‘মনীষ, কবির বানীর বিষদ বর্ননা দাও।’ বানান শুদ্ধিকরণে ন-ত্ব বিধান
পতিতপাবন মণ্ডল (পাবন),
বাংলা বিভাগীয় প্রধান,
‘মনীষ, কবির বানীর বিষদ বর্ননা দাও।’
এ বাক্যটিতে কয়টি বানান ভুল আছে?
আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে এখানে মনীষ, বানীর, বিষদ, বর্ননা এ চারটি বানান ভুল আছে।
তবে বিশেষভাবে খেয়াল করলে বোঝা যাবে এখানে মনীষ, বর্ননা এ দুটি বানান ভুল আছে। ‘বানীর’ ও ‘বিষদ’ এদুটি বানান ঠিক তবে এখানে অপপ্রয়োগ হয়েছে। ‘বানীর’ শব্দের অর্থ বেতগাছ (বঞ্জল) আর ‘বিষদ’ শব্দের অর্থ ‘বিষদাতা’। তাহলে বাক্যটিতে কী প্রকাশ করেতে গিয়ে কী প্রকাশিত হয়েছে তা নিশ্চয় বুঝতে পারছি। আসলে বাক্যটির শুদ্ধ রূপ হলো- ‘মনীশ, কবির বাণীর বিশদ বর্ননা দাও। এ আলোচনা কেন?
বানানভুলে যে বাক্যের অর্থ পার্থক্য ঘটতে পারে সেটা আরেকবার অনুধাবন করা।
‘ণ’ এবং ‘ষ’ এর সঠিক ব্যবহারবিধি এ ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা সহায়ক হবে।
তাই আজ থেকে সহজ ভাষায় কয়েকটি পর্বে ‘ণ’ ও ‘ষ’ এর ব্যবহারবিধি আলোচিত হবে।
আজ থাকছে মূর্ধন্য ‘ণ’ ব্যবহারের ৫টি নিয়ম:
তৎসম বা সংস্কৃত শব্দে মূর্ধন্য-‘ণ’ এর ব্যবহার বিধানকে ণ-ত্ব বিধান বলে।
যেমন: ঋণ, তৃণ, হরণ, কারণ, চরণ, ভাষণ, শোষণ, লক্ষণ, লবণ, কল্যাণ ণত্ব-বিধানের
নিয়ম:১
উদাহরণ: ঋণ, ঘৃণা, তৃণ, মসৃণ ইত্যাদি।
ঋ এর পর তৎসম শব্দে মূর্ধন্য-ণ হয়।
নিয়ম-২
উদাহরণ: বরণ, কিরণ, উচ্চারণ, চরণ, বিতরণ, হরণ, জাগরণ, ব্যাকরণ, নিবারণ, উদাহরণ, আমন্ত্রণ, মুদ্রণ, মিশ্রণ, চিত্রণ, শ্রেণি, অর্ণব, কর্ণ, পূর্ণ, দীর্ণ, বর্ণ, শীর্ণ, ঝর্ণা, স্বর্ণ, বর্ণনা, শীর্ণ।
র-এর পর তৎসম শব্দে মূর্ধন্য-ণ হয়।
নিয়ম-৩
উদাহরণ: অন্বেষণ দূষণ, বর্ষণ, ভাষণ, প্রেষণ, আকর্ষণ, ঘর্ষণ, বিশ্লেষণ, ভাষণ, শোষণ, উষ্ণ (ষ্ণ=ষ্+ণ), ক্ষয়িষ্ণু, তৃষ্ণা, কৃষ্ণ, বর্ধিষ্ণু
মূর্ধন্য-‘ষ’ এর পর তৎসম শব্দে মূর্ধন্য ‘ণ’ হয়।
নিয়ম-৪
উদাহরণ: ক্ষণ, শিক্ষণ, রক্ষণ, প্রশিক্ষণ, লক্ষণ, ভক্ষণ
‘ক্ষ’(ক্+ষ)-এর পর তৎসম শব্দে মূর্ধন্য-ণ হয়।
নিয়ম-৫
উদাহরণ: কণ্টক, ঘণ্টা, কণ্ঠ, গুণ্ডা, মণ্ডা, ইত্যাদি
ট-বর্গের বর্ণগুলোর (ট, ঠ, ড ) আগে তৎসম শব্দে মূর্ধন্য-ণ হয়।
No comments
Thank you, best of luck