সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে শুরু হয়েছে বিজ্ঞান উৎসব-২০২২
অলিম্পিয়াডে অংশ নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা |
‘বিজ্ঞানমনস্ক মানবজাতি, রুখবে ভবিষ্যৎ অতিমারি' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সেন্ট গ্রেগরী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে শুরু হয়েছে ১৩তম তীর পেজেন্টস এসজিএইচএসসি বিজ্ঞান উৎসব-২০২২। শনিবার সকাল নটায় জেনারেল সাইন্স অলিম্পিয়াডের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠেছে এ বিজ্ঞান-উৎসবের।
তীর (সিটি গ্রুপ)-এর সহযোগিতায় আয়োজিত এ বিজ্ঞান উৎসবের আয়োজক গ্রেগরিয়ান সাইন্স ক্লাব। ঢাকার প্রায় ৬৫টি খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এ উৎসবে অংশ নিচ্ছে।
উৎসব আয়োজন সম্পর্কে সেন্ট গ্রেগরী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ব্রাদার ডক্টর লিও জেমস পেরেরা সিএসসি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা সিলেবাসমুখী। সিলেবাসের বাইরে তাদের জানার আগ্রহ কম। অভিভাবকেরাও শুধু ভালো ফলাফল প্রত্যাশা করে থাকেন। এই বিষয়ে আমাদের কাজ করতে হবে ক্লাস পর্যায়ে। শিক্ষার্থীদের সিলেবাসের বাইরে জানার আগ্রহ তৈরি করতে হবে। আমরা পড়াশোনার পাশাপাশি এসব বিষয়ে যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করি। বিজ্ঞান ক্লাবসহ অন্যান্য কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের ভিন্ন দক্ষতা অর্জন করানোর চেষ্টা করি, যেন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি জীবনে বৈচিত্র্য আনতে পারে।’ অর্জিত শিক্ষাকে বাস্তব জীবনে কাজে লাগিয়ে মানবজাতির কল্যাণ সাধন করতে পারে।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘উৎসবে পুরান ঢাকার অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করা হয়, যেন তাদের মধ্যেও বিজ্ঞানমনস্কতা ছড়িয়ে পড়ে। করোনা অতিমারি থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি বিজ্ঞানের কারণে। তাই শিক্ষার্থীদেরও সেই বিজ্ঞানের চেতনা জাগ্রত করতে চাই। যেন ভবিষ্যতে আবার অতিমারি এলে, তারা বিজ্ঞানের মাধ্যমেই মোকাবিলা করতে পারে, সেই ভাবনা শুরু হয়।’
শনিবার আয়োজিত হয়েছে মোট ছয়টি অলিম্পিয়াড—জেনারেল সাইন্স, ম্যাথ, ফিজিকস, কেমিস্ট্রি, বায়োলজি ও আইটি অলিম্পিয়াড। গ্রেগরিয়ান সাইন্স ক্লাবের মডারেটর এবং সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক সুখন চন্দ্র দে জানান, জেনারেল সাইন্স ও ম্যাথ অলিম্পিয়াডে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। এ দুটির প্রতিটিতে অংশ নিয়েছে ৮শরও বেশি শিক্ষার্থী। অন্যান্য অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা গড়ে প্রায় ৫ শ জন।
তিনি আরো জানান, ‘উৎসবে প্রায় সাড়ে তিন শ প্রজেক্টের প্রদর্শনী হবে। আমাদের নিয়মিত কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশ নিচ্ছেন। তারা অর্জন করেছেন সাফল্য। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা জীবনকে ভিন্নভাবে দেখুক।’
আয়োজক কমিটিটির সাথে আলাপ করে জানা যায়, অলিম্পিয়াড দিয়ে শুরু হলেও বিজ্ঞান উৎসবের মূল আয়োজন শুরু হবে ২৩ জুন।
উৎসবের মূল আয়োজন শুরু হবে ২৩ জুন বৃহস্পতিবার। ওই দিন বিকেল ৩টায় মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হবে। এরপর শুরু হবে প্রজেক্ট এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক দেয়াল প্রত্রিকা প্রদশনী। এ প্রদর্শনী চলবে ২৫ জুন পর্যন্ত।
আয়োজক কিমিটির সাথে কথা বলে জানা যায়, উৎসবে থাকছে বিভিন্ন বিষয়ের অলিম্পিয়াড, দুটি ক্যাটাগরির বিজ্ঞান প্রজেক্ট ডিসপ্লে, বিজ্ঞানভিত্তিক দেয়ালিকা এবং সব শেষে সাইন্স ফিকশন মুভি প্রদর্শন। এরপর ২৩-২৪ জুন বিজ্ঞান প্রজেক্ট প্রদর্শনী প্রতিযোগিতা ও ২৫ জুন পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে উৎসব শেষ হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান, বিজ্ঞান অনুষদের প্রাক্তন ডিন ও IQAC-এর পরিচালক মো. কামরুল আলম খান। বিজ্ঞান উৎসবে প্রদর্শিত প্রজেক্টগুলো মূল্যায়ন করবেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২০ জন শিক্ষক।
২৫ জুন শনিবার পুরস্কার-বিতরণী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিজ্ঞান উৎসবের পর্দা নামবে। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভের রেজিস্টার গ্রেগরিয়ান অধ্যাপক ইফফাত কায়েস চৌধুরী।
উল্লেখ্য, বিজ্ঞান উৎসবে দুটি ক্যাটাগরিতে বয়সভিত্তিক পাঁচটি গ্রুপে ভাগ হয়ে শিক্ষার্থীরা উৎসবে অংশ নিতে পারবে। তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কিডস গ্রুপ, পঞ্চম-ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জুনিয়র গ্রুপ, সপ্তম-অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ইন্টারমিডিয়েট গ্রুপ, নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সিনিয়র গ্রুপ এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কলেজ গ্রুপে অংশগ্রহণ করবে।
তীরের (সিটি গ্রুপ) পৃষ্ঠপোষকতায় এই বিজ্ঞান উৎসবে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে প্রথম আলো।
No comments
Thank you, best of luck