ads

" বাংলা সাহিত্যে ছন্দ"


বাংলা সাহিত্যে ছন্দ ৩ প্রকার। যথা:
স্বরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত ও অক্ষরবৃত্ত ।
সব ছন্দেই মুক্তাক্ষর ১ মাত্রার হয়। আর স্বরবৃত্তে বদ্ধাক্ষর সবসময় ১ মাত্রা, মাত্রাবৃত্তে বদ্ধাক্ষর ২ মাত্রা আর অক্ষরবৃত্তে বদ্ধাক্ষর ১/২ মাত্রা হতে পারে।
অক্ষরবৃত্তে বদ্ধাক্ষর শব্দের শুরুতে ও মাঝে হলে ১ মাত্রা এবং শব্দের শেষে ও পূর্ণ শব্দ হলে ২ মাত্রা হবে।
স্বরবৃত্তের তাল/লয় দ্রুত হয়,
মাত্রাবৃত্তে হয় মাঝারি এবং অক্ষরবৃত্তে হয় ধীর।
যেমন: স্বরবৃত্ত--
ছিপ খান তিন দাঁড়
তিন জন মাল্লা।
বৃষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর।
মাত্রাবৃত্ত: এইখানে তোর দাদির কবর ডালিম গাছের তলে।
রাত থম্ থম্ স্তব্ধ নিঝুম ঘোর ঘোর আন্ধার।
অক্ষরবৃত্ত: হে দারিদ্র্য, তুমি মোরে করেছ মহান।
সতত, হে নদ, তুমি পড় মোর মনে।
কবিতার শেষ চরণে মিল থাকলে বলে মিত্রাক্ষর এবং মিল না থাকলে বলে অমিত্রাক্ষর ।
কাব্যসাহিত্যে ছন্দ সম্পর্কে ধারণা পেতে হলে আগে ‘মাত্রার’ ধারণা থাকা প্রয়োজন ।
মাত্রা : কাব্যে গতির সমতা রক্ষাকে "মাত্রা" বলে।
মাত্রা সময় নিরূপক নির্দেশনা । কোন অক্ষরে কত সময় স্বর অবস্থান করবে , মাত্রায় তা উল্লেখ থাকে। আবৃত্তির ক্ষেত্রে মাত্রা অপরিহার্য। সময়ের পরিমাণ মাত্রা দিয়েই বোঝানো হয়।
সঙ্গীতে যেমন : ধা। ধিন্। ধিন্। ধা। =৪ মাত্রা। তেমনি কাব্যে , ছিপ।খান। তিন।দাঁড় । তিন।জন ।মাল। লা । = ৮ মাত্রা ।
অক্ষর বলতে , আমরা একসঙ্গে কোন বর্ণে কতটা সময় অবস্থান করি----তার উপর নির্ভর করে ধরা হয় । অক্ষর অনেকটা ইংরেজি ‘সিলেবল’য়ের মতো । অক্ষর আর বর্ণ সম্পূর্ণ আলাদা । যেমন ,ক+ল+ম-----এখানে বর্ণ আছে তিনটি কিন্তু যখন শব্দটা উচ্চারণ করি তখন বলি—ক+ লম ,অর্থাৎ অক্ষর এখানে দুইটি । একটি মুক্তাক্ষর এবং অন্যটি যুক্তাক্ষর বা বদ্ধাক্ষর । সাধারণত কবিতা লেখা হয় পয়ারের ছন্দে । পয়ার ৮+৬ =১৪ মাত্রার দুইটি পর্ব বিশিষ্ট পদ বা চরণ । প্রতি দুই চরণে অন্ত্যমিল থাকে।
শব্দ উচ্চারণের ক্ষেত্রে অক্ষরের শেষে স্বরবর্ণ বা ভাওয়েল থাকলে মুক্তাক্ষর এবং শেষে ব্যঞ্জন বর্ণ বা কনসুনেন্ট থাকলে বদ্ধাক্ষর হয়।
প্রায় সব কবিরাই স্বরবৃত্ত ও মাত্রাবৃত্ত ছন্দে কবিতা লেখেন। আমাদের মহাকবি মাইকেল মধুসূদন অক্ষরবৃত্ত ছন্দে লিখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন।


No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.