ads

অষ্টম শ্রেণি, বাংলা প্রথম পত্র, কবিতা: নারী; কাজী নজরুল ইসলাম

কবি-পরিচিতি:
নাম কাজী নজরুল ইসলাম।



জন্ম পরিচয় জন্ম তারিখ : ২৪শে মে, ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দ (১১ই জ্যৈষ্ঠ, ১৩০৬ বঙ্গাব্দ); জন্মস্থান : বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রাম।

পিতৃ ও মাতৃ পরিচয় পিতার নাম : কাজী ফকির আহমদ; মাতার নাম : জাহেদা খাতুন।

শিক্ষাজীবন প্রাথমিক শিক্ষা : গ্রামের মক্তব থেকে প্রাথমিক শিক্ষালাভ।

মাধ্যমিক : প্রথমে রানীগঞ্জের সিয়ারসোল রাজ স্কুল, পরে মাথরুন উচ্চ ইংরেজি স্কুল, সর্বশেষ ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের দরিরামপুর স্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন।

কর্মজীবন/পেশা প্রথম জীবনে জীবিকার তাগিদে তিনি কবিদলে, রুটির দোকানে এবং সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছিলেন। পরবর্তীতে পত্রিকা সম্পাদনা, গ্রামোফোন রেকর্ডের ব্যবসায় ও সাহিত্য সাধনা করেন।

সাহিত্য সাধনা কাব্যগ্রন্থ : অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশী, ভাঙার গান, সাম্যবাদী, সর্বহারা, ফণি-মনসা, জিঞ্জির, সন্ধ্যা, প্রলয়-শিখা, দোলন-চাঁপা, ছায়ানট, সিন্ধু-হিন্দোল, চক্রবাক। উপন্যাস : বাঁধনহারা, মৃত্যুক্ষুধা, কুহেলিকা। গল্পগ্রন্থ : ব্যথার দান, রিক্তের বেদন, শিউলিমালা। নাটক : ঝিলিমিলি, আলেয়া, মধুমালা, পুতুলের বিয়ে। প্রবন্ধগ্রন্থ : যুগবাণী, দুর্দিনের যাত্রী, রাজবন্দীর জবানবন্দী, রুদ্র মঙ্গল। জীবনীগ্রন্থ : মরুভাস্কর [হযরত মুহাম্মদ (স)-এর জীবনীগ্রন্থ] অনুবাদ : রুবাইয়াত-ই-হাফিজ, রুবাইয়াত-ই-ওমর খৈয়াম। গানের সংকলন : বুলবুল, চোখের চাতক, চন্দ্রবিন্দু, নজরুলগীতিকা, সুরলিপি, গানের মালা। সম্পাদিত পত্রিকা : ধূমকেতু, লাঙ্গল, দৈনিক নবযুগ।

পুরস্কার ও সম্মাননা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ এবং ভারত সরকার প্রদত্ত ‘পদ্মভূষণ’ উপাধি লাভ। রবীন্দ্রভারতী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে ডি. লিট ডিগ্রি (১৯৭৪) প্রদান করে। তাছাড়া ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ সরকার কবিকে ‘একুশে পদক’ প্রদান এবং জাতীয় কবির মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করে।

জীবনাবসান মৃত্যু তারিখ : ২৯শে আগস্ট, ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দ (১২ ভাদ্র, ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ); সমাধিস্থান : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ।

উৎস নির্দেশ ‘নারী’ কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলামের ‘সাম্যবাদী’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত।

বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর

১. কাজী নজরুল ইসলাম কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?

ক ১৯১৯ খ ১৯৭২

গ ১৯৭৫ ১৯৭৬

২. বীরের স্মৃতিস্তম্ভের গায়ে কোনটি লেখা নেই?

ক বোনের সেবা নারীর সিঁথির সিঁদুর

গ ভগ্নির আত্মত্যাগ ঘ বধূদের আত্মত্যাগ

৩. ‘পীড়ন করিলে সে পীড়ন এসে পীড়া দেবে তোমাকেই’- চরণটির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ প্রবাদবাক্য-

র. ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয়

রর. যেমন কর্ম তেমন ফল

ররর. মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন

নিচের কোনটি সঠিক?

র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

গণসংগীত শিল্পী কাঙালিনী সুফিয়া জীবিকার তাগিদে কোদাল-টুকরি নিয়ে পুরুষ শ্রমিকদের সাথে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে মাটি কাটেন। দিন শেষে মজুরি নিতে গিয়ে দেখেন পুরুষ শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে দু-শ টাকা আর তাকে দেওয়া হলো একশ টাকা। এর কারণ জিজ্ঞেস করলে মালিক বলে- এটাই নিয়ম!

৪. বিজ্ঞাপিত উদ্দীপকটির সাথে ‘নারী’ কবিতার ভাবগত ঐক্যের দিকটি হলো-

র. বৈষম্য রর. শোষণ ররর. সাম্য

নিচের কোনটি সঠিক?

র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

৫. উদ্দীপকের ভাব নিচের কোন চরণে প্রকাশ পেয়েছে?

ক অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর

কত নারী দিল সিঁথির সিঁদুর লেখা নাই তার পাশে

গ বেদনার যুগ, মানুষের যুগ, সাম্যের যুগ আজি

ঘ কোনো কালে এক হয়নি কো জয়ী পুরুষের তরবারি

৬. “জগৎ জুড়িয়া একজাতি আছে সে জাতির নাম মানুষ জাতি”- পঙক্তিদ্বয়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ নিচের কোন পঙক্তিটি?

র. আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী ভেদাভেদ নাই

রর. অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর

ররর. প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে বিজয়-লক্ষ্মী নারী

নিচের কোনটি সঠিক?

˜ র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

৭. উদ্দীপকে প্রকাশ পেয়েছে-

ক জাতীয়তাবাদ

˜ সাম্যবাদ

গ ন্যায়বিচার

ঘ বর্ণবাদ

৮. ‘নারী’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত?

ক বিষের বাঁশী

খ অগ্নিবীণা

˜ সাম্যবাদী

ঘ সর্বহারা

নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৯ ও ১০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

“তরুলতা যেমন বৃষ্টির সাহায্য প্রার্থী

মেঘও সেইরূপ তরুর সাহায্য চায়।”

৯. উদ্দীপকে ফুটে ওঠা দিকটি কোন কবিতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ?

ক বঙ্গভূমির প্রতি ˜ নারী গ দুইবিঘা জমি ঘ নদীর স্বপ্ন

১০. সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি কোন চরণে ফুটে উঠেছে?

˜ কোনোকালে একা হয়নিকো জয়ী পুরুষের তরবারি

খ আমি তোর লাগি ফিরেছি বিবাগী গৃহহারা সুখহীন

গ মধুহীন করো না গো তব মমঃকোকনদে

ঘ পায়ে পড়ি মাঝি, সাথে নিয়ে চলো মোরে আর ছোকানুরে

নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১১ ও ১২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

মুসা ইব্রাহিম আমাদের এভারেস্ট বিজয়ী প্রথম বাঙালি। স্ত্রী তাহুরার অনুপ্রেরণাই তাকে সফলতার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে বলে তিনি মনে করেন, বরফের সুউচ্চ চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা উড়ান।

১১. পরের উদ্দীপকের কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘নারী’ কবিতার কোন ভাবটি প্রাসঙ্গিক?

ক নারীর সাহসিকতা খ নারীর আত্মত্যাগ

গ নারীর বেদনা ˜ নারীর অনুপ্রেরণা

১২. মুসা ইব্রাহিম এবং কবি নজরুল ইসলামের অনুভূতির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ চরণ/চরণগুলো হলো-

র. অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর

রর. প্রেরণা দিয়াছে শক্তি দিয়াছে বিজয়-লক্ষ্মী নারী

ররর. পীড়ন করিলে সে পীড়ন এসে পীড়া দেবে তোমাকেই

নিচের কোনটি সঠিক?

ক র খ রর ˜ র ও রর ঘ র, রর ও ররর

১৩. কাজী নজরুল ইসলাম কত বছর বয়সে কঠিন রোগে আক্রান্ত হন?

ক ৪১ ˜ ৪৩ গ ৪৫ ঘ ৪৭

১৪. পুরুষের তরবারি ছাড়াও বিজয়ের সাথে যুক্ত হয়েছে-

র. নাারীর ভালোবাসা রর. নারীর প্রেরণা

ররর. নারীর শক্তি

নিচের কোনটি সঠিক?

ক র খ র ও রর ˜ রর ও ররর ঘ ররর

১৫. সে যুগ হয়েছে ‘বাসি’ এখানে বাসি বলতে

ক দাস খ সাহেব গ মুক্ত ঘ গোলাম

[বি.দ্র. : সঠিক উত্তর নেই]

১৬. কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?

ক জনকণ্ঠ খ সওগাত বিজলী ঘ যুগান্তর

১৭. কাজী নজরুল ইসলাম তার লেখায় কোন শব্দের ব্যবহারে কুশলতা দেখিয়েছেন?

আরবি-ফারসি খ ফারসি-উর্দু

গ হিন্দি-ইংরেজি ঘ আরবি-হিন্দি

১৮. কত খ্রিষ্টাব্দে কাজী নজরুল ইসলামকে ঢাকায় এনে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়?

ক ১৯৭১ ১৯৭২ গ ১৯৭৩ ঘ ১৯৭৬

১৯. নারী কোথায় সিঁথির সিঁদুর দিল?

ক পীড়নে খ অভিযানে গ সাম্যে রণে

২০. ‘নারী’ কবিতায় কবি কীসের ডঙ্কা বেজে ওঠার কথা বলেছেন?

ক নারীর বিজয় লাভের খ পুরুষ শাসনের অবসানের

গ নারীর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার নারী-পুরুষের সমতার

২১. “আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই”-চরণটিতে কবি কাজী নজরুল ইসলামের কোন দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পেয়েছে?

সাম্যবাদী মানসিকতা খ অসাম্প্রদায়িক চেতনা

গ দায়িত্ববোধ ঘ অধিকার চেতনা

সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর

কবি-পরিচিতি

২২. কাজী নজরুল ইসলাম কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?

ক ১৮৯০ ১৮৯৯ গ ১৯০০ ঘ ১৯০১

২৩. কাজী নজরুল ইসলাম কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন?

বর্ধমান খ যশোর গ বরিশাল ঘ নাটোর

২৪. কাজী নজরুল ইসলাম কোন শ্রেণির ছাত্র থাকাকালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়?

ক সপ্তম খ অষ্টম গ নবম দশম

২৫. যুদ্ধ থেকে ফিরে নজরুল কীসে আত্মনিয়োগ করেন?

ক পড়ালেখায় সাহিত্যচর্চায় গ চাকরিতে ঘ অভিনয়ে

২৬. নজরুল তার লেখায় কীসের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ করেন?

ক মিথ্যার বিরুদ্ধে শোষণের বিরুদ্ধে

গ পাপের বিরুদ্ধে ঘ পরিশ্রমের বিরুদ্ধে

২৭. কত সালে বাঙালি পল্টন ভেঙে দেওয়া হয়?

ক ১৯১৭ খ ১৯১৮ ১৯১৯ ঘ ১৯২০

২৮. ‘বিজলী’ কোন ধরনের পত্রিকা?

ক দৈনিক সাপ্তাহিক গ মাসিক ঘ ত্রৈমাসিক

২৯. কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা কোন সালে জন্মগ্রহণ করেন?

১৩০৬ খ ১৩০৮ গ ১৩১০ ঘ ১৩১২

৩০. কাজী নজরুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করেন কত তারিখে?

ক ৭ই আগস্ট খ ৮ই আগস্ট গ ২৮শে আগস্ট ২৯শে আগস্ট

৩১. কাজী নজরুলের রচনাবলির অন্যতম বৈশিষ্ট্য কী?

অসাম্প্রদায়িক চেতনা

খ ফ্রয়েডীয় তত্ত্ব

গ পুনর্জন্মবাদ

ঘ মার্কসবাদ

৩২. কাজী নজরুল ইসলাম ইসলামি গান ও গজল লিখেছিলেন কোন ভাষায়?

ক আরবি

খ ফারসি

বাংলা

ঘ ইংরেজি

৩৩. কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যসাধনায় ছেদ ঘটে কেন?

ক পারিবারিক চাপের কারণে কঠিন রোগের কারণে

গ দেশ ত্যাগের কারণে ঘ অর্থকষ্টের কারণে

মূলপাঠ

৩৪. বেদনার যুগ, মানুষের যুগ আর কীসের যুগ আজি?

ক অভিযানের সাম্যের গ দাসত্বের ঘ নারীর

৩৫. পুরুষ দাস ছিল না কেন?

ক নারীশাসিত সমাজ থাকায় পুরুষশাসিত সমাজ থাকায়

গ বীর হওয়ায় ঘ পুরুষ শক্তিশালী হওয়ায়

৩৬. নারী মুক্তি না পেলে পুরুষ কোথায় ভুগে মুরবে?

নিজের তৈরি কারাগারে খ নিজের তৈরি হাসপাতালে

গ নিজের তৈরি ঘরে ঘ নিজের তৈরি গুহায়

৩৭. যুগের ধর্ম কী?

ক কাউকে পীড়ন করলে সুখ আসে কাউকে পীড়ন করলে পীড়ন আসে

গ পুরুষের অবস্থার পরিবর্তন হয় ঘ নারীর অবস্থার পরিবর্তন হয়

৩৮. ‘যেকোনো কল্যাণকর সৃষ্টিতে নারীর অবদান কতটুকু?

ক দ্বিগুণ খ তিনগুণ অর্ধেক ঘ পুরোটাই

৩৯. বিশ্বের বড় বড় জয় এবং অভিযান কাদের ত্যাগে সাফল্য লাভ করেছে?

ক পিতা, ভাই ও বন্ধুদের মাতা, ভগ্নি ও বধূদের

গ ছেলে, পিতা ও চাচার ঘ ভাই, দাদা, নানার

৪০. বিশ্বের মহান ও কল্যাণকর কিছু সৃষ্টিতে অবদান কাদের?

নর-নারী খ শিক্ষক ছাত্রের গ সেবক-কর্মী ঘ কুলি-মজুর

৪১. ইতিহাসে কার অবদানের কথা লিপিবদ্ধ হয়েছে?

ক মায়ের খ বোনের গ বধূদের পুরুষের

৪২. ‘নারী’ কবিতায় বর্ণিত সে যুগে দাস ছিল কে?

ক পুরুষ নারী গ মাতা ঘ ভগ্নি

৪৩. ডঙ্কা বেজে উঠছে কেন?

ক ফলাফলের আনন্দে মুক্তির আনন্দে

গ সৃষ্টির আনন্দে ঘ স্বস্তির আনন্দে

৪৪. ‘বিজয়-লক্ষ্মী’- এখানে কবি কাকে লক্ষ্মী হিসেবে কল্পনা করেছেন?

ক লক্ষ্মী দেবীকে খ সরস্বতী দেবীকে

গ দুর্গাকে ˜ নারীকে

৪৫. ‘সাম্যের গান গাই বলতে’- কবি কী বুঝিয়েছেন?

ক নারীর জন্য সমঅধিকার খ পুরুষের জন্য সমঅধিকার

গ শিশুর জন্য সমঅধিকার ˜ সকলের জন্য সমঅধিকার

৪৬. ‘কেহ রহিবে না বন্দী কাহারও’- এখানে বন্দী হিসেবে কার কথা ইঙ্গিত করা হয়েছে?

নারীর খ বীরের গ নরের ঘ আসামির

৪৭. ‘নারী’ কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম কার সঙ্গে নারীকে তুলনা করেছেন?

নরের সঙ্গে খ মানবের সঙ্গে

গ শিশুর সঙ্গে ঘ জš§ভূমির সঙ্গে

৪৮. ‘সে যুগ হয়েছে বাসি এখানে’, ‘বাসি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গত হওয়া খ ফিরে আসা গ পুরনো হওয়া ঘ নষ্ট হওয়া

৪৯. ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট আতিকুর রহমান তার মায়ের প্রেরণায় আজ উঁচু স্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছেন ও জয়লাভ করেছেন। ‘নারী’ কবিতা অনুসারে তার মাকে তুলনা করা যায় কী হিসেবে?

ক সৌহার্দের দেবী হিসেবে বিজয়-লক্ষ্মী নারী হিসেবে

গ শক্তির দেবী হিসেবে ঘ শান্তির প্রতীক হিসেবে

৫০. ব্রিটেনের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মহিলা জজের নাম ব্যারিস্টার আঞ্জুমান আরা।- তার সঙ্গে ‘নারী’ কবিতার কোন বিষয়টি যুক্তিযুক্ত?

নারীর ক্ষমতায়ন খ নারীর মর্যাদা

গ নারীর অবদান ঘ নারীর ব্যর্থতা

৫১. বিদ্যালয়ের কোহিনুর আপা অন্য পুরুষ শিক্ষকদের মতোই পরিশ্রম করেন। ‘কোহিনুর আপার’ কাজকে নজরুলের কোন কবিতায় মূল্যায়ন করা হয়েছে?

ক আগমনী খ ধূমকেতু নারী ঘ সাম্যবাদ

৫২. নরের অবদানের ইতিহাস লেখা হলেও নারীর অবদানের ইতিহাস লেখা হয়নি কেন?

নারীকে অবমূল্যায়নের জন্য খ নারীর উদাসীনতার জন্য

গ নারীর অবদান কম থাকার জন্য ঘ নারীর দুর্বলতার জন্য

৫৩. কোন কবির চোখে পুরুষ-রমণী ভেদাভেদহীন?

ক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর খ বুদ্ধদেব বসু

কাজী নজরুল ইসলাম ঘ জসীমউদ্দীন

৫৪. ‘আসমা বেগম একজন পোশাক শ্রমিক। তিনি অন্যান্য পুরুষ সহকর্মীর সমান কাজ করলেও বেতন কম পান। এতে নারী কবিতার কোন দিকটি প্রকাশিত হয়েছে?

বৈষম্য খ শোষণ গ সাম্য ঘ রীতিনীত

৫৫. আজগর সাহেব নর ও নারী উভয়ের সমান অধিকারে বিশ্বাসী। তার মনোভাবের সাথে মিল রয়েছে কোন কবির মনোভাবের?

ক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাজী নজরুল ইসলামের

গ ফররুখ আহমদ ঘ আহসান হাবীবের

৫৬. কাজী নজরুল ইসলাম কোথায় মৃত্যুবরণ করেন?

ঢাকায় খ কলকাতায় গ পাকিস্তানে ঘ দিল্লিতে

৫৭. কোন যুগ বাসি হয়েছে?

ক যে যুগে পুরুষ দাস ছিল যে যুগে নারী দাসী ছিল

গ যে যুগে মানুষ দাস ছিল ঘ যে যুগে দাসিরা বঞ্চিত ছিল

৫৮. নজরুল ইসলামের ‘নারী’ কবিতাটিতে নারীকে বিজয়-লক্ষ্মী বলা হয়েছে কেন?

ক অত্যধিক শক্তির আধার বলে

নারীদের প্রেরণায় বিজয় এসেছে বলে

গ নারীরা পুরুষের অর্ধেক বলে

ঘ নারীরা দেবীর সমতুল্য বলে

৫৯. পৃথিবীতে মানবসভ্যতা নির্মাণে প্রয়োজন কোনটি?

ক নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা নারী ও পুরুষের সমান অধিকার

গ নারীর অগ্রাধিকার ঘ পুরুষের অধিকার কমানো

শব্দার্থ ও টীকা

৬০. ‘পীড়ন’ শব্দের অর্থ কী?

ক আনন্দ খ দুঃখ গ বেদনা অত্যাচার

৬১. ‘মহীয়ান’ শব্দের অর্থ কী?

সুমহান খ সুমতি গ সুশোভন ঘ সুসাহিত্যিক

৬২. ‘রণ’ শব্দটি ‘নারী’ কবিতায় কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?

ক বিদ্রোহ যুদ্ধ গ সংহতি ঘ রংবাজ

পাঠ-পরিচিতি

৬৩. কবি নজরুল ইসলাম ‘নর-নারী’ উভয়কেই কী হিসেবে দেখেন?

ক সহযাত্রী খ সমকক্ষ মানুষ ঘ বন্ধু

৬৪. ‘নারী’ কবিতার ভাবের প্রধান বাহন কী?

ক শ্রেণিসংগ্রাম খ বৈষম্য ˜ সাম্য ঘ শোষণ

৬৫. ‘নারী’ কবিতার শিক্ষণীয় বিষয় কী?

ক নারীর প্রতি একাগ্র হওয়া নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া

গ নারীর প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া ঘ নারীর প্রতি কোমল হওয়া

৬৬. ‘নারী’ কবিতাটির কবির নাম কী?

ক জসীমউদ্দীন কাজী নজরুল ইসলাম

গ আহসান হাবীব ঘ সুফিয়া কামাল

বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর

কবি-পরিচিতি

৬৭. কাজী নজরুল ইসলামের রচনাবলির বৈশিষ্ট্য হলো

র. অবিচার ও শোষণের বিরোধিতা

রর. পরাধীনতা ও অন্যায়ে প্রতিবাদী সত্তা

ররর. অসাম্প্রদায়িক চেতনা

নিচের কোনটি সঠিক?

ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর

৬৮. কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন

র. সাম্যবাদী কবি রর. পল্লিকবি

ররর. বিদ্রোহী কবি

নিচের কোনটি সঠিক?

ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

৬৯. কাজী নজরুল ইসলামের অবদান রয়েছে

র. সংগীতে রর. প্রবন্ধে ররর. গল্পে

নিচের কোনটি সঠিক?

ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর

মূলপাঠ

৭০. কবি ‘নারী’ কবিতায় সাম্যের গান গেয়েছেন, কারণ

র. তার কাছে নর-নারী ভেদাভেদহীন

রর. নারীকে মানুষ হিসেবে দেখতে চান

ররর. তিনি নারীর অবদানের মূল্যায়ন চান

নিচের কোনটি সঠিক?

ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর

৭১. ‘নর যদি রাখে নারীরে বন্দি’ তাহলে যা হবে

র. পুরুষ পাপের ফল ভোগ করবে

রর. পুরুষ বিজয়ী হবে

ররর. পুরুষ কারাগারে ভুগে মরবে

নিচের কোনটি সঠিক?

ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

৭২. ‘নারী’ কবিতায় সাম্যের যুগ’ বলতে বোঝানো হয়েছে

র. শোষণহীন যুগ রর. সমঅধিকারের যুগ

ররর. ধনী-গরিবের যুগ

নিচের কোনটি সঠিক?

র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

৭৩. বিশ্বে মাতা, ভগ্নী ও বধূদের ত্যাগের ফলে-

র. বড় বড় জয় নিশ্চিত হয় রর. বড় বড় অভিযান সম্পন্ন হয়

ররর. বড় বড় কার্যাবলি গতিশীল হয়

নিচের কোনটি সঠিক?

র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

৭৪. বিশ্বে নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলাফল হলো-

র. সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রর. উন্নত মানবসভ্যতা

ররর. উন্নত সংস্কৃতি

নিচের কোনটি সঠিক?

র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

৭৫. বীরের স্মৃতিস্তম্ভের গায়ে লেখা নেই

র. বোনের সেবার কথা

রর. ভাইয়ের বীরত্বের কথা

ররর. মায়ের মমতা ও ত্যাগের কথা

নিচের কোনটি সঠিক?

ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

শব্দার্থ ও টীকা

৭৬. ‘নারী’ কবিতায় সাম্য শব্দটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে

র. সমতা রর. সকলের জন্য সমঅধিকার

ররর. সাম্য ও মৈত্রী

নিচের কোনটি সঠিক?

র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

৭৭. ‘পীড়া’ বলতে বোঝায়

র. যন্ত্রণা রর. বেদনা ররর. শারীরিক কষ্ট প্রদান

নিচের কোনটি সঠিক?

র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

পাঠ-পরিচিতি

৭৮. নারী-পুরুষকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে-

র. সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য রর. উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য

ররর. দ্বীধাহীন ভবিষ্যতের জন্য

নিচের কোনটি সঠিক?

র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

৭৯. এখন দিন এসেছে সমঅধিকারের। তাই

র. নারীর ওপর নির্যাতন চলবে না রর. নারীর অধিকার ক্ষুণœ করা চলবে না

ররর. নারীর শিক্ষাগ্রহণ চলবে না

নিচের কোনটি সঠিক?

র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

৮০. ‘নারী’ কবিতায় কবি আস্থা রেখেছেন

র. নারীর অধিকারে রর. পুরুষের অধিকারে

ররর. নর ও নারীর সমঅধিকারে

নিচের কোনটি সঠিক?

ক র খ রর ররর ঘ র, রর ও ররর

অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর

নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৮১ ও ৮২নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

শহিদ জননী জাহানারা ইমাম তার স্নেহের পুত্র রুমীকে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে উৎসর্গ করেছেন। রুমীর স্মৃতি তার বুককে হাহাকারে ভরিয়ে দেয়। এমন অসংখ্য নারীর পুত্র, স্বামী ও ভাই যুদ্ধে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। তারা বুকভরা যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছে। সেসব বীরের কথা ইতিহাসে লেখা হলেও এসব নারীর কথা ইতিহাসে লেখা নেই।

৮১. উদ্দীপকের সাথে ‘নারী’ কবিতার সামঞ্জস্যপূর্ণ চরণ হলো-

র. মাতা, ভগ্নি ও বধূদের ত্যাগে হইয়াছে মহীয়ান

রর. কেহ রহিবে না বন্দি কাহারও, উঠছে ডঙ্কা বাজি

ররর. কত নারী দিল সিঁথির সিঁদুর, লেখা নাই তার পাশে

নিচের কোনটি সঠিক?

ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

৮২. উদ্দীপকে ‘নারী’ কবিতার যে বিষয়টি মূর্ত হয়ে উঠেছে-

র. জগতের বড় বড় জয় নারীদের ত্যাগে মহীয়ান হয়েছে

রর. মায়েরা হৃদয়ভরা মমতা দিয়ে বীরদের উৎসাহিত করেছে

ররর. বিশ্বের চিরকল্যাণকর জিনিস পুরুষদের ত্যাগেই এসেছে

নিচের কোনটি সঠিক?

˜ র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৮৩ ও ৮৪নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নোয়াখালী সদর হাসপাতালের নার্স আমিনা মল্লিক সকল নার্সকে একত্রিত করে মুক্তিযোদ্ধাদের গোপন ক্যাম্পে যোগ দেয়। তারা হানাদারদের ক্যাম্প থেকে ওষুধ লুট করে এনে অস্থায়ী হাসপাতাল গড়ে তোলে। তারা প্রায় ছয় মাস অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার সেবা করেছে। এরপর এসেছে স্বাধীনতা।

৮৩. উদ্দীপকে ‘নারী’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে?

˜ বড় বড় জয়ে নারীদের অবদান

খ নারীর প্রেরণায় পুরুষ এগিয়ে গেছে

গ সাম্যের যুগে নারীদের মুক্তির আকাক্সক্ষা

ঘ নারীরা দাসী হিসেবে পুরুষদের সেবা করছে

৮৪. উদ্দীপকে নারীদের যে রূপটি প্রকাশ পেয়েছে-

র. মমতাময়ী রর. সেবাপরায়ণা

ররর. প্রেরণাদাত্রী

নিচের কোনটি সঠিক?

ক র ˜ রর গ ররর ঘ র, রর ও ররর

নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৮৫ ও ৮৬নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

প্রফেসর আফসারি সমাজে নর ও নারীকে সমান দৃষ্টিতে দেখেন। তিনি সমাজে নরের পাশাপাশি নারীর অবদান সম্পর্কে তার ছাত্রছাত্রীদের জ্ঞান দান করেন। তিনি নারীকে বিজয়-লক্ষ্মী বলে আখ্যা দেন।

৮৫. প্রফেসর আফসারির দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে যে কবির দৃষ্টিভঙ্গির সাদৃশ্য লক্ষণীয়-

র. কাজী নজরুল ইসলামের রর. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের

ররর. আহসান হাবীবের

নিচের কোনটি সঠিক?

র খ রর গ ররর ঘ র, রর ও ররর

৮৬. প্রফেসর আফসারি নারীকে বিজয়-লক্ষ্মী বলেছেন কেন?

নারীর প্রেরণায় বিজয় সংঘটিত হয় বলে

খ নারীর শক্তিতে বিজয় সংঘটিত হয় বলে

গ নারীর কর্মে বিজয় সংঘটিত হয় বলে

ঘ নারীর বুদ্ধিতে বিজয় সংঘটিত হয় বলে

নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৮৭ ও ৮৮নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

বর্তমান সভ্য সমাজেও নারীর সামাজিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। পুরুষতান্ত্রিক এ সমাজে শত শত নারীকে আত্মাহুতি দিতে হয় পারিবারিক শোষণ, নির্যাতন আর বৈষম্যের কারণে।

৮৭. নারীর এ করুণ অবস্থার জন্য দায়ী কোনটি?

পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা খ নারীর প্রতিভা বিকাশে অনীহা

গ নারীর প্রতিভার অভাব ঘ পুরুষের উদার আনুক‚ল্য

৮৮. উদ্দীপকটিতে ‘নারী’ কবিতার ভাবগত মিলের দিক হচ্ছে

র. নারীর প্রতি অবিচার রর. নারীর ওপর শোষণ-নির্যাতন

ররর. নারীর প্রতি বৈষম্য

নিচের কোনটি সঠিক?

ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর


সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর


প্রশ্ন -১ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

আনোয়ারা নামটি এখন টক অব দ্যা কান্ট্রি। একজন নারী হয়ে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ করেছেন। সম্প্রতি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মতো বিশাল কর্মযজ্ঞ তিনি কৃতিত্বের সাথে সমাপ্ত করেছেন। রিটার্নিং অফিসার হিসেবে তিনি অন্য পুরুষ সহকর্মীদের কাছ থেকে যথাযথ সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছেন। নারী বলে কোথাও তাকে সমস্যায় পড়তে হয়নি।

ক. ‘নারী’ কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলামের কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত? ১

খ. কবি বর্তমান সময়কে ‘বেদনার যুগ’ বলতে কী বুঝিয়েছেন? ২

গ. আনোয়ারার কার্যক্রমে ‘নারী’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তার বর্ণনা দাও। ৩

ঘ.উদ্দীপকে কবি কাজী নজরুল ইসলামের অনুভূতির প্রতিফলন ঘটলেও ‘নারী’ কবিতায় কবি আরও বেশি বাঙ্ময়- বক্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। ৪

১নং প্রশ্নের উত্তর

ক. ‘নারী’ কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলামের ‘সাম্যবাদী’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত।

খ. বর্তমান সময়েও নারীকে যথাযথ মূল্যায়ন না করার জন্য বর্তমান সময়কে কবি বেদনার যুগ বলেছেন।

এমন একটা সময় ছিল যখন নারীরা ছিলেন অবরোধবাসিনী এবং নারীদের সাথে দাসীর মতো আচরণ করা হতো। তাদের ওপর চালানো হতো অমানবিক নির্যাতন। তবে সে যুগ অনেকদিন আগে শেষ হলেও কর্তৃত্বহীন সংকীর্ণমনা পুরুষদের মানসিক অবস্থার কারণে শিক্ষা ও সচেতনতার এই যুগেও নারীসমাজের যথার্থ মূল্যায়ন হয়নি। তারা এখনো নির্যাতিত ও অবহেলিত। বর্তমান যুগেও নারীরা শত অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করে পুরুষের পাশাপাশি সমানতালে অবদান রেখে চললেও আমাদের সংকীর্ণমনা পুরুষ সমাজের কাছে এটা খুবই বেদনাদায়ক। তাদের এই দুরবস্থা দেখেই কবি এ যুগকে বেদনার যুগ বলেছেন।

গ. আনোয়ারার কার্যক্রমে ‘নারী’ কবিতায় বর্ণিত নারী-পুরুষের পাশাপাশি অবস্থান ও অবদানের দিকটি ফুটে উঠেছে।

‘নারী’ কবিতায় নারীর অধিকার ও সভ্যতার অগ্রগতিতে পুরুষের পাশাপাশি তাদের অবদানের কথা বলা হয়েছে। সাম্যবাদী কবি কাজী নজরুল ইসলাম নরনারী উভয়কেই একই স্রষ্টার সৃষ্টি মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন। তার মতে, পৃথিবীতে মানবসভ্যতা নির্মাণে নারী ও পুরুষের সমান অবদান রয়েছে।

উদ্দীপকে আনোয়ারার কার্যক্রমেও ‘নারী’ কবিতার এ দিকটিই ফুটে উঠেছে। তিনি জাতিসংঘসহ বিশ্বের নানা দেশে নির্বাচন সংক্রান্ত সকল কাজ কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন। রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নির্বাচনের গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশেও এ কাজে সহযোগিতাও পেয়েছেন পুরুষ সহকর্মীদের কাছ থেকে আশানুরূপভাবে। নারী বলে ভয়ে তিনি দায়িত্ব থেকে পিছিয়ে আসেননি। কোথাও তাকে সমস্যায়ও পড়তে হয়নি। ‘নারী’ কবিতায় কবি নারী-পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার এমন প্রত্যাশাই ব্যক্ত করেছেন।

ঘ. উদ্দীপকে কাজী নজরুল ইসলামের অনুভূতির প্রতিফলন ঘটলেও ‘নারী’ কবিতায় নারীর অধিকার ও অবদানের কথা আরও গুরুত্বের সঙ্গে চিত্রিত হয়েছে।

কবি কাজী নজরুল ইসলাম ‘নারী’ কবিতায় নারীর অবদানের নানা দিক তুলে ধরে দেখিয়েছেন কোনো বিচারেই পুরুষের চেয়ে পিছিয়ে ছিল না নারী, আজও পিছিয়ে নেই। তার মতে, পৃথিবীতে মানবসভ্যতা নির্মাণে নারী ও পুরুষের অবদান সমান। বিশ্বে মানুষের শাশ্বত কল্যাণে যা কিছু সৃষ্টি হয়েছে, তার অর্ধেক করেছে নারী আর অর্ধেক করেছে পুরুষ।

উদ্দীপকে আনোয়ারা নামে একজন নারীর কৃতিত্বের মধ্যদিয়ে কবিতায় বর্ণিত কবির বক্তব্যের একটি অংশের ছায়া পড়েছে মাত্র। তিনি নারী হয়েও জাতিসংঘসহ বিশ্বের নানা দেশে নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ করেছেন। সম্প্রতি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কর্মযজ্ঞ তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে শেষ করেছেন। রিটার্নিং অফিসার হিসেবে তিনি অন্য পুরুষ সহকর্মীদের কাছ থেকে যথাযথ সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছেন। নারী বলে কোথাও তাকে সমস্যায় পড়তে হয়নি। সকলের সহযোগিতায় আনোয়ারার দায়িত্ব পালনের দিকটি এখানে উল্লিখিত হলেও ‘নারী’ কবিতায় সভ্যতায় নারীর অবদান সম্পর্কে কবির বক্তব্য আরও বেশি বাঙ্ময়।

সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকে কবি কাজী নজরুল ইসলামের অনুভূতির প্রতিফলন ঘটলেও ‘নারী’ কবিতায় কবি আরও বেশি বাঙ্ময়।

প্রশ্ন -২ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

জনৈক সমালোচকের মতে- ব্রিটিশ ভারতে বঙ্গীয় মুসলমান নারীসমাজ ছিল অজ্ঞতা, কুসংস্কার ও ধর্মীয় বিধিনিষেধের নিগড়ে আবদ্ধ। নিরক্ষরতা, অশিক্ষা ও সামাজিক ভেদ-বুদ্ধিও ছিল তাদের জন্য নিয়তির মতো সত্য। অবরুদ্ধ জীবনযাপনে অভ্যস্ত এক অসহায় জীবে তারা পরিণত হয়েছিলেন। এদেরকে আলোর জগতে আনার জন্য রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তার বক্তব্য- ‘আমরা সমাজেরই অর্ধাঙ্গ। আমরা পড়িয়া থাকিলে সমাজ উঠিবে কীভাবে? কোনো এক পা বাঁধিয়া রাখিলে সে খোঁড়াইয়া কতদূর চলিবে? পুরুষের স্বার্থ এবং আমাদের স্বার্থ ভিন্ন নহে একই।’

ক. কাজী নজরুল ইসলামকে কত সালে এ দেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয়? ১

খ. ‘সাম্যের গান’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? ২

গ. জনৈক সমালোচকের মতটি ‘নারী’ কবিতার কোন দিকটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ- ব্যাখ্যা কর। ৩

ঘ.‘বেগম রোকেয়ার বক্তব্য যেন কাজী নজরুল ইসলামের ‘নারী’ কবিতারই প্রতিধ্বনি’ উক্তিটি মূল্যায়ন কর। ৪

২নং প্রশ্নের উত্তর

ক. কাজী নজরুল ইসলামকে ১৯৭২ সালে এদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয়।

খ. ‘সাম্যের গান’ বলতে কবি নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বুঝিয়েছেন।

‘সাম্য’ অর্থ সমতা। অর্থাৎ সবার জন্য সমান অধিকার। কাজী নজরুল ইসলাম সাম্যবাদী কবি। তার দৃষ্টিতে নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই- সবাই সমান। সাম্যবাদী কবি নর ও নারী উভয়কে মানুষ হিসেবে দেখেন। তিনি জগতে নর ও নারীর সাম্য বা সমান অধিকারে আস্থাবান। সাম্যের গান বলতে কবি তাই নারী ও পুরুষের এ সমান অধিকারের কথা বুঝিয়েছেন।

গ. জনৈক সমালোচকের মতটি ‘নারী’ কবিতায় বর্ণিত সমাজব্যবস্থার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

‘নারী’ কবিতায় কবি দেখিয়েছেন সভ্যতা নির্মাণে নারী ও পুরুষের অবদান সমান হলেও নারীর অবদান সমাজে স্বীকৃত নয়। পুরুষের আত্মত্যাগ যেভাবে ইতিহাসে বর্ণিত হয়েছে নারীদের আত্মত্যাগের কথা সেভাবে বর্ণিত হয়নি। পুরুষরা নানা ভাবে নারীদের অত্যাচার করে। তাদের চোখে নারী মানে দাসী। তাই নারীকে তারা সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রেখেছে।

উদ্দীপকে ব্রিটিশ ভারতে বঙ্গীয় মুসলিম সমাজের অবস্থা বর্ণিত হয়েছে। অজ্ঞতা, কুসংস্কার ও ধর্মীয় বিধি-নিষেধের নিগড়ে আবদ্ধ ছিল তৎকালীন সমাজ। নিরক্ষরতা, অশিক্ষা ও সামাজিক ভেদবুদ্ধিও ছিল তাদের জন্য নিয়তির মতো সত্য। অবরুদ্ধ জীবনযাপনে নারীরা অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছিল। ‘নারী’ কবিতায়ও নারীদের এ বন্দি নিগৃহীত জীবনযাপন চিত্রিত হয়েছে। ‘নারী’ কবিতার এই দিকটিই উদ্দীপকের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ. “বেগম রোকেয়ার বক্তব্য যেন কাজী নজরুল ইসলামের ‘নারী’ কবিতারই প্রতিধ্বনি।”উক্তিটি যথার্থ।

‘নারী’ কবিতায় সাম্যবাদী কবি নরনারী উভয়কেই মানুষ হিসেবে দেখেন। তিনি জগতে নর ও নারীর সাম্য বা সমান অধিকারে আস্থাবান। তার মতে, পৃথিবীতে মানবসভ্যতা নির্মাণে নারী ও পুরুষের অবদান সমান। নারীকে বাদ দিয়ে সমাজের উন্নতি সম্ভব নয়। তাই তাদেরকে অধিকার বঞ্চিত না করে যথাযথ সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে, নারী-পুরুষ সবাইকে সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রচনা করতে হবে সম্মিলিতভাবে।

একইভাবে উদ্দীপকে দেখা যায়, বেগম রোকেয়া নারীদেরকে সমাজের অর্ধাঙ্গ বলেছেন। তিনি বলেছেন নারীকে পিছিয়ে রেখে সমাজ কখনো সামনে যেতে পারে না। নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই সমাজের উন্নতি সম্ভব। তাই তিনি সমাজের উন্নয়নে নারী ও পুরুষের অভিন্ন স্বার্থ সম্পর্কে সমাজকে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন।

কাজী নজরুল ইসলামের ‘নারী’ কবিতার মতো বেগম রোকেয়ার বক্তব্যেও নারী ও পুরুষের সাম্য বা সমান অধিকারের বিষয়টি ফুটে উঠেছে। তাছাড়া উভয়ের বক্তব্যে, সামগ্রিক উন্নয়নে নারী ও পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিষয়টি সম্পর্কে জোরালো যুক্তি উত্থাপিত হয়েছে। তাই বলা যায়, বেগম রোকেয়ার বক্তব্য কাজী নজরুল ইসলামের কথারই প্রতিধ্বনি।

প্রশ্ন -৩ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ঠিকাদার মোশাররফ পুরুষ শ্রমিকদেরকে ১৫০ টাকা করে মজুরি দিলেও নারীশ্রমিক ৩ জনকে দিলেন ১২০ টাকা করে। এই বৈষম্য মেনে নিতে পারে না নারীশ্রমিক সুফিয়া। হতাশ কণ্ঠে সে বলে ওঠে, “এইডা আবার কোন বিচার”।

ক. ‘নারী’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত? ১

খ. ‘নর যদি রাখে নারী বন্দী, তবে এর পরযুগে

আপনারি রচা ঐ কারাগারে পুরুষ মরিবে ভুগে’- বুঝিয়ে লেখ। ২

গ. উদ্দীপকে ‘নারী’ কবিতার প্রতিফলিত দিকটি ব্যাখ্যা কর। ৩

ঘ.“মূলভাব এক হলেও উদ্দীপকের চেয়ে ‘নারী’ কবিতার বিষয়বস্তু ব্যাপক”- মন্তব্যটি সঠিক কিনা বিচার কর। ৪

৩নং প্রশ্নের উত্তর

ক. ‘নারী’ কবিতাটি সাম্যবাদী কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত।

খ. নর যদি রাখে নারী বন্দি, তবে এর পর যুগে আপনারি রচিত ঐ কারাগারে পুরুষ মরিবে ভুগে- কবিতাটির দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, এ যুগে যদি পুরুষরা নারীদের জন্য কারাগার রচনা করে, তবে পরবর্তীতে সেই কারাগারেই পুরুষরা ভুগবে।

আলোচ্য লাইনে ‘কারাগার’ দ্বারা অধিকার হরণকে বোঝানো হয়েছে। বর্তমান যুগ সাম্যের যুগ। এ যুগে পূর্বের মতো যদি পুরুষরা আবারো নারীদের অধিকার ক্ষুণœ করে, তবে পরবর্তী যুগে পুরুষরাও অধিকার হারাবে। কারণ এটাই যুগের নিয়ম।

গ. উদ্দীপকের ‘নারী’ কবিতায় নারীদের অবমূল্যায়নের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।

মানবসভ্যতার অগ্রগতি ও বিকাশে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও সমান অবদান রয়েছে। কাজী নজরুল ইসলামের ‘নারী’ কবিতার বিভিন্ন পঙ্ক্তিতেও এ বিষয়ে স্পষ্ট উচ্চারণ রয়েছে। কিন্তু যে সম্মান ও অধিকার নারীরা পাওয়ার যোগ্য সে সমম্মান ও অধিকার নারীরা এখন পর্যন্ত পায় না।

উদ্দীপকে নারীদের বঞ্চনার একটি স্পষ্ট চিত্র ফুটে উঠেছে। জীবন ও জীবিকার তাগিদে নারীশ্রমিক সুফিয়া মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কাজ করেন। কিন্তু দিন শেষে পুরুষের সমান পারিশ্রমিক পান না। তাই সুফিয়াদের কণ্ঠ থেকেও নিঃসৃত হয়- “এইডা আবার কোন বিচার”। মানবসভ্যতার বিনির্মাণে নারী-পুরুষের সমান অবদান। ইতিহাসে পুরুষের অবদান যতটা মোটা দাগে লেখা হয়েছে, বিজয়-লক্ষ্মী নারীর ক্ষেত্রে ততটা নয়। তাই বলা যায়, নারীদের অবমূল্যায়নের দিকটি উদ্দীপক এবং ‘নারী’ কবিতায় সমানভাবে ফুটে উঠেছে।

ঘ. উদ্দীপকের মূলভাব নারীদের অবমূল্যায়নের বিষয়টি বিবেচনায় আনলেও ‘নারী’ কবিতার বিষয়বস্তু বিশাল ও বিস্তৃত।

সমাজজীবনে নারীরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। এ যেন এক নিয়মিত চিত্র। পুরুষ প্রভুরা নারীদের সমাজের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছে। ধর্মীয় শাসননীতি প্রয়োগ করে তাদের গৃহবন্দি করে রেখেছে। যার ফলাফল অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের সমাজ ও দেশ পিছিয়ে পড়েছে।

‘নারী’ কবিতায় এবং উদ্দীপকে অধিকারবঞ্চিত নারীদের কথা তুলে ধরা হয়েছে। উদ্দীপকে দেখা যায় সুফিয়া পুরুষের সাথে সমান তালে কাজ করেও তাদের সমান পারিশ্রমিক পান না। ‘নারী’ কবিতায়ও নারীর এই বঞ্চনার দিকটি সমানভাবে উঠে এসেছে। তবে কবিতায় আরও বিভিন্ন দিকের সমাবেশ ঘটেছে।

‘নারী’ কবিতায় কবি বলেছেন, পৃথিবীর মানবসভ্যতা নির্মাণে নারী-পুরুষের সমান অবদান। ইতিহাসে পুরুষের অবদান যতটা লেখা হয়েছে নারীদের অবদান ততটা লেখা হয়নি। এখন দিন এসেছে সমঅধিকারের। তাই নারীর উপর আর নির্যাতন চালানো চলবে না, তাঁর অধিকার ক্ষুণœ করা যাবে না। কবিতার এই প্রতিবাদের দিকটি উদ্দীপকে সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। এসব দিক বিবেচনায় বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

প্রশ্ন -৪ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

মনোয়ারা একজন নারী হয়ে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ করেছেন। সম্প্রতি সিটি কর্পোরেশনের মতো বিশাল কর্মযজ্ঞ তিনি কৃতিত্বের সাথে সমাপ্ত করেছেন। নারী হলেও তিনি কোনো সমস্যায় পড়েননি।

ক. ‘নারী’ কবিতাটি কে লিখেছেন? ১

খ. কবি বর্তমান সময়কে ‘বেদনার যুগ’ বলতে কী বুঝিয়েছেন? ২

গ. মনোয়ারার কার্যক্রমে ‘নারী’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর। ৩

ঘ.“উদ্দীপকে কবির অনুভূতির প্রতিফলন ঘটলেও ‘নারী’ কবিতায় কবি আরও বেশি ব্যঞ্জনাময়”বক্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। ৪

৪নং প্রশ্নের উত্তর

ক. ‘নারী’ কবিতাটির লেখক কাজী নজরুল ইসলাম।

খ. ১ নং অনুশীলনী প্রশ্নের ‘খ’ নং উত্তর দ্রষ্টব্য।

গ. ১ নং অনুশীলনী প্রশ্নের ‘গ’ নং উত্তর দ্রষ্টব্য। (শুধুমাত্র আনোয়ারার স্থলে মনোয়ারা নামটি পরিবর্তন করলেই হবে)

ঘ. ১ নং অনুশীলনী প্রশ্নের ‘ঘ’ নং দ্রষ্টব্য (শুধুমাত্র আনোয়ারার স্থলে মনোয়ারা বসালেই হবে) বোর্ড বই প্রশ্নের ‘ঘ’-এ বাঙ্ময় ও যশোর বোর্ড প্রশ্নের ‘ব্যঞ্জনাময়’ শব্দটি একই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

প্রশ্ন -৫ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

রিকশাচালক রমিজের একার আয়ে সংসার চলে না বলে স্ত্রী আকলিমা অন্যের বাসাবাড়িতে কাজ করে যা পায় তা দিয়ে সংসারে সহযোগিতা করে। তাদের বড় মেয়ে রেবেকার বিয়ের প্রস্তাব আসলে রমিজ বলে- ‘এ ব্যাপারে আমার স্ত্রীর মতামত নিতে হবে’।

ক. ‘নারী’ কবিতাটি কোন কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে? ১

খ. ‘সে যুগ হয়েছে বাসি’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ২

গ. উদ্দীপকের রমিজ যে কারণে স্ত্রীর মতামতকে গুরুত্ব দিয়েছে তা ‘নারী’ কবিতার আলোকে ব্যাখ্যা কর। ৩

ঘ.“উদ্দীপকের মূল বক্তব্যে কাজী নজরুল ইসলামের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি ফুটে উঠেছে”- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। ৪

৫নং প্রশ্নের উত্তর

ক. ‘নারী’ কবিতাটি ‘সাম্যবাদী’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।

খ. নারীকে অবমাননা করার যুগ বাসি হয়েছে।

আমাদের পুরুষশাসিত সমাজে নারীরা চিরকাল দুর্বল, অবহেলিত। নারীদেরকে সবসময় অবহেলা গঞ্জনার শিকার হতে হয়। নারী অবমাননার সেই যুগের অবসান হয়েছে। নারীরা আজ বুঝতে শিখেছে। কবি কাজী নজরুল ইসলাম আলোচ্য অংশে এই কথা বোঝাতে চেয়েছেন।

গ. সংসারে স্বামী-স্ত্রীর সমান অধিকার এই বিবেচনায় রমিজ তার স্ত্রীর মতামতকে গুরুত্ব দিয়েছে।

‘নারী’ কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম নর ও নারীর সাম্য ও সমান অধিকারের কথা বলেছেন। নারী-পুরুষের যৌথ অবদানে সভ্যতার বিকাশ সাধিত হয়েছে। নারীর অবদান বা নারীর অংশগ্রহণ ছাড়া পুরষ কোনো কাজে উন্নতি করতে পারেনি। পৃথিবীর সকল কাজে নারীর পদচি‎হ্ন রয়েছে। বিশেষ করে সংসারজীবনে নারীর অবদান অপরিসীম।

উদ্দীপকের রমিজ সাহেব রিকশাচালক। তার স্ত্রী আকলিমা অন্যের বাসা বাড়িতে কাজ করে সংসারে অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করে। রেবেকা তাদের বড় মেয়ে। রেবেকার বিয়ের প্রস্তাব এলে রমিজ সাহেব একা কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না। সে তার স্ত্রী আকলিমার মতামত নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। এখানে ‘নারী’ কবিতার মূল বিষয় সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের বিষয়টি ফুটে উঠেছে।

ঘ. ‘উদ্দীপকের মূল বক্তব্যে কাজী নজরুল ইসলামের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি ফুটে উঠেছে’- উক্তিটি সত্য।

‘নারী’ কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলামের ‘সাম্যবাদী’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত। সাম্যবাদী কবি ‘নর-নারী’ উভয়কেই মানুষ হিসেবে দেখেন। তিনি জগতে নর ও নারীর সাম্য বা সমান অধিকারে আস্থাবান। তার মতে, পৃথিবীতে মানবসভ্যতা নির্মাণে নারী ও পুরুষের অবদান সমান। নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণে সংসারজীবন সুন্দরভাবে গড়ে ওঠে।

উদ্দীপকে রিকশাচালক রমিজের স্ত্রী আকলিমা অন্যের বাসাবাড়িতে কাজ করে। বাসাবাড়িতে কাজ করে আকলিম যে অর্থ পায় তা দিয়ে সংসারের কাজে রমিজকে সাহায্য করে। বড় মেয়ে রেবেকার বিয়ের প্রস্তাব এলে রমিজ আকলিমার মতামত গ্রহণে আগ্রহী হয়। সংসারে স্বামী-স্ত্রীর সমান অধিকারের কথা ভেবে সে তার স্ত্রীর মতামত নিতে চায়।

উদ্দীপকের মূলবক্তব্যে আমরা দেখি কাজী নজরুল ইসলামের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি। রমিজের সংসারে অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করে তার স্ত্রী। আবার রমিজ সংসারের সকল গুরুত্বপূর্ণ কাজে স্ত্রীর মতামত গ্রহণ করেন। কাজী নজরুল ইসলামের ‘নারী’ কবিতার মূল বক্তব্যই হচ্ছে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার বাস্তবায়ন।

প্রশ্ন -৬ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

লোকগীতি শিল্পী কাঙালিনী সুফিয়া জীবিকার তাগিদে কোদাল-টুকরি নিয়ে পুরুষ শ্রমিকদের সাথে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে মাটি কাটেন। দিন-শেষে মজুরি মেলে দুই শত টাকা, কিন্তু পুরুষ শ্রমিক পান তিন শত টাকা। হায়রে, এ কেমন আইন? মালিকপক্ষকে জিজ্ঞাসা করলে উত্তর পান এটাই নিয়ম, এটাই আইন।

ক. ‘নারী’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত? ১

খ. ইতিহাসে পুরুষের অবদান যতটা লেখা হয়েছে, নারীর অবদান ততটা লেখা হয়নি কেন? ২

গ. উদ্দীপকের ভাবের সাথে কীভাবে ‘নারী’ কবিতার ভাবার্থ সাদৃশ্যপূর্ণ, তা ব্যাখ্যা কর। ৩

ঘ.“উদ্দীপকটি ‘নারী’ কবিতার একটি খণ্ডচিত্র মাত্র” মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর। ৪

৬নং প্রশ্নের উত্তর

ক. ‘নারী’ কবিতাটি ‘সাম্যবাদী’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত।

খ. ইতিহাসে পুরুষের অবদান যতটা লেখা হয়েছে, নারীর অবদান ততটা লেখা হয়নি পুরুষশাসিত সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিগত সীমাবদ্ধতার কারণে।

মানবসভ্যতা নির্মাণে নারী ও পুরুষের অবদান সমান। পুরুষদের মতো অতটা প্রত্যক্ষ সংগ্রামে নারীরা লিপ্ত হতে না পারলেও তারা নিভৃতে পুরুষদের সেবা ও সহযোগিতা করে এসেছেন। পুরুষের ন্যায় তারাও অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। কিন্তু কর্তৃত্বহীন সংকীর্ণমনা পুরুষদের মানসিক দাসত্বের কারণে নারীদের সেই ত্যাগ ইতিহাসে আশ্রয় পায়নি।

গ. উদ্দীপকের ভাবে প্রতি বৈষম্যমূলক নীতি বর্ণিত হয়েছে যা ‘নারী’ কবিতার ভাবার্থের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নতির স্বার্থে নারী তার যোগ্যতার প্রমাণ রাখলেও আমাদের পুরুষশাসিত সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি নারীর যথার্থ মর্যাদা প্রদানে আজও দ্বিধান্বিত। কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর ‘নারী’ কবিতায় নানা উদাহরণের সাহায্যে নারীর অবদান তুলে ধরেছেন। সুযোগ পেলেই নারীরা তাদের যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন নানা ভাবে।

উদ্দীপকেও নারীর কাজের প্রতি বিরূপ মনোভাব ব্যক্ত হয়েছে। কাঙালিনী সুফিয়া কোদাল-টুকরি নিয়ে সারাদিন পুরুষ শ্রমিকদের সমান কাজ করলেও মজুরি পায় কম এবং মালিকপক্ষকে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে এটাই নিয়ম, এটাই আইন। পুরুষ সমাজ নারীর শ্রমকে অস্বীকার করে তাকে কম মজুরি দেয় এবং তাকে অমর্যাদা করে।

উদ্দীপকের এই ভাবের সাথেই ‘নারী’ কবিতার ভাবার্থ সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ. “উদ্দীপকটি ‘নারী’ কবিতার একটি খণ্ডচিত্র মাত্র” মন্তব্যটি যথার্থ।

‘নারী’ কবিতায় কবি দেখিয়েছেন নারী সমাজেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। মানবসভ্যতার অগ্রগতিতে পুরুষের তুলনায় নারীর অবদান কোনো অংশেই কম নয়। কিন্তু নারীকে তার প্রাপ্য মর্যাদা সমাজ কখনই দেয়নি। নারীর প্রতি বৈষম্য বিলোপ করে তাকে তাই পুরুষের সমমর্যাদা দিতে হবে। সমাজ গঠনে নারীর গুরুত্ব অনুধাবন করে তাকে তার প্রাপ্য অধিকার বুঝিয়ে দেয়াটাই এখন সময়ের দাবি। নারী-পুরুষের সমঅধিকারের নিশ্চয়তা প্রদানের এই বলিষ্ঠ আহŸান ‘নারী’ কবিতায় উচ্চারিত হলেও উদ্দীপকে তেমন কোনো ভাবনার প্রতিফলন নেই।

উদ্দীপকে নারীর শ্রমকে অবহেলার চোখে দেখা হয়েছে। তাই কাঙালিনী সুফিয়া সারাদিন কোদাল-টুকরি নিয়ে পুরুষের সমান পরিশ্রম করলেও মজুরি পায় কম এবং মালিকপক্ষ জানায় এটাই নিয়ম। অর্থাৎ উদ্দীপকে শুধু নারীর শ্রমের অবমূল্যায়নের দিকটি প্রকাশ পেয়েছে, কবিতার অন্যান্য বিষয় এখানে অনুপস্থিত।

‘নারী’ কবিতায় মানবসভ্যতার ইতিহাসে নারীর অবদানকে ছোট করে দেখার পাশাপাশি নারীর অধিকার সম্পর্কে কবির সজাগ দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটেছে। উদ্দীপকে শুধু পুরুষসমাজ কর্তৃক নারীর শ্রমের যথার্থ মূল্য না পাওয়ার দিকটি ব্যক্ত হলেও নারীর অধিকার রক্ষার

ব্যাপারে কোনো আশাবাদ ব্যক্ত হয়নি। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘নারী’ কবিতার একটি খণ্ডচিত্র মাত্র।


প্রশ্ন -৭ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

পৃথিবীতে যে জীবন প্রবাহ চলছে, তা মূলত নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রয়াসের ফলাফল। নারী ছাড়া পুরুষ যেমন নিরর্থক, পুরুষ ছাড়াও নারী তেমনি মূল্যহীন। অর্থাৎ নারী-পুরুষ উভয়েই সমঅধিকারী। শারীরিক কাঠামো বা কার্যক্ষেত্রের পার্থক্যের কারণে পুরুষরা যদি নারীদেরকে অবজ্ঞা করে বা অক্ষম ভাবে, তবে সেটা নিতান্তই মূর্খতার পরিচয়। কারণ, বিশ্বের সব সৃষ্টির মূলে পুরুষের পাশাপাশি নারীর প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ অবদান রয়েছে।

ক. ‘কত নারী দিল সিঁথির সিঁদুর’ কথাটির অর্থ হলো- অসংখ্যা নারী স্বামীকে হারিয়েছে। ১

খ. কবির চোখে নারী-পুরুষে ভেদাভেদ না থাকার কারণ দেখাও। ২

গ. উদ্দীপকে ‘নারী’ কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩

ঘ.দেখাও যে, উদ্দীপকের ভাববস্তু ও ‘নারী’ কবিতার ভাববস্তুর আদর্শের অনুসারী। ৪

৭নং প্রশ্নের উত্তর

ক. কত নারী দিল সিঁথির সিঁদুর কথাটির অর্থ হলো- অসংখ্যা নারী স্বামীকে হারিয়েছে।

খ. পৃথিবীতে কল্যাণকর যা কিছু সৃষ্টি হয়েছে, তাতে নারী-পুরুষের সমান অধিকার। এ কারণেই কবির চোখে নারী-পুরুষে কোনো ভেদাভেদ নেই।

কবি বলেছেন যে, নারী আর পুরুষ মিলেই বিশ্বের সবকিছু সৃষ্টি করেছে। এই পৃথিবীতে কল্যাণকর অনেক কিছু সৃষ্টি হয়েছে, নারীরা এককভাবে তা সৃষ্টি করতে পারেনি এবং শুধু পুরুষের দ্বারাও তা সম্ভব হয়নি। মূলত নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রয়াসের দ্বারাই পৃথিবী এত সুন্দররূপে সজ্জিত হয়েছে। এ কারণেই কবির চোখে নারী-পুরুষে কোনো ভেদাভেদ নেই।

গ. ‘নারী’ কবিতায় কবি মানব সভ্যতার অগ্রগতি সাধনে নারী-পুরুষের সমান অবদানের কথা উদ্দীপকে প্রকাশ পেয়েছে।

‘নারী’ কবিতায় কবি সাম্যের গান গেয়েছেন, কবির চোখে নারী-পুরুষে কোনো ভেদাভেদ নাই। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই মানুষ। পৃথিবীতে সবার সমান অবদান ও অধিকার রয়েছে। কারণ, কল্যাণকর যতকিছু এ পর্যন্ত পৃথিবীতে হয়েছে তার অর্ধেক সৃষ্টি করেছে নারী এবং অর্ধেক নর। পৃথিবীতে বড় বড় যত অভিযান আজ পর্যন্ত হয়েছে তার মধ্যেও নারীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অবদান রয়েছে। নারীর প্রেরণা ছাড়া পুরুষের তরবারি কখনই জয়ের সন্ধান পায়নি।

উদ্দীপকেও সৃষ্টিশীলতার বিষয়ে আলোচনায় নারী-পুরুষের সাম্য প্রকাশ পেয়েছে। আজকের পৃথিবীতে যে ব্যস্ত জীবনের প্রবাহ চলছে, তা নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রয়াসের ফলাফল। পৃথিবীর বুকে নারী ছাড়া পুরুষের জীবন অপূর্ণ, আর পুরুষ ছাড়া নারীর জীবনও নিরর্থক। অর্থাৎ নারী-পুরুষ পরস্পরের পরিপূরক। নারী-পুরুষ পৃথিবীতে সমান তাৎপর্যের অধিকারী। তাই বলা যায় যে, ‘নারী’ কবিতায় নারীর যে অবদানের কথা বলা হয়েছে উদ্দীপকেও তা ফুটে উঠেছে।

ঘ. উদ্দীপকের লেখক ও ‘নারী’ কবিতার কবি একই আদর্শের অনুসারী।

এই পৃথিবী এক বিরাট চারণ ক্ষেত্র এবং নরনারী নির্বিশেষে এই পৃথিবীর রক্ষক ও কালক্রমে উত্তরাধিকারী। এক্ষেত্রে নারী অথবা পুরুষ যদি কার্যক্ষেত্রে সক্রিয় না হয়, তবে কালক্রমে পৃথিবী নির্জীব হয়ে পড়বে। অর্থাৎ সংসার, সমাজে বা রাষ্ট্র সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য নারী-পুরুষ সবার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। উদ্দীপক ও নারী কবিতায় এ বিষয় প্রকাশ পেয়েছে।

বর্তমান পৃথিবীর জীবনপ্রবাহ ও এতে নারীর সক্রিয় ভূমিকা উদ্দীপকে আলোচিত হয়েছে। মূলত পৃথিবীর জীবনধারা নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলাফল। নারী ছাড়া পৃথিবীর পুরুষ যেমন নিরর্থক, তেমনি পুরুষ ছাড়া নারীরাও অর্থহীন। কিন্তু নারীদের শারীরিক কাঠামো বা সামাজিক অবস্থানের ভিত্তিতে কেউ যদি নারীকে অবহেলা করে তবে সেটা প্রকৃতই মূর্খতার পরিচয়। কারণ পৃথিবীতে পুরুষ-নারীর সমান অবদান রয়েছে। নারী কবিতায় এই ভাবেরই প্রতিফলন লক্ষ করা যায়।

‘নারী’ কবিতায় কবি সাম্যের বাণী রচনা করেছেন, কবির চোখে নারী-পুরুষের কোনো ভেদাভেদ নাই। কারণ এই বিশ্বে কল্যাণকর যা কিছু সৃষ্টি হয়েছে, তার অর্ধেক পুরুষ এনেছে। আর বাকি অর্ধেক এনেছে নারী। পাশাপাশি পাপ-তাপ যা কিছু এসেছে, তার জন্যও নারী-পুরুষ সমান অপরাধী। ইতিহাসে অদ্যাবধি তত জয়ের পাতা রচিত হয়েছে, তা মূলত নারীদের ত্যাগে মহীয়ান। কখনই নারী ছাড়া পুরুষ একা জয়লাভ করেনি। সুতরাং সাম্যবাদের আলোচনার নিরিখে বলা যায় যে, উদ্দীপকের ভাববস্তু ও ‘নারী’ কবিতার ভাববস্তু একই আদর্শের অনুসারী।

প্রশ্ন -৮ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

আমিনা আদিলের সংসারে এসেছে দশ বছর আগে। আমিনা মনে করত সংসার মানে পূর্ণতার জীবন। কিন্তু আদিলের সংসারে এসে তার সব ধারণা পাল্টে গেছে। কারণ, আদিলের সংসারে আমিনা শুধু কষ্ট করেছে আর বিনিময়ে কষ্টই পেয়েছে। সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে। কিন্তু সে পরিশ্রমে সমবেদনার পরিবর্তে লাঞ্ছনা জোটে। সংসারে কখনই তার মতামত প্রাধান্য পায় না। ফলে জীবনের প্রতি আমিনার সৃষ্টি হয়েছে চরম তিক্ততা।

ক. নরের বীরত্বের কথা কোথায় লেখা আছে? ১

খ. কবি বর্তমান সময়কে মানুষের যুগ বলেছেন কেন? ২

গ. উদ্দীপকে ‘নারী’ কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩

ঘ.উদ্দীপকের ভাবার্থ ‘নারী’ কবিতার সমগ্র ভাবকে ধারণ করে না মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর। ৪

৮নং প্রশ্নের উত্তর

ক. নরের বীরত্বের কথা ইতিহাসে লেখা আছে।

খ. কবি বর্তমান সময়কে ‘মানুষের যুগ’ বলেছেন, কারণ এখন কোনো লিঙ্গভেদের সময় নয়, নারী-পুরুষ সবাই মানুষ।

নারী ও পুরুষের যে পার্থক্য, তা প্রচাীন যুগ থেকেই ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। নারীরা অবহেলিত, লাঞ্ছিত। তারা সঠিক মর্যাদা ও অধিকার পায় না। ‘নারী’ বলে তাদের অপবাদ দেয়া হয়। কবি এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠে সোচ্চার। তিনি এই প্রাচীন ভেদাভেদ ঘোচাতে বর্তমানকে নারী বা পুরুষের সময় না বলে ‘মানুষের যুগ’ বলেছেন। কারণ নারী বা পুরুষ- সবাই সমান।

গ. উদ্দীপকে ‘নারী’ কবিতায় নারীদের প্রতি পুরুষের বৈষম্যমূলক আচরণের কথা প্রকাশ পেয়েছে।

অদ্যাবধি পৃথিবীতে যত বড় বড় জয় সাধিত হয়েছে তাতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নারীর অবদান রয়েছে। কিন্তু নারীদের সে অবদান কোনো স্বীকৃতি লাভ করেনি। পৃথিবীতে অনেক নরের স্তম্ভ রয়েছে, কিন্তু তাতে কোনো নারীর নাম অঙ্কিত হয়নি। এর অন্যতম কারণ হলো, আমাদের বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি। আমরা নারীদের সৃজিত কল্যাণ ভোগ করতে প্রস্তুত কিন্তু তার প্রতিদান দিতে বিমুখ।

উদ্দীপকে দেখা যায়, আমিনা ও আদিলের বিয়ে হয়েছে প্রায় দশ বছর আগে। আমিনা মনে করত, সংসার জীবন পূর্ণতার পরিচায়ক। কিন্তু গত দশ বছরে তার সে ধারণার পরিবর্তন হয়েছে। এখন আমিনার কাছে সংসার মানে অসহ্য কোনো কিছু। কারণ, আমিনা সংসারে হাড়ভাঙা খাটুনি খাটে। কিন্তু সে পরিশ্রমের স্বীকৃতি দূরে থাক, আদিলের কাছে আমিনা ন্যূনতম সমবেদনা বা মর্যাদাও পায় না। বরং প্রহার আর উপহাস জোটে নিয়মিত। উদ্দীপকের এ বৈষম্যমূলক দিকটিই ‘নারী’ কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে।

ঘ. “উদ্দীপকটি ‘নারী’ কবিতার সমগ্র ভাব ধারণ করে না”মন্তব্যটি যথার্থ।

‘নারী’ কবিতায় কবি সাম্যের গান গেয়েছেন। কারণ, কবির মতে পৃথিবীতে নারী আর পুরুষের সমান অবদান রয়েছে। অথচ এ কবিতায় কবি এমন এক সমাজের কথা বলেছেন যেখানে পুরুষরা নারীকে বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখত। নারীদের দাসী ভেবে তাদের ওপর নানারকম অত্যাচার করত। পুরুষশাসিত সমাজে পুরুষের নামে গৌরবের ইতিহাস রচিত হলেও নারীর নাম কোথাও লেখা হয়নি। কবির মতে, সে যুগ বাসি হয়ে গেছে, যে যুগে নারীরা দাসী ছিল।

উদ্দীপকে আদিলের সংসারে আমিনার নির্যাতিত হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। আমিনা দাম্পত্য জীবন তথা সংসারকে অনেক পবিত্র দৃষ্টিতে দেখত। কিন্তু আদিলের সংসারে এসে সংসার এখন আমিনার কাছে দুঃস্বপ্নের মতো। কারণ, আদিলের সংসারে সে অনেক পরিশ্রম করেও স্বীকৃতি, সম্মান বা সহানুভূতি কিছুই তার জীবনে জোটেনি। বরং অবহেলা, লাঞ্ছনা আর নির্যাতন নিয়মিত জুটেছে।

‘নারী’ কবিতায় মানবসভ্যতায় নারীর অবদান, নারীর প্রতি পুরুষের বৈষম্যমূলক মনোভাব পূর্বযুগের নারীদের অবস্থান ও বর্তমান তথা আধুনিক যুগে নারীদের জাগরণের কথা প্রকাশ পেয়েছে। আর উদ্দীপকে শুধু নারীর প্রতি পুরুষের বৈষম্যের দিকটি ফুটে উঠেছে, যা ‘নারী’ কবিতার সমগ্র ভাব ধারণ করে না।

প্রশ্ন -৯ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

রাত প্রায় একটা। চারদিকে ঝিঁঝিঁ ডাকা নীরব অন্ধকার। দূরে দু-একটা জোনাকির ঈষৎ ওড়াউড়ি ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না। পরিচিত পথের দিশা ঠিক রেখে অন্ধের মতো হাঁটছে সাবিনা। তার হাতে অনেক খাবারের থলে। দু’হাতে নিতে কষ্ট হয়। তবুও পা টেনে টেনে চলে সাবিনা। লক্ষ্য হলো সামনের পোড়াবাড়ি। গেরিলাদের হাইড আউট। পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে তারা এখানে লুকিয়ে থাকে। এভাবে এক মাস ধরেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাবিনা গেরিলাদের খাদ্য সরবরাহ করেছিল। একসময় দেশ স্বাধীন হলো। যোদ্ধারা খেতাব আর বাহবা পেলেও কারো মুখেই সাবিনার নাম শোনা যায়নি।

ক. কবি কাদেরকে বিজয়-লক্ষ্মী বলেছেন? ১

খ. ‘কোনো কালে একা হয়নি কো জয়ী পুরুষের তরবারি’- ব্যাখ্যা কর। ২

গ. গেরিলাদের খাদ্য সরবরাহ করার মাধ্যমে সাবিনা ‘নারী’ কবিতার কোন ভাবটির প্রতিনিধিত্ব করছে? ব্যাখ্যা কর। ৩

ঘ.উদ্দীপকের শেষের বাক্যটিতে ‘নারী’ কবিতায় প্রকাশিত বৈষম্যের দিকটি প্রকাশ পায় কি? মতের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪

৯নং প্রশ্নের উত্তর

ক. কবি নারীদেরকে বিজয়-ল‏ক্ষ্মী বলেছেন।

খ. ‘কোনো কালে একা হয়নি কো জয়ী পুরুষের তরবারি’- চরণটি দ্বারা বিজয় অর্জনে নারীদের ভূমিকাকে নির্দেশ করা হয়েছে।

পৃথিবীতে অদ্যাবধি অনেক বিজয় অর্জিত হয়েছে। সেসব বিজয়ে আত্মপ্রকাশ পেয়েছে অনেক দিগবিজয়ী বীরের। কিন্তু সে বীরত্বের অন্তরালে লুকিয়ে আছে নারীদের অবদান। মায়ের মমতা, বোনের সেবা আর স্ত্রীর প্রেরণা বলেই পুরুষের তরবারি জয়লাভ করেছে। আলোচ্য চরণ দ্বারা এটাই বোঝানো হয়েছে।

গ. গেরিলাদের খাদ্য সরবরাহ করার মাধ্যমে সাবিনা ‘নারী’ কবিতায় উল্লিখিত কল্যাণকর কাজে নারীর অবদানের বিষয়টির প্রতিনিধিত্ব করছে।

‘নারী’ কবিতায় কবি নারীদের মহান অবদানের কথা ফুটিয়ে তুলেছেন। পৃথিবীর বুকে যে বড় বড় অভিযান আজ পর্যন্ত সংঘটিত হয়েছে, তাতে নারীর অবদান কম নয়। অনেক নারী বিধবা হয়েছে, অনেক মা হয়েছেন সন্তানহারা। অনেক বোন হারিয়েছে তার ভাইকে। তবুও নারীরা থেমে যায়নি। সেবা দিয়ে, সাহস দিয়ে, অনুপ্রেরণা দিয়ে চিরকাল উদ্বুদ্ধ করেছে পুরুষদের। এসব সেবা, সাহস আর অনুপ্রেরণা না পেলে পুরুষের একার দ্বারা কোনো বিজয় অর্জন সম্ভব হতো না।

উদ্দীপকের সাবিনার মধ্যেও এই অবদানের বিষয়টির প্রতিফলন লক্ষ করা যায়। সাবিনা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খাবার নিয়ে যায় গ্রাম থেকে অনেক দূরে যেখানে মুক্তিবাহিনীরা লুকিয়ে থাকে। অনেক দূরে ঝুঁকি নিয়ে, কষ্ট সহ্য করে সাবিনা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খাবার পৌঁছে দেয়। এভাবে একমাস সে রাতের অন্ধকারে খাবার পৌঁছানোর দায়িত্ব পালন করে। অবশেষে দেশ স্বাধীন হয়। দেশের স্বাধীনতায় সাবিনার এ অবদানের মধ্য দিয়ে ‘নারী’ কবিতায় প্রকাশিত কল্যাণকর কাজে নারীর অবদানের বিষয়টিকে ধারণ করেছে।

ঘ. উদ্দীপকের শেষের বাক্যটিতে ‘নারী’ কবিতায় প্রকাশিত বৈষম্যের দিকটি প্রকাশ পায়।

‘নারী’ কবিতায় কবি নারীদের অবদান ও সাহসের দিক ফুটিয়ে তুলেছেন। বিশ্বের কল্যাণে নারীরা পুরুষের সমান অবদান রেখেছেন। অনেক অভিযানে অনেক নারী ত্যাগ স্বীকার করেছেন। কিন্তু ইতিহাসের পাতা শুধু পুরুষের বীরত্বই সাক্ষ্য দেয়। নারীর ত্যাগের স্বীকৃতি দেয় না। কারণ, পুরুষশাসিত সমাজ নারীদেরকে বৈষম্যের দৃষ্টিতে দেখে। তারা নারীদের থেকে গ্রহণ করে কিন্তু কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।

উদ্দীপকের শেষের বাক্যটি হলো- যোদ্ধারা খেতাব আর বাহবা পেলেও কারো মুখে সাবিনার নাম শোনা যায়নি। সাবিনা একজন গ্রাম্য মেয়ে। কিন্তু তার পরিচয়ে যে সাহসের দিকটি ফুটে উঠেছে, তা বীরের বীরত্বের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। নিঝুম রাতে পরিবেশের সব প্রতিক‚লতা স্বীকার করে সে মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার পৌঁছে দিয়েছে। এখানে সাবিনা যদি এ সাহস না দেখাত, তবে অবশ্যই খাবারের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের বের হতে হতো। এতে করে তাদের শত্রæর কাছে ধরা পড়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। মূলত সাবিনার কারণেই তারা এ বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছে।

তাই বলা চলে উদ্দীপকের সাবিনা বিশেষ স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেক মুক্তিযোদ্ধা অনেক স্বীকৃতি লাভ করেছেন অথচ সাবিনার ত্যাগের কথা কোথাও প্রকাশ পায়নি। এতে ‘নারী’ কবিতায় উল্লিখিত পুরুষশাসিত সমাজের বৈষম্যমূলক আচরণেরই বহিঃপ্রকাশ লক্ষ করা যায়।

প্রশ্ন -১০ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

সচ্ছল পরিবারে জন্ম নিয়েও শায়লা শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছিল। অথচ তার এক বছরের বড় ভাইকে কোনো প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হয়নি। বরং উৎসাহ পেয়েছে। নারীর পরম ধর্ম হলো স্বামীর সেবা করা ও সংসারের দায়িত্ব পালন করা- এরূপ মতবাদে বিশ্বাসী শায়লার বাবা তাকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দেয়, তখন শায়লা অষ্টম শ্রেণি পাস করেছে। শত দুঃখে স্বামীর ঘরে এসেও শায়লা থেমে থাকেনি। কঠিন ব্রত নিয়ে পড়াশোনা করে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে। তারপর ভর্তি হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। শায়লা এখন আইনের ছাত্রী। নিজের সাফল্যে সে বুঝতে পেরেছে- ছেলে হোক, মেয়ে হোক- মেধাকে অবহেলা করা পাপের শামিল।

ক. স্মৃতিস্তম্ভ কার জন্য রচিত হয়েছে? ১

খ. ‘বিজয়-লক্ষ্মী নারী’-চরণটি ব্যাখ্যা কর। ২

গ. শায়লার প্রতি তার পরিবারের আচরণে ‘নারী’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩

ঘ.শায়লার কর্মকাণ্ড ও দৃষ্টিভঙ্গি ‘নারী’ কবিতার আলোকে মূল্যায়ন কর। ৪

১০নং প্রশ্নের উত্তর

ক. স্মৃতিস্তম্ভ বীরদের জন্য রচিত হয়েছে।

খ. ‘বিজয়-লক্ষ্মী নারী’- চরণটিতে জয়ের নিয়ন্তা দেবী হিসেবে নারীকে কল্পনা করা হয়েছে।

পুরুষ যে অনুপ্রেরণা, সাহস ও শক্তির বলে বিজয় অর্জন করে তার মূলে রয়েছে নারী। দুঃসময়ে যে সাহস আর সেবা বিশেষ প্রয়োজন, তা আমরা নারীদের কাছেই পেয়ে থাকি। আমরা যারা বিভিন্ন কাজে মেধা ও সাফল্যের পরিচয় দিই, তা মূলত আমাদের মা, বোন আর স্ত্রীদের থেকে প্রাপ্ত সেবা, সাহস আর অনুপ্রেরণার কারণেই সম্ভব হয়।

গ. শায়লার প্রতি তার পরিবারের আচরণে ‘নারী’ কবিতায় নর কর্তৃক নারীর অবহেলার বিষয়টি ফুটে উঠেছে।

‘নারী’ কবিতায় কবি নারীদের প্রতি নরের দৃষ্টিভঙ্গি ফুটিয়ে তুলেছেন। পুরুষ-নারীদের কখনো স্বীকৃতি দিতে চায় না। তারা নারীদেরকে অবজ্ঞা আর অবহেলার দৃষ্টিতে দেখে। ইতিহাসে আজ পর্যন্ত যত বড় বড় অভিযান সংঘটিত হয়েছে, তার কোনোটাতেই নারীর অবদান কম নয়। মায়ের মমতা, বোনের সেবা আর বধূর অনুপ্রেরণার কারণে পুরুষের তরবারি জয়ী হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত নারীর বিজয় ইতিহাস কোথাও লেখা হয় নাই।

উদ্দীপকের শায়লা অবস্থাপন্ন পরিবারের মেয়ে। পড়ালেখায় সে বেশ মেধাবী। কিন্তু অষ্টম শ্রেণি পাস করার পর তার জীবনে প্রতিবন্ধকতা নেমে আসে। শায়লার বাবা মনে করেন, মেয়েদের জন্ম হয়েছে স্বামীর সংসার সাজানোর জন্য। সেই নিমিত্তে শত আপত্তি সত্তে¡ও শায়লাকে বিয়ে করতে হয়। শায়লা শুধু আমাদের সমাজে বা আমাদের পৃথিবীতে নারী বলেই এ প্রতিবন্ধকতায় পড়েছে। শায়লার এক বছরের বড় ভাই দিব্যি পড়াশোনা করছে। পরিবার থেকে তার উপর কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়নি। মূলত শায়লার এ প্রতিবন্ধকতার জন্য আমাদের পুরুষ সমাজের বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গিই দায়ী। ‘নারী’ কবিতার এ দিকটি উদ্দীপকের শায়লার প্রতি তার পরিবারের আচরণে ফুটে উঠেছে।

ঘ. শায়লার কর্মকাণ্ড ও দৃষ্টিভঙ্গি যথার্থ ও প্রশংসার দাবিদার।

‘নারী’ কবিতায় কবি যুগের পরিবর্তনে নারীর জেগে ওঠা অবদানকে তুলে ধরেছেন। এক যুগে নারীরা ছিল পুরুষের কাছে শুধু দাসী। কিন্তু সে যুগ এখন অতীত, আজকের যুগ মানবতার যুগ, সাম্যের যুগ, জেগে ওঠার যুগ। যুগের এ আহŸান নারীদের কানে পৌঁছেছে। তারা অবশ্যই রণভেরির মতো জেগে উঠবে। পৃথিবীতে প্রমাণ করবে নিজেদের মেধা আর সক্ষমতাকে। হাজার বছরের বৈষম্য মুছে যাবে সব জাগরণের কাছে।

উদ্দীপকের শায়লা সচ্ছল পরিবারের মেয়ে। মেধাবী শায়লা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর পরিবারের হীনম্মন্য মানসিকতায় শিকার হয়ে অবশেষে স্বামীর সংসারে প্রবেশ করে। কিন্তু শায়লা থেমে থাকেনি। প্রকৃতপক্ষে জেগে ওঠার চেতনা তাকে থামতে দেয়নি। শত দুঃখ সহ্য করেও সে মেধার স্ফুরণ ঘটিয়েছে। কঠিন ব্রত নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে ভর্তি হয়েছে। শায়লা এখন নিজের অধিকার সম্পর্কে পূর্ণ সচেতন। বাবার বাড়িতে সে যে প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছে, সে প্রতিবন্ধকতাকে শায়লা ঘৃণা করে। তার মতে, ছেলে হোক মেয়ে হোক- মেধাকে অবহেলা করা পাপের শামিল।

উদ্দীপকেও দেখা যায় যে, পরিবার ও সমাজের সমস্ত প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে শায়লা নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। সুতরাং বলা যায় যে, শায়লার কর্মকাণ্ড ও দৃষ্টিভঙ্গি ‘নারী’ কবিতার আলোকে যথার্থ।

প্রশ্ন -১১ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

নিলামওয়ালা : (হাত বাঁধা এক যুবতিকে নির্দেশ করে) আসুন ভাই, কাচের দামে হীরা কিনে নিন। এই সাঁওতাল তাগড়া তরুণী দুই মরদের সমান পরিশ্রম করবে, উদয়াস্ত পরিশ্রম করবে। দাম মাত্র এক হাজার………..এক হাজার………..এক হাজার।

১ম ক্রেতা : বলে কী! এত্তো দাম! ছয়শত টাকা।

২য় ক্রেতা : সাতশত টাকা (বাম হাতে যুবতির গায়ে সজোরে চিমটি কাটবে। যুবতি নির্বাক)

৩য় ক্রেতা : নয়শত টাকা। দেখে তাগড়া মনে হচ্ছে।

নিলামওয়ালা : নয়শত…..এক…..নয়শত দুই…..নয়শত…..

চতুর্থ ক্রেতা : এক হাজার একশত টাকা।

দ্বিতীয় অংশ : বর্তমান যুগ।

ম্যানেজার : আসুন ম্যাডাম, অফিসের প্রথম দিন কেমন লাগছে?

মহিলা : ভালোই তো, চারদিক বেশ ফিট্ফাট।

ম্যানেজার : ম্যাডাম, কাজের কথা বলি। আপাতত আপনার বেতন বিশ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। দুই মাস পর চল্লিশ ভাগ বৃদ্ধি পাবে। আপনি কি সন্তুষ্ট?

মহিলা : ধন্যবাদ।

ক. যে যুগে নারীরা দাসী ছিল, সে যুগ কী হয়েছে? ১

খ. “কেহ রহিবে না বন্দি কাহারও”-চরণটি ব্যাখ্যা কর। ২

গ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশের সঙ্গে ‘নারী’ কবিতার সাদৃশ্য নির্ণয় কর। ৩

ঘ.“উদ্দীপকের প্রথম ও দ্বিতীয় অংশের মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে, ‘নারী’ কবিতায়ও তা প্রকাশ পেয়েছে।”- বিশ্লেষণ কর। ৪

১১নং প্রশ্নের উত্তর

ক. যে যুগে নারীরা দাসী ছিল, সে যুগ বাসি হয়েছে।

খ. “কেহ রহিবে না বন্দি কাহারও”-চরণটি দ্বারা নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা প্রকাশ পেয়েছে।

একসময় নারীরা পুরুষের হাতে নানাদিক থেকে বন্দি ছিল। তারা কখনই কোনো অধিকার আদায় করতে পারেনি, বরং পুরুষের দাসী হয়ে জীবন কাটিয়েছে। কিন্তু বর্তমান যুগ সমঅধিকারের যুগ। এ যুগে প্রত্যেক নারী তার অধিকার আদায় করতে পারবে। অন্য কারও মুখাপেক্ষী হবে না। আলোচ্য চরণ দ্বারা এটাই বোঝানো হয়েছে।

গ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশে বর্তমান যুগে নারী-স্বাধীনতার বিষয়টি ‘নারী’ কবিতায় উল্লিখিত বর্তমান যুগ যে সাম্যের যুগ কবির এ বক্তব্যের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশে বর্তমান যুগের নারীদের স্বাধীনতার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। আর ‘নারী’ কবিতার কবিও বর্তমান যুগকে নারী-পুরুষের সাম্যের যুগ বলেছেন- এখানেই ‘নারী’ কবিতার সঙ্গে উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশের সাদৃশ্য রয়েছে।

উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশে আমরা দেখি, বর্তমান যুগের একজন নারীর সঙ্গে তার অফিসের ম্যানেজারের কথাবার্তা। সেখানে ম্যানেজার নারী সহকর্মীকে সসম্মানে সম্বোধন করে তার খোঁজখবর নেন এবং অফিসে তার বেতন বৃদ্ধির কথাও বলেন। এসব সংলাপে ভেদাভেদহীন সমাজের এবং নারী-পুরুষের পাশাপাশি কাজের চিত্র ফুটে উঠেছে। উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশে বর্তমানের স্বাধীন নারীর যে চিত্র অঙ্কিত হয়েছে, ‘নারী’ কবিতায়ও কবি বর্তমান যুগকে নারীর সমঅধিকার আদায়ের জন্য সাম্যের যুগ বলে অভিহিত করেছেন।

ঘ. উদ্দীপকের প্রথম ও দ্বিতীয় অংশের মধ্যে নারীদের পরাধীনতা ও মূল্যায়নের বিষয়টি ফুটে উঠেছে এবং ‘নারী’ কবিতায়ও কবি নারীদের দাসী অবস্থার কথা তুলে ধরে এবং তা থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলেছেন।

‘নারী’ কবিতায় দেখানো হয়েছে পৃথিবীতে মানবসভ্যতা নির্মাণে নারী ও পুরুষের অবদান সমান। কিন্তু নারীদের সেই স্বীকৃতি দেওয়াই হয়নি; বরং তারা একটা যুগে দাসী হিসেবে গণ্য হতো। কিন্তু কবি বলেছেন, যে যুগে নারীরা দাসী ছিল আজ তা বাসি হয়েছে। বর্তমান যুগ হলো মানুষের যুগ, সাম্যের যুগ। আজ আর কেউ কারও বন্দি বা অধীন থাকবে না।

উদ্দীপকের প্রথম অংশে একজন সাঁওতাল তরুণীকে নিলামে তোলা হয়েছে এবং নিলাম ডাকার সময় ক্রেতাদের আচরণে হীন মানসিকতার প্রকাশ ঘটেছে। তরুণীকে দাসী হিসেবে এক হাজার একশত টাকায় এক ক্রেতা কিনে নেন।


No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.