ads

পদ কাকে বলে? কত প্রকার ও কী কী?

পদ পদের পরিচয়:
অর্থ প্রকাশ করে এমন ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টিকে বলা হয় শব্দ। শব্দের পর শব্দ বসিয়ে বাক্য তৈরি করা হয়। তবে শুধু শব্দগুলাে বসালেই বাক্য তৈরি হয় না, শব্দের সঙ্গে প্রয়ােজনীয় বিভক্তি যােগ করলে তবেই বাক্য হবে।

যেমন-প্রতিদিন, রামিন, মাঠ, খেল, ফুটবল। 

উপরের প্রত্যেকটি এক-একটি শব্দ। এই শব্দগুলাে পরপর সাজালেই কি বাক্য হবে? সাজিয়ে দেখা যাক প্রতিদিন রামিন মাঠ খেল ফুটবল। শব্দগুলাে পরপর সাজানাে হলাে বটে, কিন্তু এটি বাক্য হয়নি । কারণ এর মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ অর্থ বা মনের ভাব প্রকাশ পায়নি। যদি এভাবে লেখা যায় রামিন প্রতিদিন মাঠ ফুটবল খেল’ তাহলেও বাক্য হয় না। কিন্তু যদি এভাবে লেখা যায়- রামিন প্রতিদিন মাঠে ফুটবল খেলে। এবার এটি একটি সার্থক বাক্য হয়েছে। সুতরাং শব্দকে বাক্যে ব্যবহার করতে হলে শব্দের সঙ্গে বিভক্তি যােগ করে শব্দকে পদে পরিণত করতে হবে। বিভক্তি হলাে বিশেষ অর্থ প্রকাশের জন্যে এক-একটি চিহ্ন। 

যেমন- উপরের বাক্যটিতে মাঠ'-এর সঙ্গে ‘এ’ যােগ করার ফলে মাঠে’ (মাঠ + এ = মাঠে) এবং খেল’-এর সঙ্গে ‘এ’ যােগ করার ফলে ‘খেলে’ (খেল + এ = খেলে) পদ গঠিত হয়েছে। ফুটবল’ শব্দটির সঙ্গে যােগ হয়েছে শূন্য বিভক্তি। কাজেই বাক্যটি সার্থক হয়েছে। মধুমিতাকে ডাকো উপরের বাক্যটিতে দুটি কথা রয়েছে- 


বিশেষ্য পদ কাকে বলে কত প্রকার কী কী প্রত্যেকটির সংজ্ঞা ও উদাহরণ দাও।


প্রশ্ন : বিশেষণ কাকে বলে? উদাহরণসহ বিশেষণের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা করো।


১. মধুমিতাকে 

২. ডাকো। মধুমিতা' কথাটির সঙ্গে ‘কে’ এবং ডাক' কথাটির সঙ্গে ‘ও’ যােগ করে মধুমিতাকে ডাকো’ বাক্যটি হয়েছে। এখানে ‘মধুমিতা’ কথাটি হলাে শব্দ এবং ‘ডাক’ কথাটি হলাে ধাতু। শুধুমাত্র শব্দ ও ধাতু দিয়ে বাক্য গঠন করা যায় না। মধুমিতা ডাক্।’ বললে কোনাে বাক্য হয় না। মধুমিতা’ শব্দের সঙ্গে ‘কে’ এবং ডাক্ ধাতুর সঙ্গে ‘ও বিভক্তি যােগ করে মধুমিতাকে’ ‘ডাকো’ পদ দুটি গঠন করা হয়েছে। শব্দের সঙ্গে বিভক্তি যােগে নামপদ ও ধাতুর সঙ্গে বিভক্তি যােগে ক্রিয়াপদ গঠিত হয়েছে। 

নামপদের গঠন।

শব্দ + বিভক্তি = নামপদ

মধুমিতা + ‘0' বা ‘অ’ বিভক্তি = মধুমিতা 

মধুমিতা + ‘কে’ বিভক্তি = মধুমিতাকে

মধুমিতা + ‘র’ বিভক্তি  = মধুমিতার

মধুমিতা + ‘রা’ বিভক্তি = মধুমিতারা 

ক্রিয়াপদের গঠন

ধাতু + বিভক্তি = ক্রিয়াপদ

 ডাক + ‘ও বিভক্তি = ডাকো 

ডাক + ‘এ’ বিভক্তি = ডাকে 

ডাক + ‘ল’ বিভক্তি = ডাকল

ডাক্ + বে বিভক্তি = ডাকবে

পদের সংজ্ঞা: বিভক্তিযুক্ত শব্দমাত্রই পদ। বা, বাক্যে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি শব্দই এক একটি পদ। সুতরাং বলা যায়, বাক্যে ব্যবহৃত বিভক্তিযুক্ত প্রত্যেকটি শব্দকে এক একটি পদ বলে। 

পদের শ্রেণিবিভাগ 

পদকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় নামপদ ও ক্রিয়াপদ। 

নামপদ চার প্রকার 

১. বিশেষ্য, 

২. বিশেষণ, 

৩. সর্বনাম ও 

৪. অব্যয়। 

সুতরাং ক্রিয়াপদসহ পদ মােট পাঁচ প্রকার। 

যেমন :

১. বিশেষ্য, 

২. বিশেষণ, 

৩. সর্বনাম, 

৪. অব্যয় ও 

৫. ক্রিয়া।

অন্যভাবে বলা যায়, 

পদ দুই প্রকার: 

১. ক্রিয়াপদ।

২. নামপদ

নামপদ ৪ প্রকার-

১. বিশেষ্য

২. বিশেষণ।

৩. সর্বনাম ।

৪. অব্যয়

 শব্দের সঙ্গে বিভক্তি যুক্ত হলে হয় নামপদ। ধাতুর সঙ্গে বিভক্তি যুক্ত হলে ক্রিয়াপদ গঠিত হয়। অব্যয়ের সঙ্গে কোনাে বিভক্তি যােগ হয় না। 

যেমন : রামিন ও তার ছােট ভাই পড়ছে। 

উপরের বাক্যটিতে পাঁচ প্রকারের পদই আছে। বাক্যে ব্যবহৃত ‘রামিন’ ও ‘ভাই’ শব্দ দুটি দিয়ে দুটি ছেলেকে বােঝাচ্ছে। নাম বােঝালে হয় বিশেষ্য পদ। তার পদটি রামিনের পরিবর্তে বসেছে। তাই এটি হলাে সর্বনাম পদ। পড়ছে’ পদটি দিয়ে কী কাজ করছে তা বােঝাছে। তাই এটি হলাে ক্রিয়াপদ৷ ‘ছােট’ পদটি দিয়ে ভাই কেমন তা বােঝাচ্ছে। তাই ছােট হচ্ছে বিশেষণ পদ। ‘ও' পদটি ‘রামিন’ ‘তার ভাই’ পদ দুটিকে যুক্ত করেছে। ও' পদটির কোনাে পরিবর্তন হয় না এবং অন্যপদকে যুক্ত করে। তাই এটি হলাে অব্যয় পদ।

বাক্য : রামিন ও তার ছােট ভাই পড়ছে। 

পদ পদের কাজ     পদের নাম। 

রামিন, ভাই ছেলের নাম বােঝাচ্ছে।             বিশেষ্য পদ

তার ‘রামিনের পরিবর্তে বসেছে     সর্বনাম পদ

পড়ছে কী কাজ করছে তা বােঝাচ্ছে             ক্রিয়াপদ

ছােট ‘ভাই’ কেমন তা বােঝাচ্ছে     বিশেষণ পদ

‘রামিন’ ও ‘তার ভাই’ পদ দুটিকে যুক্ত করেছে     অব্যয় পদ।


বাংলা দ্বিতীয় পত্র
পদ পরিচয়
পতিতপাবন মণ্ডল (পাবন), 
বাংলা বিভাগীয় প্রধান, 
সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা।




No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.