ads

সৃজনশীল প্রশ্ন-উত্তর, তৈলচিত্রের ভূত, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়




১. অজপাড়া গাঁয়ের ছেলে সুবল জণ্ডিসে আক্রান্ত হয়ে গ্রামের প্রচলিত টোটকা চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসারে বিভিন্ন জায়গা থেকে ঝাড়ফুক ও অনুপান নেয়। তার ধারণা জণ্ডিসের কোনাে আধুনিক চিকিৎসা নেই। কিন্তু ইতােমধ্যে জণ্ডিসের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সুবল আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া পাশের বাড়ির ছেলে অনিমেষ তাকে শহরে নেওয়ার অনুরােধ জানায়। ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সুচিকিৎসায় সবল একসময় সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে। 
ক. তৈলচিত্র কী? ১ 
খ. তুমি একটি আস্ত গর্দভ নগেন।'- এ উক্তির কারণ ব্যাখ্যা করাে। ২ 
 গ. উদ্দীপকের সুবল ও তৈলচিত্রের ভূত' গল্পের নগেনের সাদৃশ্য বর্ণনা করাে। ৩ 
ঘ. উদ্দীপকের অনিমেষ যেন তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের পরাশর ডাক্তারের প্রতিচ্ছবি।”- মন্তব্যটির সত্যতা যাচাই করাে। ৪

২ নং প্রশ্ন: 

রফিক সাহেব শীতের ছুটিতে ভাগ্নি সাহানাকে নিয়ে গ্রামে বেড়াতে যান। রাতের আকাশ দেখার জন্য তারা খোলা মাঠে যান। অদূরেই দেখতে পান মাঠের মধ্যে হঠাৎ এক প্রকার আলো জ্বলে ওঠে তা সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। ওটা কীসের আলো তা জানতে চাইলে সাহানার মামা বলেন, ভূতের! সাহানা ভয় পেয়ে তার মামাকে জড়িয়ে ধরে। মামা তখন তাকে বুঝিয়ে বলেন যে, খোলা মাঠের মাটিতে এক প্রকার গ্যাস থাকে- যা বাতাসের সংস্পর্শে এলে জ্বলে ওঠে। সাহানা বিষয়টা বুঝতে পেরে স্বাভাবিক হয়।

ক. ‘তৈলচিত্রের ভূত’ কোন জাতীয় রচনা? ১

খ. পরাশর ডাক্তার নগেনকে ভর্ৎসনা করলেন কেন? ২

গ. উদ্দীপকের সাহানা আর ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের নগেনের বিশেষ মিল কোথায়?- ব্যাখ্যা করো। ৩

ঘ. “রফিক সাহেব আর ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের পরাশর ডাক্তার উভয়কে আধুনিক মানসিকতার অধিকারী বলা যায়”- উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ করো।  ৪

অনুশীলনীর জন্য জ্ঞানূলক উত্তর:
প্রথমে জ্ঞানমূলক উত্তর দেখে পূর্ণ উত্তর লিখবে এরপরে নিচে দেওয়া পূর্ণ উত্তরের সাথে নিজের উত্তর মিলিয়ে নেবে তোমার উত্তর ঠিক আছে কিনা। এর পর নিজেই নিজের খাতায় নম্বর দাও দশে দশ পেলে বুঝবে তোমার লেখা ঠিক আছে।

উত্তর: 

ক. ‘তৈলচিত্রের ভূত’ কোন জাতীয় রচনা? ১

উত্তর: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘তৈলচিত্রের ভূত’ কিশোর উপযোগী একটি ছোটো গল্প। 

খ. পরাশর ডাক্তার নগেনকে ভর্ৎসনা করলেন কেন? ২

উত্তর: নগেনের নির্বুদ্ধিতা ও কুসংস্কারাচ্ছন্নতার কারণে পরাশর ডাক্তার নগেনকে ভর্ৎসনা করলেন। 

গ. উদ্দীপকের সাহানা আর ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের নগেনের বিশেষ মিল কোথায়?- ব্যাখ্যা করো। ৩

উত্তর: ভূতের বিশ্বাস বা অশরীরী শক্তির উপর বিশ্বাস ও তা থেকে উত্তরণের দিক থেকে শাহানার সাথে তৈলচিত্রের ভূত গল্পের নগেনের মিল রয়েছে। 

ঘ. “রফিক সাহেব আর ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের পরাশর ডাক্তার উভয়কে আধুনিক মানসিকতার অধিকারী বলা যায়”- উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ করো।  ৪ 

উত্তর:“রফিক সাহেব আর ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের পরাশর ডাক্তার উভয়কে আধুনিক মানসিকতার অধিকারী বলা যায়”- মন্তব্যটির যাথার্থ। কারণ উভয়ই বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তা চেতনার অধিকারী।


সম্পূর্ণ উত্তর:

ক. ‘তৈলচিত্রের ভূত’ কোন জাতীয় রচনা? ১

উত্তর: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘তৈলচিত্রের ভূত’ কিশোর উপযোগী একটি ছোটো গল্প। 

খ. পরাশর ডাক্তার নগেনকে ভর্ৎসনা করলেন কেন? ২

উত্তর: নগেনের নির্বুদ্ধিতা ও কুসংস্কারাচ্ছন্নতার কারণে পরাশর ডাক্তার নগেনকে ভর্ৎসনা করলেন। 

নগেন তার মামার তৈলচিত্রে হাত দিয়ে বৈদ্যুতিক শক খাওয়ার পর কোনো রকম যুক্তি দিয়ে বিচার না করে সে এটাকে ভূতের কাজ মনে করে। সে পরাশর ডাক্তারের কাছে এর সমাধানের জন্য যায়। কিন্তু তৈলচিত্রটি যে রুপার ফ্রেমে বাঁধা এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ আছে তা সে বলে না। পরাশর ডাক্তার রাতের অন্ধকারে তৈলচিত্রটি স্পর্শ করলে তিনিও বৈদ্যুতিক শক খান। তখন তিনি সামান্য বৈদ্যুতিক শক না বোঝার জন্য এবং রুপার ফ্রেম ও বৈদ্যুতিক সংযোগের কথা না বলার জন্য নগেনকে ভর্ৎসনা করেন।

গ. উদ্দীপকের সাহানা আর ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের নগেনের বিশেষ মিল কোথায়?- ব্যাখ্যা করো। ৩

উত্তর: ভূতের বিশ্বাস বা অশরীরী শক্তির উপর বিশ্বাস ও তা থেকে উত্তরণের দিক থেকে শাহানার সাথে তৈলচিত্রের ভূত গল্পের নগেনের মিল রয়েছে। 

‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে নগেন তার মামার ছবিতে হাত দিয়ে বৈদ্যুতিক শক খেয়েছিল। বিষয়টি সম্পর্কে তার মনে ভ্রান্ত ধারণা ছিল। তাই সে ধরেই নিয়েছিল মামার মৃত্যুর পর তার প্রেতাত্মা তাকে ভয় দেখাচ্ছে। অবশেষে পরাশর ডাক্তারের সহায়তায় তার এ ভ্রান্তি দূর হয়।

উদ্দীপকে রাতে মাঠে ঘুরতে গিয়ে মামার কথায় বিভ্রান্ত হয়ে সাহানা ভয় পেয়েছে। ভূতের কথাকে সত্যি ভেবে নিয়ে সে ভয়ে মামাকে জড়িয়ে ধরে। তবে শেষ পর্যন্ত তার মামার কথাতেই সে ভুল বুঝতে পেরে স্বাভাবিক হয়েছে। যেমনটি নগেনের ক্ষেত্রেও ঘটেছে। সাহানার মামা এবং গল্পের পরাশর ডাক্তার বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে সমস্যার কারণ তুলে ধরেছেন, ফলে সাহানা ও নগেন সঠিক ধারণা পেয়েছে। এদিক থেকে উদ্দীপকের সাহানা ও ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে নগেনের মধ্যে বিশেষ মিল লক্ষ করা যায়। তাই বলা যায়, ভূতের বিশ্বাস বা অশরীরী শক্তির উপর বিশ্বাস ও তা থেকে উত্তরণের দিক থেকে শাহানার সাথে তৈলচিত্রের ভূত গল্পের নগেনের মিল রয়েছে। 

ঘ. “রফিক সাহেব আর ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের পরাশর ডাক্তার উভয়কে আধুনিক মানসিকতার অধিকারী বলা যায়”- উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ করো।  ৪ 

উত্তর:“রফিক সাহেব আর ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের পরাশর ডাক্তার উভয়কে আধুনিক মানসিকতার অধিকারী বলা যায়”- মন্তব্যটি যাথার্থ। কারণ উভয়ই বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তা চেতনার অধিকারী। 

‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে নগেন ভূতের ভয় পেয়ে পরাশর ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়। তিনি তাকে ভয়ের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে অবহিত করেন। ফলে নগেন শঙ্কামুক্ত হয়। 

উদ্দীপকের সাহানা ভূতের ভয় পেলে তার মামা তাকে মাঠে আগুন জ্বলে উঠার প্রকৃত কারণ ব্যাখ্যা করেন। এতে সাহানা আশ্বস্ত হয় এবং তার ভূতের ভয় কেটে যায়। উদ্দীপকের রফিক সাহেব ও ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের পরাশর ডাক্তার উভয়ই যুক্তিবাদি মানুষ। পরাশর ডাক্তার নগেনকে তার মামার ছবিতে কেন বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। রফিক সাহেবও সাহানার ক্ষেত্রে একই কাজ করেন। আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে ভূত-প্রেতের মতো কাল্পনিক কোনো বিষয়ে বিশ্বাস করা রফিক সাহেব কিংবা পরাশর ডাক্তারের চরিত্রে নেই। তারা বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে এসব ঘটনা বিচার করেছেন। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দুজনকে আধুনিক মানসিকতার অধিকারী বলা যায়।

উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে তাই বলা যায়, “রফিক সাহেব আর ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের পরাশর ডাক্তার উভয়কে আধুনিক মানসিকতার অধিকারী বলা যায়”- মন্তব্যটি যাথার্থ।


পতিতপাবন মণ্ডল (পাবন) ,
বাংলা বিভাগীয় প্রধান 
সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ঢাকা।।








No comments

Thank you, best of luck

Theme images by sbayram. Powered by Blogger.