা, বাড়ি-গাড়ির মালিক হতে পার। কল্পলোকের সুন্দর গল্পও হতে পার, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন এক জগৎ। এখানে বড় হতে হলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই। শিক্ষার দ্বারা নিজের সুপ্ত প্রতিভাকে জাগ্রত করে সঠিক কর্মানুশীলনের মাধ্যমে বড় হতে হবে। সুতরাং কল্পনার জগতে হাবু-ডুবু না খেয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে আত্মনিয়োগ করাই মনুষ্যত্বের পরিচায়ক।
ক. যিনি ভাবের বাঁশি বাজিয়ে জনসাধারণকে নাচাবেন তাকে কেমন হতে হবে?
খ. লেখক ‘স্পিরিট’ বা আত্মার শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে বলেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের যে দিকটি নির্দেশ করে তা বর্ণনা কর।
ঘ. ‘কল্পনার জগতে হাবু-ডুবু না খেয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে আত্মনিয়োগ কনাই মনুষ্যত্মের পরিচায়ক’- মন্তব্যটি ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের আলোকে মূল্যায়ণ কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন ২ :
দৃশ্যকল্প-১ আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে।
মুখে হাসি বুকে বল, তেজে ভরা মন,
মানুষ হইতে হবে এই তার পণ।
দৃশ্যকল্প-২ নন্দর ভাই কলেরায় মরে দেখিবে তারে কেবা
সকলে বলে, যাওনা নন্দ কর না ভাইয়র সেবা
নন্দ বলিল, ভাইয়ের জন্য জীবনটা যদি দিই
না হয় দিলাম, অভাগা দেশের হইবে কী?
বাঁচাটা আমার অতি দরকার ভেবে দেখি চারদিক।

ক. কোন বিষয় বিবেচনা করে কাজে নামলে উৎসাহ অনর্থক নষ্ট হবে না?
খ. ‘দশচক্রে ভগবান ভূত’ – ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে কোন লেখক কেন এ কথা বলেছেন?
গ. দৃশ্যকল্প-২ ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের কোন বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করেছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. দৃশ্যকল্প-১ এর আহ্বানই ‘ভাব ও কাজ’ প্রবনেধর লেখকের আহ্বান- মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩
জেএসসি পরীক্ষায় ফলাফল খারাপ হওয়ায় সামিহা প্রতিজ্ঞা করেছিল, এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করবই। কিন্তু সে অনুযায়ী লেখাপড়া করে না সামিহা। ফেসবুক নিয়েই সারা দিন ব্যস্ত থাকে সে।

ক. ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে কোনটিকে ‘মহাপাপ’ বলা হয়েছে?
খ. ‘ভাবের সুরা পান কর ভাই কিন্তু জ্ঞান হারাইও না’। বলতে প্রাবন্ধিক কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. উদ্দীপকের সামিহার কর্মকা- ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের কোন দিককে নির্দেশ করে ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের সামিহাকে প্রাবন্ধিকের বক্তব্য বাস্তবায়ন করতে হলে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে? ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪: 
প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ অনূর্ধ্ব-১৬-এর ফাইনাল খেলা আর কিছুক্ষন পর শুরু হবে। জাগরণী ক্রিকেট ক্লাবের কোচ আমিনুল তার দলবল নিয়ে মাঠে হাজির। শুধু অনুপস্থিত দলের অধিনায়ক ও ওপেনিং ব্যাটসম্যান আনিস। এদিকে খেলার সময়ও ঘনিয়ে আসছে, ওদিকে আনিসও আসছে না দেখে কোচ আমিনুল দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলেন। খেলা শুরু হতে আর মাত্র পাঁচ মিনিট। কোচের দুশ্চিন্তা ক্রমে বেড়েই চলছে। তিনি পরিকল্পনা করছেন আনিসের পরিবর্তে দলের দ্বাদশ খেলোয়াড়কে মাঠে নামাবেন। এমন সময় আনিস গায়ে প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে মাঠে হাজির হয়। তখন কোচ আমিনুল বললেন, তোমার গায়ে অনেক জ্বর! এ জ্বর নিয়ে তুমি খেলবে কী করে?

ক. ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে লেখক ভাবের সঙ্গে বাস্তবধর্মী কর্মে তৎপর হওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন কেন?
খ. ‘দশচক্রে ভগবান ভূত’ বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের কোচ আমিনুলের দুশ্চিন্তার সঙ্গে ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের তুলনীয় দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে আনিসের কাজের সঙ্গে ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে লেখকের চাওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত বলে তুমি মনে কর? তোমার মতামত দাও।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৫: 
হাশেম সারাদিন নানা ধরনের কাজের শুধু পরিকল্পনাই করে, কিন্তু বাস্তবায়ন করতে পারে না। আর কাশেম পরিকল্পনা কম করলেও সবটুকুকেই সে কর্মে রূপ দেয়। কাশেমের জীবনের সাফল্য হাশেমের চেয়ে অনেক বেশি।
ক. লোকের কোমল অনুভূতিতে ঘা দেওয়া কী?
খ. সত্যের সাধনা বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন?
গ. উদ্দীপকের কাশেমের বৈশিষ্ট্য ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের সঙ্গে কীভাবে সম্পর্কযুক্ত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘উদ্দীপকের হাশেম আত্ম্রা শক্তিকে নষ্ট করছে।’ – ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : 
মহাজ্ঞানী সাধক নন্দলালের মতে, ভব সংসার থেকে মানুষ কর্মের মাধ্যমে মুক্তি লাভ করতে পারে। কারণ, ভাব সাধনায় জীবন আধ্যাত্মিক স্তরে পৌঁছায় বটে, কিন্তু কর্ম না করলে মানুষের আত্মার মুক্তি ঘটে না। তাই কর্মসম্পাদনেই রয়েছে প্রকৃত মুক্তির পথ।

ক. ‘পুয়াল’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘দশচক্রে ভগবান ভূত’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের নন্দলালের মন্তব্য ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের কোন দিকটিকে প্রতিফলিত করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘কর্মসম্পাদনেই রয়েছে মুক্তির পথ’- উক্তিটি ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৭: 
অসাধ্য সাধন করেছেন মহাত্মা গান্ধী। তিনি মানুষকে ভালোবেসেছেন বলেই তাঁর কথায় সবাই কাজ করেছেন। তাঁর কথার সঙ্গে কাজের মিল আছে বলেই মানুষ তাঁকে ভালোবেসে আগলে রেখেছেন।
ক. ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে?
খ. সোনার কাঠি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে মহাত্ম্ গান্ধীর মধ্যে ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের কোন দিকটি বিদ্যমান? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘তাঁর কথার সঙ্গে কাজের মিল আছে বলেই মানুষ তাঁকে ভালোবেসে আগলে রেখেছেন’- মন্তব্যটি ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৮: 
বিলেতের এক পণ্ডিত দেশভ্রমণ দ্বারা অগাধ জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। গ্রিক দেশ থেকে ফিরে এসে তিনি আরম্ভ করলেন মালির কাজ, যা তুমি আমি করতে লজ্জাবোধ করব। তাতে কি তাঁর জাত গিয়েছিল? যার মধ্যে জ্ঞান ও গুন আছে, সে কয়দিন নিচে পড়ে থাকে? লোকে তাকে সম্মান করে পরে টেনে তোলেই।

ক. ‘কর্পূর’ শব্দের অর্থ কী?
খ. লেখক ‘স্পিরিট’ বা আত্মার শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে বলেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের যে দিকটি নির্দেশ করে, তা বর্ণনা কর।
ঘ. ‘যার মধ্যে জ্ঞান ও গুন আছে, লোকে তাকে সম্মান করে উপরে টেনে তোলেই’- উক্তিটি ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের আলোকে মূল্যায়ন কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৯: 
‘উদ্দীপন’ জাগনিয়া গ্রামের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। ব্যক্তিজীবন এবং ক্রিকেট-জীবনে তার সাফল্য অসীম। খেলার মাঠে তার অভিব্যক্ত ও চঞ্চলতা চোখে পড়ার মতো। তার মধ্যে রয়েছে দারুন এক উদ্দীপনা শক্তি, যা তিনি সহজে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারেন। ফলে দলের সবাই একই মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে সফলতা বয়ে আনে।
ক. ‘ভাব ও কাজ’ রচনাটি কোন জগতের?
খ. ‘কর্মশক্তি আনিবার জন্য ভাব-সাধনা কর’- বাক্যটি বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের উদ্দীপনের মধ্যে ‘ভাবও কাজ’ প্রবন্ধের ফুটে ওঠা দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপনই কি ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের লেখক নজরুলের ভাবনার নায়ক?’’ তোমার উত্তরের সপক্ষে যৌক্তিক মতামত দাও।

সৃজনশীল প্রশ্ন ১০: 
আরশাদ খাঁ সম্বোধন করে বললেন, ‘ভাইসব মসিবতে কানলে হয় না।’ বুকে জোর করা লাগে। আমি যা কই শোনো, সবাই নিমগ্নচিত্তে বৃদ্ধের উপদেশ শোনে। সবার দৃষ্টি তার ওপর নিবদ্ধ। সংক্ষেপে তাঁর পরামর্শ এরকম : দলবদ্ধভাবে এবং পালাক্রমে তারা বিভিন্ন ঘরের চাল মেরামত শুরু করবে। প্রথমে বড় বড় কয়েকটি ঘর, যেন বৃষ্টি হলে অন্য গৃহহীনেরা আশ্রয় নিতে পারে। তারপর অন্যঘর। গ্রামে ছয়শ’ চাল উড়ে গেছে। কিন্তু জোয়ান লোক আছে এক হাজার। তারা একত্রে কাজ করলে কয়দিন লাগবে উঠাতে; কিছুক্ষণ আগে যারা হাউমাউ কান্না জুড়েছিল তারা পর্যন্ত সানন্দে অগ্রসর হলো।

ক. ‘মশগুল’ শব্দের অর্থ কী?
খ. প্রাবন্ধিক অন্ধের মতো কিছু না বুঝে না শুনে চলতে নিষেধ করেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকে আরশাদ খাঁর আহ্বান ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের কোন দিকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘‘উদ্দীপকের আরশাদ খাঁর মাঝে ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের প্রাবন্ধিকের চেতনার সার্থক প্রতিফলন ঘটেছে।”- মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ১১: 
ঐতিহ্যবাহী ফুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহানা তার বিদ্যালয়ের সুনাম নিয়ে গর্ব করে। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন থাকার ব্যাপারটি তাকে ভীষণ পীড়া দেয়। বিষয়টি শ্রেণিশিক্ষককে জানালে তিনি পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতার প্রয়োজনীয়তার ওপর উদ্দীপনামূলক এক বক্তৃতা করেন এবং ছুটির পর সবাইকে থাকতে বলেন। চরম উত্তেজনা নিয়ে সবাই অপেক্ষা করে, কিন্তু স্যারের দেখা নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেল— তিনি বাসায় চলে গেছেন। শাহানা মর্মাহত হয় এবং বিষয়টি নিয়ে ভাবতে থাকে । পরদিন পরিকল্পনামাফিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদেরকে সে কয়েকটি দলে ভাগ করে এবং ছুটির পর পালাক্রমে এক একটি দল শ্রেণিকক্ষটি পরিষ্কার করতে শুরু করে। তারা শ্রেণিকক্ষের দেওয়ালে বিভিন্ন মনীষীর ছবি টানিয়ে দেয়। ফলে শ্রেণিকক্ষটি আকর্ষণীয় ও পাঠের উপযোগী হয়ে ওঠে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শাহানাদেরকে ভীষণ প্রশংসা করেন এবং পুরস্কারের ব্যবস্থা করেন।

ক. দশচক্রে ভগবান ভূত' কথাটির অর্থ কী?
খ. 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধে 'পুষ্পবিহীন সৌরভ' বলতে
বোঝানো হয়েছে? গ. উদ্দীপকের শ্রেণিশিক্ষকের মধ্যে 'ভাব ও কাজ' প্রব যে দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো ঘ. “শ্রেণিশিক্ষক নন, শাহানাই কাজী নজরুল ইসলামের কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিত্ব" - 'ভাব ও কাজ' ন্ধের আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই করো 8

১১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর 
ক. "দশচক্রে ভগবান ভূত' কথাটির অর্থ— দশজনের চক্রান্তে সাধুও অসাধু প্রতিপন্ন হতে পারে, অর্থাৎ বহুলোকের ষড়যন্ত্রে অসম্ভবও সম্ভব হয়।
খ 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধে 'পুষ্পবিহীন সৌরভ' বলতে বোঝানো হয়েছে— ভাব আবেগনির্ভর অবাস্তব উচ্ছ্বাসমাত্র ।
মানুষকে জাগিয়ে তোলার ক্ষেত্রে ভাবের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে তা যদি কাজের সঙ্গে গেঁথে দেওয়া না যায় তাহলে তা মূল্যহীন হয়ে পড়ে। আবার কোনো কাজের জন্য যে যে পরিমাণ ভাব প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি হলেও তা বিফলে যায়। তাই কেবল ভাবে আচ্ছন্ন হলেই চলবে না, তাকে কাজের সঙ্গেও সম্পৃক্ত করতে হবে। আত্মশক্তি অর্জনে ভাব ও কাজের মধ্যে সমন্বয়সাধন অপরিহার্য। অর্থাৎ ভাব হলো এমন জিনিস যা চোখে দেখা যাবে না কিন্তু তার সৌরভ অনুভব করা যাবে। সুতরাং 'ভাব ও কাজ প্রবন্ধে পুষ্পবিহীন সৌরভ বলতে ভাবের এই আবেগনির্ভর অবাস্তব উচ্ছ্বাসকেই বোঝানো হয়েছে।
গ‘ উদ্দীপকের শ্রেণিশিক্ষকের মধ্যে ভাবের সাথে কাজের সমন্বয়হীনতার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। 
'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধে লেখকের মতে, ভাব মানুষের জাগরণের উপকরণ। মানুষের মনকে জাগিয়ে তুলতে গেলে ভাবের প্রয়োজন হয়। আর সেই মানুষকে তার নিজের, পরিবারের, সমাজের, রাষ্ট্রের ও জাতির জন্য যথাযথভাবে গড়ে তুলতে হলে তাকে | অবশ্যই কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। বৃহত্তর কল্যাণের স্বার্থে মানুষকে ভাব দিয়ে জাগিয়ে কর্ম দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই ভাবের সাথে কাজের সমন্বয়সাধন করতে হবে। কাউকে অযথা ভাবে মাতোয়ারা করা যাবে না, কারণ তাতে স্পিরিট নষ্ট হয়।
উদ্দীপকের শ্রেণিশিক্ষক শিক্ষার্থীদের প্রতি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রয়োজনীয়তার ওপর বক্তৃতা দিয়ে তাদের ভাবে মশগুল করে ফেলে। তাদের মধ্যে যখন কাজ করার জন্য চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে তখন স্কুলশিক্ষকও বাড়ি চলে যায়। এতে এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের মধ্যে ভাব ও কাজের সমন্বয় পরিলক্ষিত হয় না, যা স্পিরিটের জন্য খুবই ক্ষতিকর। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের কী শ্রেণিশিক্ষকের মধ্যে ভাবের সাথে কাজের সমন্বয়হীনতার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
ঘ 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধে কাজী নজরুল ইসলাম ভাবের সঙ্গে কাজের সমন্বয় সাধনের যে গুরুত্বের কথ বলেছেন তা উদ্দীপকের শাহানার মধ্যে ফুটে ওঠায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
''ভাব ও কাজ' প্রবন্ধে কাজী নজরুল ইসলাম ভাবের উচ্ছ্বাসে উদ্বেল হওয়া নয়, ভাবের সঙ্গে পরিকল্পিত কর্মশক্তি ও বাস্তব উদ্যোগের প্রয়োজন সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। তিনি মনে করেন ভাবের দ্বারা মানুষকে জাগিয়ে তোলা যায়, কিন্তু যথাযথ পরিকল্পনা ও কাজের স্পৃহা ছাড়া যে কোনো ভালো উদ্যোগ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। প্রবন্ধটিতে লেখক দেশের উন্নতি ও মুক্তি এবং মানুষের কল্যাণের জন্য ভাবের সঙ্গে বাস্তবধর্মী কর্মে তৎপর হওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন।
উদ্দীপকের শাহানা উপলব্ধি করে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন রাখার প্রয়োজনীয়তা। এ বিষয়ে সে শ্রেণিশিক্ষকের সাথে কথা বলে। কিন্তু শ্রেণিশিক্ষক যখন তার বক্তব্য অনুযায়ী কাজ না করে বাড়ি চলে যায় তখন সে মর্মাহত হলেও বিষয়টি নিয়ে নিজের পরিকল্পনামতো কাজ করে শ্রেণিকক্ষের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনে।
উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, উদ্দীপকের শাহানা কাজী নজরুল ইসলামের দেখানো পথে চলেছে। অর্থাৎ ভাব ও কাজের । সমন্বয় সাধন করেছে। কিন্তু শ্রেণিশিক্ষক সেখানে ব্যর্থতার পরিচয় ' দিয়েছেন। তাই বলা যায়, 'শ্রেণিশিক্ষক নন, শাহানাই কাজী নজরুল ইসলামের কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিত্ব'— 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটি যথার্থ।
সৃজনশীল প্রশ্ন ১২: 
কাজ নয়, কথায় আশরাফ হোসেনের জুড়ি মেলা ভার মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা করাই তার কাজ। লোকজন প্রথম প্রথম উৎসাহিত বোধ করলেও কথাসর্বস্ততার জন্য কেউ-ই এখন আর তাঁর ডাকে সাড়া দেয় না ।
ক. 'লা-পরোয়া' শব্দের অর্থ কী?
খ. ' দশচক্রে ভগবান ভূত' বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ২ 
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধের সাদৃশ্যগত দিকটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. আশরাফ হোসেনের ডাকে লোকজনের সাড়া না দেওয়ার কারণ 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক  'লা-পরোয়া' শব্দের অর্থ গ্রাহ্য না করা ।
খ. দশজনের চক্রান্তে সাধু ব্যক্তিও অসাধু প্রতিপন্ন হতে পারে বোঝাতে প্রাবন্ধিক উক্ত প্রবাদটির ব্যবহার করেছেন। 
সমাজের মানুষ হুজুগের বশে অনেক সময়ই ভুলকে সঠিক ভেবে গ্রহণ করে। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে কোনো ব্যক্তিসমষ্টি সাধু ব্যক্তিকেও অসাধু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। মানুষের হুজুগে স্বভাবের সুযোগ নিয়ে সবাই মিলে অপপ্রচার চালিয়ে সেটিকে তারা বাস্তবরূপও দিতে চায়। অনেকের সম্মিলিত ষড়যন্ত্রে অসম্ভবও সম্ভব হয়— এটিই আলোচ্য উক্তিতে প্রকাশ পেয়েছে।
গ উদ্দীপকে 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধের ভাবগত দিকটি পেয়েছে।
মনের চিন্তা ও পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করলে সফ হওয়া যায়। সারাদিন চিন্তা করেও যদি কাজে নামা না যায় হলে তা অলীক কল্পনা হিসেবে পরিগণিত হয়। এরূপ লোকের কথা কেউ শোনে না।
উদ্দীপকে আশরাফ হোসেনকে দেখা যায় সে কথা সর্বস্ব মানুষ । তার কথার সাথে কাজের মিল নেই। সে তার কথা অনুসারে কাজ না করায় মানুষ বিশেষ উপকৃত হয় না। তাই তারা আশরাফের কথায় সাড়া দেয় না। 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধেও বলা হয়েছে যে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ভাবের গুরুত্ব আছে তবে শুধু ভাব দিয়ে মহৎ কাজ হয় না। সুতরাং উদ্দীপকে ভাব সর্বস্ব আশরাফকে দিয়ে কোনো কাজ হয়নি। এটি প্রমাণ করে যে, উদ্দীপকের মূল বিষয়ের সাথে 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধের ভাবগত বিষয়ের সাদৃশ্য আছে।

ঘ ভাব ও কাজের মধ্যে মিল না থাকায় উদ্দীপকে আশরাফ হোসেনের ডাকে লোকজন সাড়া দেয়নি। 
ভাব দিয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করলেই মহৎ কাজ সম্পন্ন হয়ে যায় না। এ জন্য কর্মশক্তি ও উদ্যোগের প্রয়োজন। এ দুয়ের মধ্যে সমন্বয় না থাকলে ভালো উদ্যোগ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। 
উদ্দীপকে আশরাফ সাহেব সুন্দর কথার মাধ্যমে মানুষকে উৎসাহিত করেছেন। এটি তার একটি প্রশংসনীয় কাজ হলেও এ দ্বারা কোনো মহৎ কাজ পরিপূর্ণ হয়ে যায় না। তাকে কথার সাথে কাজের সমন্বয় ঘটাতে হতো। এটি করতে পারলেই 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধের সম্পূর্ণ বিষয়বস্তু যেমন ফুটে উঠত তেমনি মানুষ উপকৃত হয়ে তার ডাকে সাড়া দিত । 
উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, উদ্দীপকে আশরাফের কাজ 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধের ভাবসর্বস্ব বিষয় যা বাস্তবধর্মী নয় । এ জন্য আশরাফের ডাকে লোকজন সাড়া দেয়নি।

সৃজনশীল প্রশ্ন-১৩
জনাব ইসলাম বিভিন্ন স্কুল-কলেজে গরবি-দুঃখী ৪ ছাত্র-ছাত্রীদের প্রচুর সহায়তা করেন গোপনে। লোক দেখানো কোনো কিছু করাকে তিনি অপছন্দ করেন। অথচ তাঁর পাশের প্রতিবেশী মজিবর শুধু ভাবেন তিনি সহায়তা করবেন কিন্তু তা কার্যে পরিণত করেন না । রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা।
ক. কত বছর বয়সে কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্য সাধনায় ছেদ ঘটে?
খ. ভাবকে 'অবাস্তব উচ্ছ্বাস' বলার কারণ কী?
গ. উদ্দীপকের জনাব ইসলামের কর্মকাণ্ড 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ঘ. উদ্দীপকের মজিবর 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধের কোন দিককে প্রতিনিধত্ব করে? মূল্যায়ন করো।  
১৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক.  তেতাল্লিশ বছর বয়সে কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্য সাধনায় ছেদ ঘটে।
খ. মনের কল্পনা থেকে সাময়িক উত্তেজনা প্রকাশ করে বলেই ভাবকে অবাস্তব উচ্ছ্বাস বলা হয়েছে।
মানুষের মন স্বভাবতই কল্পনাপ্রবণ ও স্বপ্নবিলাসী। এই কল্পনা মানুষের মধ্যে সাময়িক একটি প্রণোদনা সৃষ্টি করে। লেখক এই প্রণোদনাকেই বলেছেন ভাব; যা পরিপূর্ণ হয় কাজের মাধ্যমে। কাজ বিহীন ভাবের কোনো বাস্তবিক স্থান নেই। সে কারণে লেখক একে অবাস্তব উচ্ছ্বাস বলেছেন।
গ. 'ভাব ও কাজ' নিবন্ধের বক্তব্য অনুসারে উদ্দীপকের জনাব ইসলাম ভাবকে কর্মে রূপ দিতে সমর্থ হয়। 
ভাব ছাড়া মানুষের আত্মা জাগে না। কিন্তু ভাবের দাস হয়ে পড়লে মানুষের কর্মশক্তি হারিয়ে যায়। সে কারণে লেখক মানুষকে কর্মের দাস হতে বলেছেন । মনের ভাবকে কর্মের মাধ্যমে সামনে তুলে না । ধরলে তার বাস্তবিক কোনো মূল্য থাকে না বলেই লেখক মনে করেন।
উদ্দীপকে জনাব ইসলাম খুব অল্প পরিকল্পনা করেন। কিন্তু যতটুকু তিনি ভাবেন, সবটুকুকেই কর্মে রূপ দেন। অর্থাৎ জনাব ইসলাম ভাব ও কাজের মধ্যে দূরত্ব দূর করে সমন্বয় সাধন করতে পেরেছেন। সে কারণে তাঁর মনের ভাব সম্পূর্ণভাবে কর্মে রূপান্তরিত হয়েছে ।


No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.