ads

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ম অধ্যায়


৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ম অধ্যায়

কৃষিনির্ভর। কৃষির পাশাপাশি শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসার লাভ করেছে। দেশে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় কিছু শিল্প কারখানা, রেল ও সড়ক ব্যবস্থা প্রভৃতি রয়েছে। বর্তমানে আমাদের দেশে গার্মেন্টস শিল্প বিকাশ লাভ করেছে, যা অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখছে। শ্রমজীবী মানুষের জীবনও সেইসাথে উন্নত হচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নতি ছাড়া কোনো দেশ ও জাতি টিকে থাকতে পারে না। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমাদের কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য দ্রুত উন্নতি লাভ করতে শুরু করে। এ ধারা আরও বেগবান করা সম্ভব। তা করা হলে দেশ থেকে বেকারত্ব, দারিদ্র্য দূর হবে, দেশের জনগণও উন্নত জীবনযাপন করতে পারবে। এই অধ্যায়ের পাঠগুলোতে আমরা সেই বিষয়ে জানতে পারব।

৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ম অধ্যায়
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : আশরাফ আলী তার কারখানায় পশুর চামড়া দিয়ে ব্যাগ তৈরি করেন। প্রথম বছরে ইংল্যান্ডে তার তৈরি ব্যাগ স্বল্প পরিমাণে বিক্রি হলেও তিন বছর শেষে ইউরোপের কয়েকটি দেশে তার পণ্যের ব্যাপক চাহিদা পরিলক্ষিত হয়। অন্যদিকে তার স্ত্রী মিসেস জমিলা প্রতিদিন বাড়ির আঙিনার হাঁস ও মুরগির খামার থেকে প্রায় শতাধিক ডিম বাজারে বিক্রি করছে। দুজনের যৌথ প্রচেষ্টায় তাদের সুখের সংসার।
ক. বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার কতো অংশ শহরাঞ্চলে বাস করে?
খ. বাংলাদেশকে কৃষিপ্রধান দেশ বলা হয় কেন?
গ. মিসেস জমিলার কাজটি অর্থনীতির কোন খাতের বৈশিষ্ট্যের সাথে সংগতিপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আশরাফ আলী ও মিসেস জমিলার কাজের মধ্যে কোনটি অর্থনৈতিক উন্নয়নে অধিক সহায়ক বলে তুমি মনে কর? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

প্রশ্নের উত্তর

ক. বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ত্রিশ শতাংশ শহরাঞ্চলে বাস করে।

খ. বাংলাদেশের অর্থনীতির বৃহৎ একটা অংশ কৃষিনির্ভর বলে বাংলাদেশকে কৃষিপ্রধান দেশ বলা হয়। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী। জীবিকার জন্য তারা প্রত্যক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে শহরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষও কৃষির ওপর পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। এদেশের শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামাল কৃষি সরবরাহ করে।
এছাড়া এদেশের অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় প্রচুর ফসল উৎপাদিত হয় যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। অর্থাৎ কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে যথেষ্ট অবদান রাখে। তাই বাংলাদেশকে কৃষিপ্রধান দেশ বলা হয়।

গ. মিসেস জমিলার কাজটি অর্থনীতির কৃষিখাতের বৈশিষ্ট্যের সাথে সংগতিপূর্ণ। যেকোনো দেশের অর্থনীতিকে বেশ কিছু খাতে ভাগ করা যায়। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে মোট ১৫ টি খাতে ভাগ করা হয়। কৃষি খাত এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি খাত। কৃষি খাতের মধ্যে রয়েছে ‘কৃষি ও বনজ’।

তবে বৃহত্তর অর্থে, মৎস্য সম্পদ, পশু সম্পদও কৃষিখাতের অন্তর্ভুক্ত। উদ্দীপকে বলা হয়েছে, আশরাফ আলীর স্ত্রী জমিলা হাঁস মুরগির খামার করে অর্থ উপার্জন করে। তার এ ধরনের অর্থনৈতিক কাজ কৃষিখাতকে নির্দেশ করে।

প্রাচীনকাল থেকেই এদেশের অর্থনীতিতে কৃষি মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। এদেশের বেশিরভাগ মানুষ জীবিকার জন্যে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে জাতীয় আয়ে কৃষি খাতের অবদান হ্রাস পেয়ে হয়েছে ১৪.৭৯ শতাংশ (আগে ছিল ১৫.৩৫)।

জাতীয় আয়ে অবদান হ্রাস পেলেও কৃষির উপখাতের প্রবৃদ্ধি গত বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন- ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে বনজ, খাদ্যশস্য ও শাকসবজি উপখাতে প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ১.৭৯ এবং ০.৮৮ যা ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২.৫১ এবং ১.৭২।

ঘ. আশরাফ আলীর কাজটিই অর্থনৈতিক উন্নয়নে অধিক সহায়ক বলে আমি মনে করি। আশরাফ আলীর কাজ শিল্প খাতের সাথে সংগতিপূর্ণ। তার কারখানায় পশুর চামড়া দিয়ে ব্যাগ তৈরি করে যেমন দেশের চাহিদা মেটাচ্ছেন, ঠিক তেমনি বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমেও বিশ্বে চামড়াজাত ব্যাগের চাহিদা মেটাচ্ছেন।

যদিও চামড়া শিল্পের অধিকাংশ কাঁচামাল কৃষির উপখাত পশু সম্পদ থেকেই সরবরাহ করা হয়। তারপরও আমি মনে করি, চামড়া শিল্প কৃষির তুলনায় অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেশি সহায়ক হবে। আমাদের দেশে চামড়া শিল্প একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প। অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের অন্যতম খাত চামড়া শিল্প। এ খাত থেকে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
অন্যদিকে কৃষি অনেকাংশে প্রকৃতিনির্ভর। প্রকৃতির বিরূপ আচরণের কারণে কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে যা অর্থনৈতিক ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু চামড়া শিল্পে এরূপ সম্ভাবনা নেই। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার মাধ্যমে এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে পারলে তা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা রাখবে। পরিশেষে বলা যায়, আশরাফ আলীর কাজটি অর্থনীতিতে অধিক সহায়ক।


অনুশীলন করো: 

সৃজনশীল প্রশ্ন ২: জুলেখা বেগমের একমাত্র মেয়ে শান্তা। সে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। তার মা কাপড় বোনে এবং তার বাবা বাড়ির পাশের জমিতে শাক-সবজি চাষ করে। মূলত শান্তার বাবার কৃষিকাজ এবং মায়ের কাপড় বোনার মাধ্যমে তাদের সংসার চলে। যদিও তারা গ্রামে বাস করে তবুও তাদের সংসার সচ্ছল। শান্তার বাবা মায়ের যৌথ আয়ে তাদের দৈনিক খরচ বাদেও কিছু বাড়তি থেকে যায়, যা সঞ্চয়ের মাধ্যমে তারা ভবিষ্যতের পথচলা সুগম করছে। 
ক. গ্রামের মানুষের জীবিকার প্রধান অবলম্বন কী?
খ. বিদেশ থেকে আমাদের খাদ্য আমদানি করতে হয় কেন?
গ. শান্তার পরিবার কোন ধরনের অর্থনীতিতে অবদান রেখেছে? বর্ণনা কর।
ঘ. ‘আমাদের দৈনন্দিন জীবনের উক্ত অর্থনীতির গুরুত্ব অপরিসীম’— শান্তার পরিবারের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৩: মোঃ আনিস তার কারখানায় পশুর চামড়া দিয়ে ব্যাগ তৈরি করেন। প্রথম বছরে তার ব্যাগ স্বল্প পরিমাণে বিক্রি হলেও কয়েক বছর পর বাইরের কয়েকটি দেশে তার পণ্যের ব্যাপক চাহিদা হয়। অন্যদিকে তার স্ত্রী সবজি চাষ করে তা বাজারে বিক্রি করেন। দুইজনের যৌথ প্রচেষ্টায় সুখের সংসার।
ক. বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার কত অংশ শহরে বাস করে।
খ. বাংলাদেশকে কৃষিপ্রধান দেশ কেন বলা হয়?
গ. মোঃ আনিসের স্ত্রীর কাজটি অর্থনীতির কোন খাতের সাথে সংগতিপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মোঃ আনিস ও তার স্ত্রীর মধ্যে কোনটি অর্থনৈতিক উন্নয়নে অধিক সহায়ক বলে মনে কর?


সৃজনশীল প্রশ্ন ৪: দৃশ্যপট-১: গ্রামের হাট-বাজার, কৃষিকাজ, কামার, ছোটখাটো ব্যবসা।
দৃশ্যপট-২: অভিজাত এলাকা, অফিস, আদালত, শিল্পায়ন, ফ্ল্যাট।

ক. বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার কত অংশ শহরাঞ্চলে বাস করে?
খ. গ্রামীণ অর্থনীতি বলতে কী বোঝ?
গ. দৃশ্যকল্প-২ কোন অর্থনীতিকে নির্দেশ করছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. দৃশ্যকল্প-১ ও দৃশ্যকল্প-২ এই দুইয়ের মাঝে কোনটি অর্থনীতির চাকা গতিশীল করে বলে তুমি মনে কর?

সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ : মিতার বাবা-মা গ্রামে থাকেন। তারা সেখানে কুমারের কাজ করেন। মিতার চাচা শহরে গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করেন। তার গার্মেন্টস থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ পোশাক বিদেশে রপ্তানি হয় এবং অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশ।
ক. অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য কী?
খ. কৃষির উন্নতির জন্য কী প্রয়োজন?
গ. মিতার বাবা-মা ও চাচার কাজের অর্থনৈতিক গুরুত্ব আলোচনা কর ।
ঘ. মিতার চাচার কাজের ক্ষেত্রটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কীভাবে ভূমিকা রাখছে তা ব্যাখ্যা কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৬: আহাদ ও ফিরোজ দুই বন্ধু। তারা শিক্ষিত হয়েও বেকার জীবন কাটাচ্ছে। তারা সিদ্ধান্ত নিল গ্রামে গিয়ে তাদের জমিগুলো কাজে লাগাবে এবং বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি লাভ করবে। তারা স্বল্প পুঁজি দিয়ে হাঁস-মুরগি পালন এবং ছোট একটা পুকুরে মাছের চাষ শুরু করে। একটা জমিতে সবজি চাষ করে। ধীরে ধীরে সঞ্চয় বাড়লে একটি গরুর খামার করে। আর এভাবে তারা স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে।
ক. বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার কত শতাংশ শহরে বাস করে?
খ. মানবসম্পদ কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. আহাদ ও ফিরোজের কাজগুলো অর্থনীতির কোন খাতের মধ্যে পড়ে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য খাতগুলো কতটুকু ভূমিকা পালন করে উদ্দীপকের আলোকে বর্ণনা কর।

সৃজনশীল প্রশ্ন ৭: আরফান মাস্টার্স পাস করে দীর্ঘদিন যাবৎ বেকার। সে পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারে সরকারি অর্থায়নে ঢাকায় কারিগরি প্রশিক্ষণের বিভিন্ন কোর্সে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এতে সে ভর্তি হয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এবং প্রশিক্ষণ শেষে দক্ষ শ্রমিক হিসেবে কানাডা যায়। সেখান থেকে অর্জিত অর্থ দেশে পাঠায় এবং পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে আসে।
ক. মানুষের মৌলিক চাহিদা কয়টি?
খ. মানুষের উৎপাদনশীলতা বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে আরফানের মানবসম্পদ সৃষ্টিতে কীসের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত আরফানের মতো কীভাবে দরিদ্র জনগণকে মানবসম্পদে পরিণত করা যায় তা তুলে ধরো।




No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.