ads

পুণ্যে পাপে দুঃখে সুখে পতনে উত্থানে। মানুষ হইতে দাও তােমার সন্তানে।

ভাবসম্প্রসারণ: 
প্রকৃত মানুষ হওয়া খুবই কঠিন ও কষ্টকর। এর জন্য কঠোর পরিশ্রম, সাধনা ও ত্যাগ-তিতিক্ষার প্রয়ােজন হয়। নানা বাধা-বিপত্তি ও সমস্যা-জটিলতার সাথে যুদ্ধ করে জীবনকে সফল ও সমৃদ্ধ করতে হয়। সময়ের ঘাত-প্রতিঘাতের কষ্টি পাথরে নিজেকে উত্তীর্ণ করতে পারলেই প্রকৃত মানুষ হওয়া যায়।


জীবন পরিচালনার জন্য শারীরিক ও মানসিক শক্তি ও সামর্থ্য অর্জন করা খুবই জরুরি। কেননা জীবন পুষ্পশয্যা নয়, বরং কলকাকীর্ণ ও সমস্যাময়। চলার পথে পদে পদে নানা প্রতিকূলতা, নানা প্রতিবন্ধকতার মুখােমুখি হতে হয়। এতে আছে অভাব-অনটন, দুঃখদারিদ্র্য, যন্ত্রণ-শােক, উত্থান-পতনের নানা পর্যায়। সেসব পর্যায়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পারলে ব্যর্থতা অনিবার্য। এ ব্যর্থতা। জীবনকে হতাশা ও নিরাশার অন্ধকারে ডুবিয়ে দেয়। ফলে একসময় জীবন হয়ে ওঠে নিরর্থক ও মূল্যহীন। এমন মূল্যহীন জীবন। কারও প্রত্যাশিত নয়। এজন্য যেকোনাে দ্বন্দ্ব-সংঘাত, সমস্যা-জটিলতা, দুঃখ-শােকের মােকাবিলা করে টিকে থাকতে হবে; কিছুতেই ভেঙে পড়লে চলবে না। প্রয়ােজনে নতুন উদ্যমে বিকল্প উপায় বা কৌশল অবলম্বন করে সমস্যা থেকে উত্তীর্ণ হতে হবে। কেননা চলমান জীবনে দুঃখ-কষ্ট আসবেই, বিপদ-আপদ, সমস্যা আসবেই। তাই বলে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না, বরং শক্তি ও মনােবল অটুট রেখে পাপ, দুঃখ ও পতন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য বুদ্ধিদীপ্ত লড়াকু ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। তাহলেই আসবে। কাঙ্ক্ষিত বিজয়, উন্নতি ও সমৃদ্ধি।


অনেকদিন ধরেই লক্ষ করা যাচ্ছে অনেক মা-বাবা এবং অভিভাবক-অভিভাবিকা তাদের সন্তানদের এমনভাবে গড়ে তুলছেন যে ফুলের ঘায়েই মূৰ্ছা যাবে। তারা তাদেরকে দিয়ে কোনাে কাজ করান না, কোথাও পাঠান না। তাহলে সন্তানরা পরিশ্রমী হবে কীভাবে? শিখবে এবং জানবে কীভাবে? তাদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বাড়বে কীভাবে? এমন হলে তারা কষ্ট করতে শিখবে না, দুঃখ সইতে পারবে না, কোনাে সমস্যার মােকাবিলা করতে পারবে না। বই আর ইন্টারনেটের তত্ত্ব আর তথ্য দিয়ে তাে জীবন এগিয়ে নেওয়া যাবে না। তার জন্য সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করতে হবে, হাতে-কলমে শিখতে হবে, কঠিন বাস্তবের মুখােমুখি হতে হবে। তা হলেই তাে তারা সমাজ, দেশ তথা পৃথিবীর উপযােগী মানুষ হয়ে উঠতে পারবে।

এখনকার মানবসমাজে এমন কর্মঠ, সক্রিয়, সচেতন ও বুদ্ধিদীপ্ত মানুষই 'দরকার। বর্তমান এবং নতুন প্রজন্মকে এরকম মানুষ করেই গড়ে তুলতে হবে। যাতে তারা পুণ্য-পাপে, দুঃখে-সুখে, পতনে-উত্থানে হিমালয়ের মতাে মাথা উঁচু রেখে অনায়াসে মােকাবিলা করতে পারে। সেই সাথে হয়ে উঠতে পারে সক্ষম, স্বশিক্ষিত ও গর্বিত মানুষ।


No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.