ads

ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি বলতে কী বােঝ? ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি কয় প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ আলােচনা করো।

বাংলা দ্বিতীয় পত্র :
বাংলা ভাষার ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি ।
দ্বাদশ শ্রেণি
পতিতপাবন মণ্ডল (পাবন), বাংলা বিভাগীয় প্রধান, সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ঢাকা।।



১. ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি বলতে কী বােঝ? ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি কয় প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ আলােচনা করো।

উত্তর: ব্যাকরণগত অবস্থানের ভিত্তিতে বাংলা ভাষার শব্দসমূহ যে কয় ভাগে বিভাজিত হয়েছে তাদের ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি বলে। প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণে শব্দশ্রেণিকে আট ভাগে ভাগ করা হয়েছে। 

যথা : 

১. বিশেষ্য; 

২. সর্বনাম; 

৩. বিশেষণ; 

8. কিয়া; 

৫. ক্রিয়াবিশেষণ; 

৬. অনুসর্গ; 

৭. যােজক এবং 

৮. আবেগ শব্দ। 

১. বিশেষ্য : কোনাে কিছুর নাম বিশেষক পদকে বিশেষ্য পদ বলে। অর্থাৎ বাক্যের অন্তর্গত যে  পদ দ্বারা ব্যক্তি, বস্তু, জাতি, গুণ, ভাব, কর্ম, সমষ্টি, স্থান, কাল ইত্যাদির নাম  বোঝায়, তাকে বিশেষ্য পদ বলে। 

যেমন- রানা বই পড়ে। উপরের বাক্যটিতে 'রানা' এবং 'বই' বিশেষ্য পদ।

বিশেষ্য পদ বাক্যে কর্তা, কর্ম বা কর্তার পরিপূরক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 

যেমন- শুচি (কর্তা) নাচে।

আমি মিতাকে (কর্ম) ভালােবাসি। 

২. সর্বনাম : বিশেষ্যের তথা নামের পরিবর্তে যে পদ ব্যবহৃত হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলে। সকল প্রকার নামের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় বলে এর নাম সর্বনাম। 

যেমন- আমি, তুমি, সে, তিনি ইত্যাদি। সর্বনাম পদের ব্যবহারের দ্বারা একই পদের পুনরাবৃত্তি রোধ করা হয়, ফলে ভাষা সুষ্ঠু ও সুন্দর হয়ে ওঠে। 

যেমন-মিতা খুব ভালাে মেয়ে। মিতা প্রতিদিন কলেজে যায়। মিতাকে সবাই ভালােবাসে। উপর্যুক্ত বাক্যগুলােতে ‘মিতা' নামটি বারবার ব্যবহৃত হওয়ায় ভাষা শ্রুতিকটু ও পুনরুক্তি দোষে দুষ্ট হয়েছে। ভাষার পুনরুক্তি দোষরােধে সর্বনাম পদ ব্যবহার করা হয়। 

যেমন- মিতা খুব ভালাে মেয়ে। সে প্রতিদিন কলেজে যায়। তাকে সবাই ভালােবাসে। 

৩. বিশেষণ: বিশেষণ শব্দের অর্থ গুণ নির্দেশ। যে শব্দশ্রেণি বিশেষ্য, সর্বনাম , ক্রিয়া, অব্যয় ও বিশেষণ পদের গুণ নির্দেশ করে অর্থাৎ দোষ গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করে, তাকে বিশেষণ বলে। বিশেষণ অন্য শব্দশ্রেণিকে বিশেষিত করে, অর্থাৎ অন্য শব্দের অর্থকে সম্প্রসারিত (বিস্তৃত) বা সংকুচিত (সীমিত) করে। 

যেমন- লাল জামা। দুষ্ট ছেলে। বেলে মাটি ইত্যাদি। 

৪. ক্রিয়া : যে পদে কোনাে কার্য সম্পাদন বোঝায়, অর্থাৎ যে পদে বাক্যের মধ্যে কোনাে কালের বা কোনাে রকম কাজের অবস্থা, করা, যাওয়া, খাওয়া, চলা ইত্যাদি বোঝায় তাকে ক্রিয়াপদ বলে। যেমন- অর্ণব বই পড়ে। বাক্যটিতে পড়ে ক্রিয়াপদ। বাক্যে মনের ভাব প্রকাশিত হয়। মনের ভাব প্রকাশের ক্ষেত্রে কাজ সম্পন্ন করার ব্যাপারটিই প্রধান। সাধারণত ক্রিয়াপদ ব্যতীত বাক্য হয় না। তাই বাক্যে ক্রিয়াপদই মুখ্য। ক্রিয়াপদই বাক্যের প্রাণ।

৫. ক্রিয়াবিশেষণ : যে বিশেষণ পদ বাক্যের ক্রিয়াকে বিশেষিত করে তাকে ক্রিয়াবিশেষণ বলে। মূলত, ক্রিয়াবিশেষণ ক্রিয়ার বিশেষ অবস্থা অর্থাৎ ক্রিয়া কীরূপে সম্পন্ন হয়েছে তা জানিয়ে দেয়। এটি ক্রিয়ার গুণ, প্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য ও অর্থ প্রকাশক শব্দ হিসেবে কাজ করে এবং ক্রিয়ার সময়, স্থান, প্রকার, উৎস, তীব্রতা, উপকরণ ইত্যাদির অর্থগত ধারণা দেয়। ক্রিয়াবিশেষণ সাধারণত কর্ম ও ক্রিয়ার পূর্বে বসে। 

যেমন- ট্রেন ধীরে চলছে। 

৬. অনুসর্গ : বাংলা ভাষায় এমন কিছু সহায়ক শব্দ আছে যা স্বাধীনরূপে বা শব্দ বিভক্তির ন্যায় বাক্যে অন্য কোনাে পদের পরে বসে সম্পর্কিত করে অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে। এগুলােকে অনুসর্গ বা কর্মপ্রবচনীয় বলে। অনুসর্গ পরে ব্যবহৃত হয়। পদের পরে ব্যবহৃত হয় বলে এদেরকে পরসর্গ বা কর্মপ্রবচনীয়ও বলে। অনুসর্গে কখনাে কখনাে বিভক্তির ন্যায় ব্যবহৃত হলেও এদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। বিভক্তি পূর্ণ শব্দ নয় অর্থাৎ শব্দ নিরপেক্ষ এদের কোনাে অর্থ নেই কিন্তু অনুসর্গ পূর্ণ শব্দ, তাই এদের স্বাধীন ও শব্দ নিরপেক্ষ অর্থ রয়েছে। 

যেমন- রান্নার জন্য ঘর। এখানে রান্নার ‘র’ হচ্ছে বিভক্তি এবং ‘জন্য’ হচ্ছে অনুসর্গ। অনুসর্গগুলাে অব্যয়ের মতাে। এরা বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হলেও আকারের কোনাে পার্থক্য ঘটে না। 

যেমন— জল বিনা স্নান সম্ভব নয়। বিনা কারণে সে জেল খেটেছে। বিনি সুতার মালা। আমাকে বিনা তার চলে না। বাংলা ভাষায় প্রচুর অনুসর্গ রয়েছে- প্রতি, বিনা, বিনে, বিহনে, ব্যতীত, বলে, বাবদ, বশত, সহ, সহকারে, সাথে, সঙ্গে, সহিত, মনে, অপেক্ষা, অধিক, অবধি, হেতু, হতে হইতে., পরে, পর, পর্যন্ত, পক্ষে , পাশে, পাছে, পানে, মাঝেমধ্যে, মতাে, নামে, নিচে, তলে, ভিতরে, ভিতর, নিমিত্ত, জন্যে, ছাড়া, ভিন্ন, উপর, চেয়ে , থেকে, কর্তৃক, দ্বারা, দিয়া/দিয়ে , 

যেমন-যেন, যথা অভিমুখে, কারণে, দরুন, দিকে, নাগাদ, বনাম, বদলে, বরাবর, বাইরে, সম্মুখে ইত্যাদি। এদের মধ্যে দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক, জন্য, হইতে, থেকে, চেয়ে, অপেক্ষা, মধ্যে প্রভৃতি অনুসর্গ বিভক্তিরূপে ব্যবহৃত হয়। 

৭.যােজক :যে পদ শব্দশ্রেণি. একটি বাক্যাংশের/বাক্যের সাথে অন্য একটি বাক্যাংশের/বাক্যের অথবা বাক্যের অন্তর্গত একটি পদের সংযােজন, বিয়ােজন পৃথককরণ. বা সংকোচন ঘটায়, তাকে যােজক বলে। যােজকের মাধ্যমে একাধিক শব্দ, পদবন্ধ, বাক্যকল্প বা বাক্য সংযােজিত ও সম্পর্কিত হয়। 

যেমন- কিন্তু, ও, আর, এবং, বা, অতএব, নইলে, তবু, অথচ, কারণ, যেহেতু, নতুবা, তাই, যদি-তবে, যত-তত ইত্যাদি যােজক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 

যেমন- সে স্কুলে গিয়েছে এবং ইংরেজি পড়েছে। উচ্চপদ ও সামাজিক মর্যাদা সবাই চায়।

৮. আবেগ শব্দ : যে শব্দ বাক্যের অন্যান্য শব্দের সাথে সম্পর্কিত না থেকে স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত হয়ে মনের নানা ভাব ও আবেগকে প্রকাশ করে, তাকে আবেগ শব্দ বলে। সাধারণত আঃ, উঃ , উঁহু, অ্যাাঁ, আরে, আহা, ওরে, কী বিপদ, ছি ছি, কী জ্বালা, ই, বাঃ বেশ, মা গাে মা, শাবাশ, যাক গে যাক, দুর পাগল ইত্যাদি আবেগ শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেমন— ছি ছি। তুমি এত খারাপ। বাঃ! খুব সুন্দর কথা বলেছ।


20 comments:

  1. ধন্যবাদ এত সুন্দর করে উপস্থাপন করার জন্য।

    ReplyDelete
  2. ধন্যবাদ

    ReplyDelete
  3. ধন্যবাদ

    ReplyDelete
  4. ধন্যবাদ

    ReplyDelete
  5. সুন্দর

    ReplyDelete
  6. wow wow wow wow wow wow wow wow wowwow wow
    i like this ooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooo thanks eeeeeeeeeeeeeeeeeeeeeee

    ReplyDelete
  7. Mashallah onk sundor Hoica

    ReplyDelete
  8. অনেক সুন্দর হইছে

    ReplyDelete
  9. ধন্যবাদ

    ReplyDelete
  10. ধন্যবাদ অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করার জন্য

    ReplyDelete

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.